কোয়ারেন্টাইন পর্ব শেষ, শীঘ্রই নামিবিয়া থেকে আনা আটটি চিতাকে ছাড়া হবে কুনো জাতীয় উদ্যানে
বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে! এই প্রবাদকে মাথায় রেখে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর নামিবিয়া থেকে আনা আটটি চিতাবাঘকে এবার ছাড়া হবে বড় কোনও ঘেরা জায়গায়। ইতিমধ্যেই পশুপালন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নো-অবজেকশন শংসাপত্র পেয়ে গিয়েছে পরিবেশ, বন ও আবহাওয়া পরিবর্তন মন্ত্রক। চিতাদের কোয়ারেন্টাইনে থাকা সম্পূর্ণ হয়েছে সেই সংক্রান্ত এই শংসাপত্র।
দু’টি চিতাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে
সরকারিভাবে জানা গিয়েছে যে শনিবার আটটি চিতার মধ্যে দু'টিকে মধ্যপ্রদেশের শেওপুর জেলার কুনো জাতীয় উদ্যানের বিস্তৃত এনক্লোজারে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যেখানে প্রাণীগুলি জঙ্গলের অভ্যাসে ফিরবে। অর্থাৎ কিনা চিতাগুলিকেই শিকার খাবার খেতে হবে। কুনো বন্যপ্রাণ সার্কেলের বিভাগীয় ফরেস্ট আধিকারিক (ডিএফও) প্রকাশ কুমার বর্মা বলেন, 'নামিবিয়া থেকে আনা আটটি চিতার কোয়ারেন্টাইন সময় পার হওয়ার পর দুই পুরুষ চিতাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বড় এনক্লোজারে। বাকি চিতাদেরও পর্যায়ক্রমে শীঘ্রই ছেড়ে দেওয়া হবে।' বড় এনক্লোজারে দু'টি চিতা ছেড়ে দেওয়ায় রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর আনন্দ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এও জানিয়েছেন যে অন্য চিতাদেরকেও খুব শীঘ্রই ছাড়া হবে।
নো অবজেকশন শংসাপত্র
পরিবেশ, অরণ্য ও আবহাওয়া পরিবর্তন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয়, 'তারা পশুপালন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নো অবজেকশন শংসাপত্র পেয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে 'প্রজেক্ট চিতা'র সূচনায় নামিবিয়া থেকে বিশেষ বিমানে করে আনা আটটি চিতা মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে ছাড়েন মোদি নিজেই। সরকার সেই চিতাদের কোয়ারেন্টাইন পর্ব শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে।' পশুপালন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে নয়মিত পর্যবেক্ষণ ও টেস্ট রিপোর্টের ভিত্তিতেই চিতাবাঘগুলিকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
নতুন নামকরণ হবে চিতাদের
কুনো জাতীয় উদ্যান সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, নামিবিয়ার আটটি চিতার নতুন নামকরণ হবে। এর জন্য জনতার কাছে নাম চাওয়া হয়েছিল। সোমবার পর্যন্ত ১০ হাজার ৮৫৭টি নাম জমা পড়েছে বন কর্তাদের কাছে। এর পর তা ঝাড়াই-বাছাই হবে। চিতাগুলির বর্তমান নাম এলটন, ফ্রেডি, ওবান, সাশা, সায়ায়া, সভাননা, টিবিলসি ও আশা। জানা গিয়েছে, নামিবিয়া থেকে আনা ওই আটটি চিতার স্বাস্থ্য ভালো রয়েছে, তারা স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছে, স্বাভাবিক জলপান করছে এবং মলত্যাগও তাদের স্বাভাবিক। ৩০ দিনের কোয়ারেন্টাইন পর্ব শেষ। তাই দু'টি চিতাকে বড় এনক্লোজারে ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং বাকি ৬ চিতাকে পর্যায়ক্রমে ছাড়া হবে। যেখানে তারা শিকার করে খাবার খাবে। ১০ নভেম্বরের মধ্যে এই চিতাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
প্রজেক্ট টাইগার
প্রসঙ্গত, ভারতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সবচেয়ে সফল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ উদ্যোগগুলির মধ্যে একটি 'প্রজেক্ট টাইগার' যা ১৯৭২ সালে শুরু হয়েছিল, এটি কেবল বাঘ সংরক্ষণে নয়, সমগ্র বাস্তুতন্ত্রের জন্যও অবদান রেখেছে।