মেয়ে হয়ে জন্মানোর খেসারত, চার বোনকে একসঙ্গে ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলল বাবা
চলন্ত ট্রেন থেকে চার বোনকেই একসঙ্গে ছুঁড়ে ফেলে দিল তাদের বাবা। তাদের মধ্যে তিনজন কোনওমতে প্রাণে বাঁচলেও একজনকে বাঁচানো যায়নি, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের কাছে
মেয়ে হয়ে জন্মানোর খেসারত দিতে হল চার বোনকে। চলন্ত ট্রেন থেকে চার বোনকেই একসঙ্গে ছুঁড়ে ফেলে দিল তাদের বাবা। তাদের মধ্যে তিনজন কোনওমতে প্রাণে বাঁচলেও একজনকে বাঁচানো যায়নি। ঘটনাটি ঘটেছে ২৩শে অক্টোবর গভীর রাতে। আপাতত তাদের মায়ের জবানবন্দির ভিত্তিতে ইদ্দু মিয়াঁ নামে ওই ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ। ওই রাতে কামাক্ষ্যা- কাটরা এক্সপ্রেসে করে জম্মু যাওয়ার পথে লখনউ থেকে ৯০ কিমি দুরে সীতাপুরের কাছে চলন্ত ট্রেন থেকে ৪ মেয়েকে ছুঁড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ মা আফরিনা খাতুন।
বিহারের মোতিহারির বাসিন্দা ইদ্দু মিয়াঁ জম্মুতে দিনমজুরের কাজ করে। ছুটি কাটিয়ে সে স্ত্রী ও পাঁচ মেয়েকে নিয়ে কামাক্ষ্যা- কাটরা এক্সপ্রেসে করে জম্মু ফিরছিল। ২৩ অক্টোবর গভীর রাতে সীতাপুরের ওপর দিয়ে ট্রেনটি যাওয়ার সময়ে সে চার মেয়ে আলগুন, রাবিয়া, মুনিয়া ও শামিনাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলে অভিযোগ। সময়ে ২ বছরের ছোট মেয়েকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন ইদ্দুর স্ত্রী আফরিন। মেয়েরা কোথায় জিজ্ঞেস করায় ইদ্দু সাফ জানায় তাদের ফেলে দিয়েছে। চেঁচেমিচি করলে তাদের দুজনকেও ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হবে বলে ইদ্দু হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এরপর জম্মু পৌঁছে তাঁকেও স্টেশনে ছেড়ে চলে যায় ইদ্দু। কোনওমতে বিহারের পশ্চিম চম্পারনে নিজের বাপের বাড়িতে ছোট মেয়েকে নিয়ে ফিরে আসেন আফরিন।
এদিকে ট্রেন থেকে পড়ে তিন আলগুন সহ তিন বোন কোনওমতে প্রাণে বাঁচলেও বাঁচানো যায়নি ৭ বছরের মুনিয়াকে। হাসপাতালে আহত অবস্থায় শুয়ে এখনও কেঁপে উঠছে ৯ বছরের আলগুন। কিন্তু কেন এভাবে চার মেয়েকে ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিল ইদ্দু। আফরিন জানিয়েছেন, ৫টি মেয়ে থাকায় অনেক দিন ধরেই অশান্তি চলছিল দুজনের মধ্যে। এমনকী ইদ্দু মেয়েদের এতটাই অপছন্দ করত যে কোনওদিনও বাবার দায়িত্ব পালন করেনি বলেও অভিযোগ করেছেন আফরিন।
এদিকে এই ঘটনার পর তদন্তে নেমে প্রথমে ইদ্দুর এক ভাই ও তার বন্ধুকে আটক করে পরে অবশ্য় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। জোর তল্লাশি চালানো হচ্ছে ইদ্দুর খোঁজে। ইতিমধ্যেই তার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ধরে জম্মুতেও একটি টিম পাঠিয়েছে লখিমপুর খেরি জিআরপি স্টেশন অফিসার আশিস ভার্মা। এমনকী জম্মুতে যেখানে সে থাকে সেই বাড়িটিও চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।