ভ্যাকসিন এলেও তা আমজনতার হাতে পৌঁছনোর আগে মাথাচাড়া দিতে পারে কোন কোন সমস্যা?
ভ্যাকসিন এলেও তা আমজনতার হাতে পৌঁছনোর আগে মাথাচাড়া দিতে পারে কোন কোন সমস্যা?
করোনাভাইরাস, ফাইজার, মডার্ণা, ভ্যাকসিন, দিমিত্রভ কিরিল, আরডিআইএফ বিশ্বের প্রায় ১৩.৪৫ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া মারণ করোনার প্রতিষেধক খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন গবেষকরা। ইতিমধ্যেই মোডার্না ও ফাইজারের সম্ভাব্য প্রতিষেধকের সফলতা ছুঁয়েছে ৯০% গণ্ডি। পাশাপাশি পরের সপ্তাহেই ভারতে দ্বিতীয়/তৃতীয় ট্রায়ালের জন্য পৌঁছাবে রাশিয়ার ভ্যাকসিন স্পুটনিক-ভি। আশা যোগাচ্ছে কেভিশিল্ডও। অন্যদিকে ভারতের জাতীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তথ্যানুযায়ী, ভারতে কোভিডে মৃত্যুহার নেমে এসেছে ১.৪৭%-এ, সেরে ওঠার হার বেড়ে হয়েছে ৯৩.৫২%। সব মিলিয়ে আশার আলো দেখছেন বিজ্ঞানীরা।
ব্রিকস দেশগুলির সহযোগিতা প্রার্থনা পুতিনের
সম্প্রতি আরডিআইএফ-এর সিইও দিমিত্রভ কিরিল জানিয়েছেন যে, প্রগতিশীল তিন ভ্যাকসিনের মধ্যে স্পুটনিক ভি সবচেয়ে নিরাপদ। তিনি আরও জানিয়েছেন, আরডিআইএফ আয়োজিত পোলের নিরিখে ভারতের প্রায় ৬০% মানুষ স্পুটনিকের সম্পর্কে জানে। অন্যদিকে, প্রায় ৯২% সফল স্পুটনিক ভি-এর ট্রায়ালের জন্য ব্রিকস দেশগুলির কাছে আবেদন করেছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতে, স্পুটনিক ভি, ফাইজার ও মোডার্নার তুলনায় কম খরচ সাপেক্ষ। ফলত পুতিনের ডাকে যথেষ্ট সাড়া দিয়েছে ভারত ও চিন। তবে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে কতদিন লাগবে সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট দিশা দেখাতে পারছেন না কেউই।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন বাজারজাতকরনে কী কী সমস্যা ?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতে সর্বপ্রথম করোনা ভ্যাকসিন হিসেবে ২০২১-এর প্রথম তিন মাসের মধ্যেই ভারতে পাওয়া যেতে পারে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন। যা সিরাম ইন্সস্টিটিউটের হাত ধরে কোভিশিল্ড নামে তৈরি হচ্ছে। যদিও উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকদের বক্তব্য, ভারতে ভ্যাকসিন সংরক্ষণের হিমঘরের পরিকাঠামো খুব একটা ভালো নয়। অন্যদিকে করোনা ভ্যাকসিন মজুতের জন্য যে -৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের হিমঘর চাইছে ফাইজার, তা আদৌ ভারতে সম্ভব কি না খতিয়ে দেখছে ভারতের জাতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
উৎপাদন হলেও সরবরাহে খামতি ভারতের
আন্তর্জাতিক ওষুধ নির্মাতারা বলছেন, ওষুধ ও ভ্যাকসিন উৎপাদনে ভারত অগ্রগণ্য হলেও সরবরাহের ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত খুঁত এ দেশের বড় সমস্যা। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ডঃ ভি কে পল এ বিষয়ে জানান, "আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গেই ভারতের সম্পূর্ণ জনসংখ্যাকে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভবপর না হলেও প্রশাসন সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই বাকী ব্যবস্থা নেবে। বিধি ও নিয়ম তৈরি করে সুষম বন্টনের লক্ষ্যে এগোবে কেন্দ্র।" যদিও দুর্বল পরিকাঠামো সম্বলিত ১৩৫ কোটি জনসংখ্যার দেশে কিভাবে সঠিক বন্টন হবে ভ্যাকসিনের, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।
সকল ভারতবাসীকে ভ্যাকসিন দিতে কত দিন সময় লাগতে পারে ?
অন্যদিকে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা এও জানাচ্ছেন, এই বিশাল দেশের প্রত্যেক কোণায় প্রত্যেক দেশবাসীর দেহে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগে সময় লাগবে কমপক্ষে দুই বছরেরও বেশি সময়! এদিকে ইতিমধ্যেই দেশের প্রত্যেক নাগরিক ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন প্রতিশ্রুতি দিতে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রীকে। এই কাজে ব্যবহার করা হবে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যেখানে নাগরিকদের নাম, প্রয়োজন-ইত্যাদি বিবরণ জমা থাকবে। দেশের নির্বাচনী কাঠামোর অনুরূপ ব্যবস্থায় ভ্যাকসিন বন্টনের কথা প্রধানমন্ত্রী বললেও বাস্তবে তা কতটা সফল হবে, সে বিষয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায় বাড়ছে সংক্রমণ, একনজরে জেলার করোনা পরিসংখ্যান