ভারতে মৃত্যুহারের পারাপতন সত্যিই কি শোনাচ্ছে আশার কথা? জানুন কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে নিত্যনতুন পাহাড় প্রমাণ রেকর্ড করছে ভারত। ইতিমধ্যেই গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৬ হাজারের বেশি মানুষ করোনা কবলে পড়েছে গোটা দেশে। ব্রাজিল কে টপকে ইতিমধ্যেই করোনা সংক্রমণের নিরিখে গোটা বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানেও উঠে এসেছে ভারত। এমতাববস্থায় গত কয়েকদিন ধরেই ভারতের মৃত্যুহার হ্রাস নিয়ে আশার কথা শোনা গেলও ইদানিং উঠে আসছে বেশ কিছু নতুন তত্ত্ব।

মৃতের সংখ্যার অনুপাতে এখনও গোটা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে ভারত
পরিসংখ্যান অনুয়ায়ী দেখা যাচ্ছে এখনও পর্যন্ত করোনা কবলে পড়ে গোটা দেশে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ। যদিও এই তালিকায় এখনও ভারতের উপরে রয়েছে ব্রাজিল ও আমেরিকা। করোনা আক্রান্তের বাড়বাড়ন্তের মাঝে অনেক বিশেষজ্ঞই সাম্প্রতিক কালে ভারতের মৃত্যুহার হ্রাস নিয়ে আশার কথা শোনান। কিন্তু সেখানেও এখন একাধিক আশঙ্কার কথা শোনা যাচ্ছে।

মৃত্যুহার হ্রাসের এই পরিসংখ্যান তাহলে কি শুধুই ধোঁয়াশা ?
শেষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতে মৃত্যুহার এখন কমে ১.৭ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছে। যা অন্যান্য দেশের থেকে বেশ খানিকটা কম। এমনকী করোনা সংক্রমণের জেরে গোটা বিশ্বের মৃত্যু হারের থেকেও ভারতের মৃত্যুহার ক্রমশ নিম্নমুখী। কিন্তু এই ফলাফলের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা এখন বারবারই অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতের তরুণ ও বয়ষ্করের সংক্রমণ ও মৃত্যুর তুল্যমূল্য বিচারের উপরেই জোর দিতে বলছেন।

কোন দেশে কত মৃত্যুহার ?
বর্তমানে আমেরিকায় মৃত্যুহার ৩ শতাংশ, ব্রিটেনে ১১.৭ শতাংশ। ইতালিতে ১২.৬ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতে সংক্রমণ বেশি হলেও যুবসমাজের আধিক্যের কারণেই গড় মৃত্যু হার কম। কিন্তু বয়সের অনুপাতে অন্যান্য দেশে এমনকী ইউরোপীয় দেশগুলির সংখ্যা ভারতের মৃত্যুহার যাচাই করলে সহজেই দেখা যায় মৃত্যুহার হ্রাসের এই পরিসংখ্যান একপ্রকার ধোঁয়াশা ও মরীচিকা বিনা কিছুই না।

মৃত্যুহারের পারাপতন সত্যিই কি শোনাচ্ছে আশার কথা ?
এদিকে মৃত্যুহার কমার পিছনে সরকারের একাধিক সতর্কতা মূলক পদক্ষেপ গ্রহণকেই বরাবর সামনে এনেছে কেন্দ্র। এমনকি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে সরকার জানায় এপ্রিলে যেকানে মৃত্যুহার ছিল ৪ শতাংশ তা অগাস্টে নেমে আসে ২.১৫ শতাংশে, আর এখন তা ১.৭ শতাংশে। যদিও এই পরিসংখ্যানের পিছনে অনেক ধোয়াঁশা রয়েছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। অনেকেরই সাফ বক্তব্য সরকারি পরিকাঠামো সহ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের অভাবের কারণেই ক্রমেই করোনা গ্রাসে তলিয়ে যাচ্ছে ভারত।

মৃতের পরিসংখ্যান তাহলে কি পুরোই গোলকধাঁধা ?
উল্টোদিকে বিশেষজ্ঞরা করোনা মোকাবিলায় ভারতের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়েও একগুচ্ছ অভিযোগ তুলেছেন। পাশাপাশি করোনা আসার আগেও দেশবাসীর মৃত্যুর সংখ্যা নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকারি গাফিলতির দিকেও ইঙ্গিত করতে দেখা যায় তাদের। এদিকে সদ্য প্রকাশি একটি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে ভারতে মোট মৃত্যুর ৮৬ শতাংশই সরকারি সিস্টেমে আপডেট করা হয়। এমনকী মোট মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র ২২ শতাংশ পরিবারই ডাক্তারদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ডেথ সার্টিফিকেট পেয়ে থাকেন।

দুর্গাপুজো ২০২০-র সময় ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কোথায় পৌঁছবে! হাড়হিম করা তথ্য নয়া সমীক্ষায়