অশ্লীল মন্তব্য ছাড়া বাবা–মেয়ে রাস্তায় একসঙ্গে হাঁটতে পারবে না? ইভটিজ নিয়ে ক্ষুব্ধ কেরল হাইকোর্ট
অশ্লীল মন্তব্য ছাড়া বাবা–মেয়ে রাস্তায় একসঙ্গে হাঁটতে পারবে না? ইভটিজ নিয়ে ক্ষুব্ধ কেরল হাইকোর্ট
এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে মেয়ের ব্যাপারে কোনও অশ্লীল মন্তব্য না শোনা পর্যন্ত বাবা ও তাঁর মেয়ে একসঙ্গে রাস্তায় হাঁটতে পারবে না। এমনটাই মন্তব্য করতে বাধ্য হলেন কেরল হাইকোর্ট। হাইকোর্ট এক ব্যক্তি অন্তর্বতীকালীন জামিন খারিজ করে দিল, যে বাবার সামনেই মেয়েকে খারাপ মন্তব্য করে এবং বাবা তার প্রতিবাদ করলে তাঁকেও ওই ব্যক্তি হেনস্থা করে। প্রসঙ্গত, রাস্তায়, বাসে–ট্রেনে যে কোনও গণ পরিবহনে মেয়েরা এখন আর সুরক্ষিত নয়। পথচলতি রোমিওদের কাছ থেকে তাদের বাজে মন্তব্য শুনতেই হয়।
হাইকোর্ট লক্ষ্য করেছে যে অভিযুক্ত ব্যক্তি মেয়েটির বাবাকে আঘাত করে, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সাব–ইনস্পেক্টর। তাঁর ১৪ বছরের কিশোরী কন্যাকে আপত্তিকর মন্তব্য করায় তিনি প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত ব্যক্তি হেলমেট দিয়ে তাঁকে আঘাত করে, যার জেরে তিনি চোট পান। বুধবার রীতিমতো ভর্ৎসনার সুরে কেরল হাইকোর্ট বলেছে, 'কোনও অশালীন মন্তব্য কেউ না করলে এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এক ব্যক্তি ও তাঁর মেয়ে রাস্তা দিয়ে একসঙ্গে চলতে পারবে না। এ ধরনের জিনিস বন্ধ হওয়া উচিত।’
অন্যদিকে, অভিযুক্ত দাবি করেছে যে মেয়েটির বাবা এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা আরও এক ব্যক্তি তার ওপর হামলা চালায়। এটা শোনার পর আদালত মন্তব্য করে যে কোনও অভিভাবক তাঁদের সন্তানের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য শুনলে এ ধরনের প্রতিক্রিয়াই জানাবে। অভিযুক্ত আদালতকে আরও জানায় যে তার বিরুদ্ধে একমাত্র জামিন অযোগ্য অপরাধ ছিল ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩০৮ (অপরাধমূলক হত্যাকাণ্ডের প্রচেষ্টা) যা তাৎক্ষণিক মামলায় বলা হয়নি। সরকারি আইনজীবী এই অন্তর্বতীকালীন জামিনের বিরোধিতা করেন এবং জানান যে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার তাঁর ১৪ বছরের কন্যাকে নিয়ে রাস্তায় হাঁটছিলেন এবং সেই সময় আবেদনকারী ও অন্য এক অভিযুক্ত মেয়েটিকে অশালীন মন্তব্য করে বেরিয়ে যায়। মেয়েটির বাবা যখন প্রতিবাদ করে, তখন অভিযুক্তরা হেলমেট দিয়ে তাঁর বুকে আঘাত করে বসে।
উভয় পক্ষের শুনানি শোনার পর আদালত বলেন, 'মামলার বাস্তবতা ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং অভিযোগের প্রকৃতি বিবেচনা করে আমি মনে করি যে আবেদনকারী আগাম জামিন পাওয়ার অধিকারী নন।’ আদালত বলেছে যে আবেদনকারী–অভিযুক্ত যদি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে আত্মসমর্পণ করে, তাঁকে একই দিনে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হবে।