জানুয়ারিতেই হয় দিল্লি হিংসার পরিকল্পনা, দিল্লি পুলিশকে বিস্ফোরক তথ্য দিল তাহির হুসেন
উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসা চলাকালীন চাঁদবাগ এলাকার নালা থেকে উদ্ধার হয় আইবি আধিকারিক অঙ্কিত শর্মার দেহ। সেই ঘটনায় প্রাক্তন তাহির হুসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সন্ত্রাস বিরোধী আইন ইউএপিএর আওতায় মামলা আনা হয় সাসপেন্ডেড আপ নেতা তাহির হুসেন।
তাহিরকে জিজ্ঞাসাবাদ দিল্লি পুলিশের
সেই তাহিরকেই জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেল, দিল্লি হিংশার ছক কষা হয়েছিল জানুয়ারিতেই। অভিযুক্ত আপ নেতা তাহির হুসেনের চার্জশিটে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, একমাস আগে, ৮ জানুয়ারি তাহির দেখা করেছিলেন জেএনইউয়ের দুই প্রাক্তন ছাত্রনেতা উমর খালিদ ও খালিদ সইফির সঙ্গে।
জানুয়ারি মাসেই দিল্লি হিংসার পরিকল্পনা
মঙ্গলবার কারকারদুমা আদালতে তাহিরের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়। তাতে লেখা হয়েছে, ৮ জানুয়ারি উমর খালিদ তাহিরকে বলেছিলেন, 'ট্রাম্পের সফরের সময় দিল্লিতে দাঙ্গা হবে। সেজন্য প্রস্তুত থাকুন।'
তাহিরকে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়য়েছিল
একইসঙ্গে তাহিরকে বলা হয়, উমর খালিদ নিজে ও তাঁর সংগঠনের অন্যরা দাঙ্গার সময় তাহিরকে আর্থিকভাবে সাহায্য করবেন। হুসেনকে জেরা করে ও তাঁর মোবাইলের কল লিস্ট দেখে এই সব তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাহির জানিয়েছেন, তাঁকে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা নিয়ে তিনি দাঙ্গার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। পাশাপাশি আইবি আধিকারিক অঙ্কিত শর্মাকে যেই দলটি হত্যা করেছিল তার নেতৃত্ব দিয়েছিল এই তাহির।
অঙ্কিত শর্মাকে হত্যা
ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লি হিংসায় আইবি অফিসার অঙ্কিত শর্মাকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তাহিরের বিরুদ্ধে। অভিযোগের পর একটি ভিডিও ভাইরাল হতেই তা নিয় তুমুল বিতর্ক হয়। পরবর্তীকালে শাসকদল আম আদমি পার্টি থেকে সাসপেন্ড হন তাহির। তাঁকে গ্রেফতার কের শুরু হয় মামলা।
উমার খালিদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে ইউএপিএ
শুধু তাহির নন, দিল্লি হিংসায় উস্কানির অভিযোগে জেএনইউ নেতা উমার খালিদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে ইউএপিএ ধারা। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩,২৪,২৫ তারিখে তাঁর ইশারাতে দিল্লি হিংসায় ইন্ধন যোগানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লি হিংসা একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। যার করুণ প্রভাব পড়ে দেশের রাজধানীর ওপর।
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে হিংসা
জানা গিয়েছে ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লির উত্তর-পূর্ব এলাকায় অনেক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে পুরোনো অনেক ভিডিও ফরোয়ার্ড করা হয় যেগুলি আদতে দিল্লি হিংসার সঙ্গে যুক্ত নয়। পুরোনো ভিডিও দেখিয়ে সেই গ্রুপগুলিতে ক্রমাগত উস্কানিমূলক বার্তা ছড়ানো হয়। সেই গ্রুপ বানানোর সঙ্গে হয়দার যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে প্রাথমিক ভাবে। যদিও পুলিশের তরফে এখনও খোলশা করে কিছু বলা হয়নি।
১৪০০ জনকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ
এর আগে দিল্লিতে হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় যু্ক্ত থাকার অভিযোগে ১৪০০ জনকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়েছিল। ধৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এরকম উত্তেজনা ছড়ানোর বিষয়টি সামনে আসে। আরও জানতে আটক হয়দারকে জেরা করছে পুলিশ।
৪৩৬টিরও বেশি অভিযোগ দায়ের
৪৩৬টিরও বেশি অভিযোগ দায়ের হয়েছে হিংসা সম্পর্কিত ঘটনায়। এই মামলাগুলির মধ্যে ৪৫টি হল বেআইনি ভাবে অস্ত্র রাখার দায়ে। তবে এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত আছে বলে দাবি করা হয়। এই হিংসার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা অন্তত ৫০। জখম হয়েছেন আরও ৩৫০ জন।
মৃত একাধিক মানুষ
দিল্লির হিংসায় যেমন মারা গিয়েছেন এক পুলিশ কনস্টেবল ও আইবি অফিসার, তেমনই মৃতদের মধ্যে রয়েছেন সদ্য বিবাহিত এক ব্যক্তি, একজন ডিজে, এক ব্যবসায়ী, একজন বাবা যে তাঁর সন্তানদের জন্য টফি কিনতে বেরিয়েছিলেন, একজন ৮৫ বছরের বৃদ্ধা। রেহাই পাননি সাংবাদিকরাও। দিল্লি হিংসা চলাকালীন অশান্ত এলাকায় খবর সংগ্রহে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের রোষের সামনে পড়েছেন সাংবাদিকরা।
চিনকে জবাব দিতে প্রস্তুত ভারত! লাদাখে উত্তেজনার মাঝে কাশ্মীরে জরুরি ভিত্তিতে এয়ারস্ট্রিপ তৈরি