কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় আপের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করার দাবি বিরোধীদের
নয়াদিল্লি, ২৩ এপ্রিল : বুধবার আপের সমাবেশে প্রকাশ্যেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আত্মহত্যা করলেন রাজস্থানের এক কৃষক। এক কৃষক আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে জানার পরও নিজের সমাবেশ মুলতুবি না করে নিজের বক্তব্য পেশ করে গিয়েছিলেন আম জনতার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আর তার জেরেই বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। এই ঘটনায় কেজরিওয়ালকে অসংবেদনশীল মুখ্যমন্ত্রী বলে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা।
শুধু তাই নয়, আপের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করার দাবি তুলেছে বিরোধী দলগুলি।
বুধবার কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণ বিলের বিরোধিতায় সমাবেশের আয়োজন করেছিল আপ। সমাবেশ ছিল যন্তরমন্তরে। গাছের উপর কয়েকজনকে উঠতে দেখে অমনযোগীভাবেই সবাইকে নেমে আসতে অনুরোধ করেন আপ কর্মী-নেতারা। বছর ৪১-এর গজেন্দ্র সিং গামছা গলায় বেধে গাছ থেকে ঝুলে পড়েন।
কয়েকজন আপ কর্মী গাছে উঠে তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। কিন্তু ততক্ষণে ফাঁসির দড়ি তাঁর শ্বাস বন্ধ করে দিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এরই মাঝে চলতে থাকে কেজরিওয়ালের প্রায় ৩০ মিনিটের বক্তৃতা। যার মধ্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ শানান। ধনিদের জন্য কাজ ও গরিবদের তাচ্ছিল্য করার অভিযোগ আনেন প্রধানমন্ত্রীর উপর।
তবে আপের প্রবীন নেতা কুমার বিশ্বাসের দাবি, পুলিশের চোখের সামনে সব ঘটনা ঘটেছে। তবুও ষড়যন্ত্র করে ওই কৃষককে উদ্ধার করতে এগিয়ে যায়নি পুলিশ। যাতে আপের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় তার জন্য পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
আপের সভায় কৃষকের মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের রাজনীতি
তবে, কুমার বিশ্বাস যাই বলুন না কেন বিরোধী দলগুলি কিন্তু অসংবেদশলীতার জন্য দায়ী করেছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকেই। ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পরেও কেন কেজরিওয়াল নিজের সভা চালিয়ে গেলেন, কেন তৎক্ষণাৎ সভা বন্ধ করে কৃষককে উদ্ধারের কোনও ব্যবস্থা নিলেন না সে প্রশ্নও তুলেছে বিরোধীরা।
দিল্লি বিজেপি প্রধান সতীশ উপাধ্যায়ের কথায়, এটি আত্মহত্যা নয় খুনের ঘটনা। বিষয়টির তদন্ত হওয়া উচিত ও খুনের মামলা রুজু করা উচিত।
অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা সত্যব্রত চতুর্বেদী দিল্লি সরকারের সঙ্গে অভিযোগ এনেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও। তাঁর কথায়, আত্মহত্যার পোষকতার অভিযোগ রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের উপর দায়ের করা উচিত। আর এই ঘটনায় যে দুই ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি দায়ী তাদের মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রী অন্যজন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে দিল্লি পুলিশ কমিশনার ডি এস বাসির সঙ্গে কথা বলে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।