মিলল না মায়াবতীর দাবি, তিন রাজ্যেই বহুজন সমাজ পার্টির ভরাডুবি
মিলল না মায়াবতীর দাবি, তিন রাজ্যেই বহুজন সমাজবাদী পার্টির ভরাডুবি
উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং উত্তরাখণ্ডে বহুজন সমাজ পার্টি নিশ্চিহ্ন হওয়ার মুখে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোথাও ক্ষমতার আশেপাশে থাকা তো দূর অস্ত খোদ উত্তরপ্রদেশেই ২০১৭-র থেকেও খারাপ ফল করে মাত্র ৫টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বসপা৷ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী, ভোটের আগে বলেছিলেন যে বিএসপি উত্তর প্রদেশে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে! উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও, পাঞ্জাবে ০ টি আসন এবং উত্তরাখণ্ডে ২ টি আসনে এগিয়ে রয়েছেন বসপা৷
পশ্চিম ও পূর্ব ইউপি-তে বসপার শক্ত জমি রয়েছে তা সত্ত্বেও ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ১৯ টি আসন জয়ের মাইলস্টোন থেকে এবারে অনেক দূরে রয়েছে বসপা। গতবার ক্ষমতায় না এলেও ২২.৩ শতাংশ ভোট গিয়েছিল বসপার ঝুলিতে৷ কিন্তু তারপর থেকেই ইউপিতে বিএসপি-র ভাগ্য বিগত কয়েকটি নির্বাচনেই সঙ্গী হয়নি৷ যে দলটি ২০০৭ সালে ২০৬টি আসন জিতে রাজ্যে সরকার গঠন করেছিল এই অল্পদিনে সেই দলের ভোট এতটা পড়ে যাওয়া অবাক করেছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদেরও। যদিও ২০০৭ এ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আসন সংখ্যা কমেছে দলটিতে ২০১৭ সালে ৮০টি, ২০১৭ সালে ১৯টি এবং এখন ২০২২ সালে আরও কম আসনে এগিয়ে রয়েছে বসপা।
যদিও পাঞ্জাবে, দলটি এর আগেও সেই অর্থে খাতা খুলতে পারেনি৷ ১৯৯৭ সাল থেকে রাজ্য বিধানসভায় একটিও আসন জোতেনি বসপা৷ যদিও ২০১৭ সালের নির্বাচনে পাঞ্জাবে ১.৫২ শতাংশ ভোটের পেয়েছিল বসপা। যাইহোক, এবার শিরোমণি অকালি দলের সঙ্গে বসপার জোট পাঞ্জাবে আরও ভাল পারফরম্যান্সের প্রত্যাশা তৈরি করেছিল, তবুও বিএসপি এখনও পর্যন্ত মাত্র ১.৯২ শতাংশ ভোটইপেয়েছে পাঞ্জাবে। উত্তরাখণ্ডের ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, দলটি ৬.৯৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল যা এখন প্রায় পর্যন্ত ৪.৭৮ শতাংশে নেমে এসেছে। যদিও বর্তমানে উত্তরাখণ্ডে বসপার কোনও বিধায়ক না থাকলেও এবারের উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় বিএসপি তার অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে মনে কারা হচ্ছে।
ইউপিতে বিএসপি উত্তর প্রদেশে দলের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং পণ্ডিত সুধা পাই ব্যাখ্যা করেছেন যে এই ফলাফলগুলি রাজ্যে বিএসপির পতনকে চিহ্নিত করেছে, যেখানে উত্তরপ্রদেশে এই দল সহজেই ২০ শতাংশ ভোট পেত। কিন্তু বৃহস্পতিবারের ফলের হিসেবে এখন বসপা ১২.৮৬ শতাংশে নেমে এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক পাই-য়ের মতে ভোটের শতাংশের সঙ্গে এটি একটি স্পষ্ট লক্ষণ যে জাটরা বিএসপিকে ত্যাগ করছে৷ বিএসপি ভাল কাজ করছে না এবং একটি অস্তিত্ব সংকটের সম্মুখীন হয়ে পতনের দিকে যাচ্ছে। যাইহোক, আমি এত তাড়াতাড়ি পার্টি বন্ধ হয়ে যাওয়া কথা বলতে ইচ্ছুক নই।
যোগী-মোদীর ডবল ইঞ্জিনে ভর করে কি ২০২৪-র বৈতরণী পার হবে, কোন ইঙ্গিত দিচ্ছে উত্তর প্রদেশের ফলাফল
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরও বলেছেন, যে ভোটারদের মধ্যে একটি ধারণা রয়েছে যে বিএসপি দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাই এখন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তে যাওয়া ভাল, এটি ইঙ্গিত দেয় যে বিএসপির অনেক ভোট বিজেপিতে গিয়েছে। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেছেন যে মোদী ও যোগী সরকারের জন কল্যাণ প্রকল্পগুলি বিজেপির পক্ষে সহায়ক হয়েছে কারণ বেশিরভাগ প্রান্তিক দলিত ভোটারদেরই নগদের প্রয়োজন। প্রসঙ্গক্রমে ভোটের আগে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একটি সাক্ষাৎকারে বলেন বিএসপি এখনও ইউপিতে একটি প্রাসঙ্গিক দল, এবং এটি মুসলিম এবং জাট উভয় সম্প্রদায়ের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য ভোট পাবে।