মুক্তি পেয়েই ৩৭০ ধারা নিয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি ফারুক আবদুল্লার! বজায় থাকবে কাশ্মীরের শান্তি?
দীর্ঘ সাত মাস বন্দি দশা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত শুক্রবার মুক্তি পান শ্রীনগরের সাংসদ তথা জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আর এরই মধ্যে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধরা ও ৩৫এ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়ে সরব হলেন আবদুল্লা। শুক্রবার এক সরাকির বিজ্ঞপ্তিতে ফারুকের মুক্তির কথাটি সরকারের তরফে জানানো হয়।
গোয়েন্দা কর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ ফারুকের
এর আগে ফেব্রুয়ারির শেষে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্তা এএস দুলাত শ্রীনগরে উড়ে গিয়েছিলেন ফারুক আবদুল্লার সঙ্গে দেখা করতে। জানা যায়, প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা এ এস দুলাত মূলত ফারুক আবদুল্লাহর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কাশ্মীরী নেতার মেজাজ জানতে। ৩৭০ ধারা কাশ্মীর থেকে তুলে দেওয়া নিয়ে ফারুক আবদুল্লাহ এখন কী ভাবছেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতেই উপত্যকা উড়ে গিয়েছেন প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা। এরপরই মনে হতে থাকে যে শীঘ্রই ছাড়া হতে পারে ফারুককে।
ফারুকের মুক্তিতে কী হবে কাশ্মীরের পরিস্থিতি?
জানা গিয়েছে, কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করার পর যাতে উপত্যকায় রাজনৈতিক আঙিনা যাতে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায়, তার চেষ্টায় রয়েছে দিল্লি। আর এই লক্ষ্যে কাশ্মীরের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল পিডিপি ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতাদের মুক্তি দিতে হবে সরকারকে। তবে আশঙ্কা, আপাতত শান্ত উপত্যকায় ফের অশান্তি ছড়াবে না তো তাতে? এদিকে ফারুকের সংসদে গিয়ে ৩৭০ ধারা প্রসঙ্গ তলার বিষয়টিতে ফের ঘোলাটে হয়েছে পরিস্থিতি।
গত ৭ মাস যাবত কাশ্মীরের কী অবস্থা?
গত ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেয় কেন্দ্র। পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের থেকে লাদাখকে আলাদা করে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়। তারপরই একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় জম্মু-কাশ্মীরে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মীর জুড়ে মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয় বহুদিন।
গ্রেফতার হন কাশ্মীরের নেতারা
এই অবস্থাতেই গ্রেফতার করা হয় সেখানকার বিচ্ছিনতাবাদী নেতা ও রাজনৈতিক নেতাদের। আটক করে রাখা হয় প্রাক্তন তিন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহ, তাঁর ছেলে ওমর আব্দুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিকে আটক করে গৃহবন্দি করা হয়। এদের সবাইকে জননিরাপত্তা আইনের অধীনে বন্দি রাখা হয়।
কী এই জননিরাপত্তা আইন?
প্রসঙ্গত,১৯৭৮ সালে জননিরাপত্তা আইন সংক্রান্ত এই পিএসএ আইটনি পাশ করিয়েছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা ফারুখ আব্দুল্লাহর বাবা শেখ আবদুল্লাহ। প্রায় চার দশক আগের এই আইন অনুসারে, কোনও বিচার ছাড়াই এই আইনে যে কাউকে দুবছর পর্যন্ত আটক করে রাখা যায়। কয়েক দশক ধরে জঙ্গি, বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইট-পাটকেল ছোড়ার অপরাধে যুক্তদের বিরুদ্ধে এই আইন ব্যবহার করা হচ্ছিল।
এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা!
এইভাবে রাজনৈতিকদের আটক করে রাখার বিরুদ্ধে বহুবার সরব হয়েছে বিরোধীরা। সরব হওয়া বিরোধী নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ফারুককে ছাড়া হলেও ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিকে কবে ছাড়া হবে, তা এখনও জানা যায়নি। আর সেই নিয়েই ফের সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।