কৃষদের পরবর্তী গন্তব্য সংসদ ভবন! লালকেল্লা কাণ্ডের পর দুর্গে পরিণত রাজধানী দিল্লি
সাধারণতন্ত্র দিবসে কৃষকদের বিরাট ট্র্যাক্টর মিছিল ঘিরে আগাম সতর্ক দিল্লি পুলিশ। এর আগে কৃষকদের 'কিষান গণতন্ত্র প্যারেড' নিয়ে পুলিশ এবং নেতাদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে রুট নির্ধারণ হলেও তা মানা হয়নি। এর জেরে দিল্লি গতকাল দেখে কৃষক আন্দোলনকারীদের তাণ্ডব। এদিকে, নয়া তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের দিন বিভিন্ন অবস্থান থেকে হেঁটে সংসদ অভিযান করার ডাক দিয়েছেন কৃষকরা।

পুলিশ আরও তৎপর হয়েছে অমিত শাহের নির্দেশে
সিঙ্ঘু সীমানায় যেখানে কৃষকদের আন্দোলন চলছে, সেখান থেকে ক্রান্তিকারী কিষান ইউনিয়নের প্রধান দর্শন পাল জানিয়েছেন, '১ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন অবস্থান থেকে হেঁটে আমরা সংসদের দিকে যাব।' এদিকে, সাধারণতন্ত্র দিবসে শান্তিপূর্ণভাবে তাঁরা ট্র্যাক্টর মিছিল করবে বলে দিল্লি পুলিশকে জানিয়েছিল আন্দোলনরত কৃষকরা। তারই প্রেক্ষিতে কৃষকদের মিছিলের অনুমতি দিয়েছিল পুলিশ। তবে তা হয়নি। এবং এরপরই পুলিশ আরও তৎপর হয়েছে অমিত শাহের নির্দেশেই।

রাজধানীর ভিতরে ঢুকতে থাকে সারি সারি ট্রাক্টর
কথা ছিল, নির্ধারিত তিনটি রুট (সিঙ্ঘু, টিকরি ও গাজ়িপুর সীমান্ত) দিয়ে কৃষকরা দিল্লিতে প্রবেশ করবেন। ট্রাক্টর নিয়ে মিছিল করে আবার যেখান থেকে শুরু হয়েছিল, সেখানে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু আদতে হল পুরো উলটো। সত্তর দিনের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হঠাৎ ছন্দপতন। চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। নির্দিষ্ট রুট ছেড়ে ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানীর ভিতরে ঢুকতে থাকে সারি সারি ট্রাক্টর।

সীমান্তে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন
পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সীমান্তে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। ফলে রাজধানীর ভিতরে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল অনেকটাই আলগা। একের পর এক ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকেন কৃষকরা। গন্তব্য ছিল লালকেল্লা। রীতিমতো তাণ্ডব চলে দিল্লির বুকে। লালকেল্লার মাথায় কৃষক আন্দোলনের পতাকা ঝুলিয়ে দেন কৃষকরা। চলল দফায় দফায় সংঘর্ষ, ফাটানো হল কাঁদানে গ্যাসের শেল। লাঠিচার্জও হল।

দিল্লি পুলিশ কড়া অবস্থান নিয়েছে
খুব স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণতন্ত্র দিবসের এই ঘটনার পর দিল্লি পুলিশ কড়া অবস্থান নিয়েছে। রাজধানীতে মোতায়েন হয়েছে ১৫ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী। পুলিশ জানিয়েছে, সিঙ্ঘু, টিকরি ও গাজিপুর এই তিনটি সীমানায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাব, রাজস্থান সীমান্তেও পরিস্থিতি শান্ত রাখতে তৎপর থাকবে পুলিশ।

কৃষিমন্ত্রীর প্রস্তাব
এদিকে, সোমবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর আবারও বলেছেন, সরকার শেষ যে প্রস্তাব দিয়েছে তা সবচেয়ে ভালো প্রস্তাব। কৃষকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালানোর পর এই প্রস্তাব মেনে নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তোমর। কেন্দ্রের তরফে শেষ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এক থেকে দেড় বছরের জন্য স্থগিত রাখা হবে তিন নয়া কৃষি আইন। তবে তা খারিজ করে দিয়ে আইন সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতেই অনড় রয়েছেন কৃষকরা। কেন্দ্রের সঙ্গে একাদশ দফার বৈঠকেও এই সমস্যার জট খোলেনি।