৩০ শতাংশ রবিশস্য মাঠে রেখেই খরিপ চাষের প্রস্তুতি শুরু, লকডাউনে মাথায় হাত চাষিদের
৩০ শতাংশ রবিশস্য মাঠে রেখেই খরিপ চাযের প্রস্তুতি শুরু, লকডাউনে মাথায় হাত চাষিদের
করোনভাইরাস লকডাউনের জেরে কৃষকরা এক বিরাট ধাক্কা খেয়েছে দেশে। শাক-সবজি চাষিরা দেশে চাহিদা এবং বিপণন ব্যাহত হওয়ার কারণে বিপদে পড়েছেন। তাঁদের প্রায় ৩০ শতাংশ ফসল নষ্ট করে খরিফ ফসল বপনের জন্য জমি চাষ শুরু করেছেন। খরিফ শাকসবজির চাষ এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে।
লকডাউনের কারণে কৃষিকাজেও প্রতিকূল পরিস্থিতি
২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে কৃষিকাজেও প্রতিকূল পরিস্থিতি সামনে আসে। করোনা ভাইরাসের মহামারী রুখতে লকডাউন আরও ১৯ দিন বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং ছোট খাটো অনুষ্ঠানও সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাতেই বিপত্তি চরমে পৌঁছয়।
মজুরির অভাবে এবং পরিবহণ প্রতিকূলতায় মান্ডি বন্ধ
লকডাউনের এহেন পরিস্থিতিতে কৃষকরা রবি ফসল ও সবজি সংগ্রহও বন্ধ করে দেন। আন্তঃরাজ্য ও আন্তঃরাষ্ট্র উভয় ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় মজুরির অভাবে এবং পরিবহণ প্রতিকূলতায় মান্ডি বন্ধ। দৈনিক মজুরের অভাবে উদ্যানচর্চায় বা কৃষিক্ষেত্র পরিচর্যায় কৃষকরা বিশাল সমস্যার পড়েছেন।
রবি ফসলের প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতেই নষ্ট
এর ফলেই পরিপক্ক রবি ফসলের প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পরিবহনে বিধিনিষেধ এবং শ্রমিকের অনুপস্থিতিতে কৃষকরা নিজেরাই পরিপক্ক ফসল সংগ্রহ করতে শুরু করে। তবে চাহিদার অভাব এবং পরিবহণে সমস্যা তাদের উপার্জনকে প্রভাবিত করেছিল। এখন তারা খরিফ বপনের জন্য মাঠের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
শ্রীরাম গাদভে জানান কৃষি ব্যবস্থায় সংকটের কথা
ভেজিটেবল গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি শ্রীরাম গাদভে কৃষি ব্যবস্থায় এই সংকটের কথা জানিয়েছেন। কৃষকরা তাদের রবি ফসলের জমি পরিষ্কার করতে এবং খরিফ রোপণের জন্য প্রস্তুতি নিতে তাড়াহুড়ো শুরু করেছে। এই বছর সাধারণ বর্ষার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তারপরই এই উৎসাহ দেখা দিয়েচে কৃষক সমাজে। কিন্তু বাধা একটাই- লকডাউন।
খরিপ বপনের উপযোগী সময়
সাধারণত, সারা দেশে মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সবজি বীজের খরিফ বপন শুরু হয়। কৃষকরা এপ্রিলের দ্বিতীয় পাক্ষিকের মধ্যে খরিফ বপনের উপযোগী করার জন্য তাদের জমি প্রস্তুত করা শুরু করে। প্রায় ৩০ শতাংশ সবজি ফসল জমিতে পড়ে থাকার পরও এখনই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে কৃষকরা।
কৃষকদের উদ্দেশ্যে গাদবের বার্তা
গাদভের মতে, মহারাষ্ট্র সরকার বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য সুবিধার মতো ভর্তুকি কৃষকদের বীজ এবং সার কিনতে সক্ষম করেছিল এবং তাদের আর্থিক সহায়তাও দিয়েছিল। তবে কৃষকদের উন্নতির জন্য আরও অনেক কিছু করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।
গয়না বন্ধক রেখে প্রস্ততি শুরু
এই লকডাউনের সময় চিকু, ডালিম এবং আঙুর ফলের চাষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। নাসিকের বৃহৎ অঞ্চলগুলিতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই অবস্থায় কৃষকরা খরিফ উৎপাদনের জন্য মহাজনদের কাছে গহনা বন্ধক রাখতে এবং উচ্চ সুদের হারে টাকা ধার নেওয়া শুরু করেছেন।
রবি ও খরিপ মরশুম
উল্লেখ্য, শীতকালীন সময়টাকে রবি মরশুম বলা হয়। শীত থেকে বসন্ত এই সময়ে যে সমস্ত শস্যের চায হয়, সেগুলিকে রবিশস্য আখ্যা দেওয়া হয়। ১৪ এপ্রিলের পর শুরু হয় খরিপ মরশুম। রবিশস্য ঘরে তোলার পর খরিপ মরশুমে আউশ ও আমন দানের চাষ হয় মূলত। আউশ ও আমন ধানের মরশুমকেই খরিপ বলা হয়।
প্রতীকী ছবি