বৈঠকে নেই ভরসা, 'অবুঝ' সরকারকে বোঝাতে এবার নয়া পদক্ষেপ প্রতিবাদী অন্নদাতা কৃষকদের
আগে বুরারিতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল কৃষিক সংগঠনগুলি। এরপর মঙ্গলবার কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রের কমিটি গঠনের প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিল তারা। কয়েকটি সংগঠনের তরফে কৃষকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এরপর সিদ্ধান্ত হয় যে ৩ নভেম্বর ফের বৈঠকে বসবে দুই পক্ষ। তবে তার আগেই এবার কেন্দ্রকে চিঠি লিখতে চলেছে কৃষক সংগঠনগুলি। এছাড়া পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে চলা কৃষকদের বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়ে 'রাস্তা রোকো'-র ডাক দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে ভরসা নেই কৃষকদের
মঙ্গলবারের সেই বৈঠকে বরফ না গলায় পরবর্তী বৈঠকের দিন নির্ধারণ হয় ৩ ডিসেম্বর। সেই বৈঠকের আগেই কৃষকরা এবার সিদ্ধান্ত নিলেন যে তাঁরা কেন্দ্রকে চিঠি লিখে নিজেদের বক্তব্য জানাবেন। কৃষি আইন নিয়ে তাঁদের সমস্যাটা ঠিক কোথায়, তাই লেখা হবে এই চিঠিতে। বৈঠকে যে তাঁদের খুব একটা ভরসা নেই, এই চিঠি লেখার বিষয়টি সেটাই বকলমে প্রমাণ করে দিচ্ছে।
দেশজুড়ে 'রাস্তা রোকো'
এদিকে ৩ ডিসেম্বর দেশজুড়ে 'রাস্তা রোকো'-র ডাক দিল অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা। কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ বিল ২০২০ প্রত্যাহারের দাবিতে এই অবরোধের দিয়েছে তারা। ৩ ডিসেম্বর প্রতিদিন দেশের প্রতিটি জেলা ও তেহসিলে এক ও দু'ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করা হবে বলে তাদের তরফে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি এক সপ্তাহ ধরে একাধিক কর্মসূচি পালন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো থেকে শুরু করে ধরনাতেও বসবে তারা। ব়্যালি, জাঠা ও সভাও করা হবে।
কৃষি আইন প্রত্য়াহারের দাবি খারিজ করে কেন্দ্র
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত কৃষক-কেন্দ্র বৈঠকে কৃষি আইন প্রত্য়াহারের দাবি কেন্দ্রের তরফে খারিজ করে দেওয়া হয়৷ তার বদলে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয় আলোচনায় উপস্থিত তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর তরফে। তবে সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন কৃষক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা৷ উলটে তাঁরা জানিয়ে দেন, তাঁদের দাবি মানা না হলে বিক্ষোভ দেখিয়ে যাবেন। ৩ তারিখ আরও একটি বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে।
চাপে পড়ে কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশের অনুমতি দেয় কেন্দ্র
কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইন নিয়ে কয়েকদিন আগেই 'দিল্লি চলো'-র ডাক দেয় কৃষক সংগঠনগুলি। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্ত। প্রথমে বাধা দিলেও পরে চাপে পড়ে কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশের অনুমতি দেয় সরকার। কিন্তু, জানিয়ে দেওয়া হয় তাদের নির্ধারিত স্থানে বিক্ষোভ দেখাতে হবে। কিন্তু তা ফিরিয়ে দেয় কৃষক সংগঠনগুলি।
কমিটি তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়
এরপর মঙ্গলবার কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কেন্দ্রীয় সরকার৷ সেখানে অংশ নেন কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর৷ সঙ্গে ছিলেন পীযূষ গোয়েল এবং সোম প্রকাশ৷ যেখানে সরকারের তরফে একটি কমিটি তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর৷ যে কমিটিতে সরকার ও কৃষক সংগঠন দু'পক্ষেরই প্রতিনিধিরা থাকবেন৷ থাকবেন কৃষি বিশেষজ্ঞরাও। সেখানে কৃষি আইন নিয়ে আলোচনা হবে।
অনড় প্রতিবাদী কৃষকরা
তবে কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা সেই প্রস্তাবে রাজি হননি৷ আন্দোলনকারী কৃষকদের তরফে দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রের আনা নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে৷ তবে কেন্দ্রীয় সরকার সেই পথে হাঁটবে না বলে স্পষ্ট জানানো হয়। তবে কৃষকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়৷ এই পরিস্থিতিতে কোনও সমাধানসূত্র বের না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি৷ সেই মতো দিল্লিতে প্রবেশের সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷