ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ বাজেট পেশ, ব্রিফকেস থেকে বহিখাতায় বাজেটনামার বিবর্তন
ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ বাজেট পেশ, ব্রিফকেস থেকে বহিখাতায় বাজেটনামার বিবর্তন
২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পেশ করবেন কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২২-২৩। আর বাজেট পেশ মানেই তাকে নিয়ে চর্চা হবে না, এটা অসম্ভব। দেশের কোন খাতে কত টাকা ধার্য করা হল আগামী এক বছর পর্যন্ত, সেই সঙ্গে কোন রাজ্যের কপালে কী জুটল, বেকার সমস্যা থেকে জিডিপি, সবকিছু নিয়েই হতে চলেছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কিন্তু এত সবকিছুর মধ্যেই এই বাজেটের প্রধান আকর্ষণ হল এর খাতা, যেখানে লিপিবদ্ধ থাকে বাজেটের খসড়া। আর লোকসভায় ঢোকার মুহূর্তে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর হাতে থাকা সেই বাজেটনামার দর্শন পেতেই ভিড় জমান কত মানুষ। একটু দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে বিবর্তনের ধারা বেয়ে কালের সঙ্গে নতুন নতুন রূপ ধারণ করেছে এই বাজেটের খেরোর খাতা।
ব্রিফকেসে বন্ধ বাজেট
দেশের স্বাধীনতার পরেও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বাজেট মানেই ছিল ব্রিফকেস। খয়েরি চামরার ব্রিফকেসে করে বহিখাতা নিয়ে ঢুকতেন দেশের অর্থমন্ত্রীরা। সেই ইন্দিরা গান্ধির আমল থেকে মোদী আমলের অরুণ জেটলি পর্যন্ত অক্ষুণ্ণ ছিল সেই ধারা। ভারতীয়দের প্রতিবছর ব্রিটিশ অনুকরণে ব্রিফকেস করে বহিখাতা ব্যবহার করে বাজেট পরিচালন করতে দেখা গিয়েছে বহু যুগ ধরে।
ট্র্যাডিশন ভেঙে শালুতে বহিখাতা
২০১৯ সালে দীর্ঘ যুগের ট্র্যাডিশন ভেঙে লাল শালু হাতে বাজেট পেশ করতে পৌঁছন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ব্রিফকেস ছেড়ে হাতে করে লাল শালু জড়িয়ে বাজেটের বহিখাতা নিয়ে ঢুকতে দেখা দিয়েছিল অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে। কারণ তিনি ব্রিটিশ অনুকরণ করতে চাননি। ব্রিফকেস বহন করা ব্রিটিশ কায়েদার সঙ্গে মেলে। সেই অনুকরণ না করতে চেয়ে হাতে করে বহিখাতা নিয়ে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ২০২০ সালেও কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার সময় লাল খামে ঢুকিয়ে খাতা হাতে নিয়ে সংসদে ঢুকতে দেখা গিয়েছে অর্থমন্ত্রীকে।
ডিজিটাল বাজেটনামা
গত ২ বছর ধরে গোটা বিশ্বকে গ্রাস করেছে করোনাভাইরাস। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সোজাসুজি ডিজিটাল মাধ্যমে চলে গিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। গত বছর হাতে ট্যাব নিয়ে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ক্ষমতায় এসে মোদি সরকার ডিজিটাল ইন্ডিয়ার ডাক দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সেই ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশন কে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পেপারলেস বাজেটের ব্যবস্থা করা হয়। করোনার কারণে পেপারলেস ব্যবস্থাকে অনেক বেশি নিরাপদ বলে মনে করা হয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে ডিজিটাল মাধ্যমকেই বাজেটে হাতিয়ার করা হয়েছে। গতবছর সরকারের পক্ষ থেকে বাজারের একটি নির্দিষ্ট অ্যাপ চালু করা হয়েছে। 'ইউনিয়ন বাজেট মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন'নামক অ্যাপের ফলে সকল সাংসদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বাজেটের তথ্য পেয়েছেন।
বাজেটের সাত সতেরো
১৯৪৭ সালে ভারতের প্রথম অর্থমন্ত্রী আর কে শানমুখম চেট্টি একটি চামড়ার পোর্টফোলিও ব্যাগ বহন করেছিলেন। ১৯৭০ সালের কাছাকাছি সময়ে, অর্থমন্ত্রীরা একটি ব্যাগ বহন করতে শুরু করেছিলেন। তবে ব্যাগের রং পরিবর্তন হয়েছে বেশ কয়েকবার। মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঘটেছে বিশাল বদল। সময় বদলেছে। আর তার সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে দেশের বাজেট পেশের পদ্ধতিও।