লকডাউনের জেরে বেড়েছে গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা, ৫৮টি অভিযোগ মহিলা কমিশনে
লকডাউনের জেরে বেড়েছে গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা, ৫৮টি অভিযোগ মহিলা কমিশনে
করোনা ভাইরাসের জেরে ২৪ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এই লকডাউনের পর থেকেই ভারতে গার্হস্থ্য হিংসা বেড়ে গিয়েছে। কারণ স্বামীরা তাঁদের হতাশা প্রকাশ করছেন স্ত্রীর ওপর, আর স্ত্রীর এই মুহূর্তে হেনস্থাকারীর হাত থেকে বাঁচার উপায় নেই।
৫৮টি গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এসেছে কমিশনে
ভারতে ২৪ মার্চ থেকে তিন সপ্তাহের লকডাউন চলছে, যেখানে ১.৩ বিলিয়ন মানুষকে বাড়ির ভেতরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আর না ছড়ায়। দেশে ইতিমধ্যেই এই মহামারিতে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে ও হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত। এরই মাঝে জাতীয় মহিলা কমিশন (এনসিডব্লিউ) ২৩ মার্চ থেকে ৩০ মার্চের মধ্যে ৫৮টি গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ পেয়েছে। এনসিডব্লিউয়ের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা জানিয়েছেন যে উত্তর ভারত থেকে বিশেষ করে পাঞ্জাব থেকেই এই অভিযোগগুলি এসেছে।
পাঞ্জাব থেকে অভিযোগ বেশি আসছে
রেখা শর্মা বলেন, ‘সংখ্যাটা ক্রমশঃ বাড়ছে। বাড়িতে বসে হতাশায় ভুগছে পুরুষরা আর সেই হতাশার প্রতিফলন ঘটছে স্ত্রীদের ওপর। এই ট্রেন্ডটা বেশিরভাগই দেখা গিয়েছে পাঞ্জাবে, সেখান থেকেই অধিকাংশ অভিযোগ আসছে।' তবে কত অভিযোগ এসেছে এখনই সঠিকভাবে সংখ্যাটা জানা যায়নি। মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে যে ইমেল মারফত ৫৮টি অভিযোগ এসেছে। তবে সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি কারণ সমাজের নীচুস্তরের মহিলারা অনেকেই পোস্ট করে তাঁদের অভিযোগ পাঠিয়েছেন।
স্বামীর হতাশার শিকার হচ্ছেন স্ত্রীরা
এরমধ্যে রাজস্থানের শিকারের এক কন্যাদায়গ্রস্ত বাবা কমিশনকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে তাঁর মেয়ে স্বামীর হাতে নৃশংসভাবে মার খাচ্ছে। ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন যে তাঁর জামাই স্কুলের শিক্ষক। তাঁর মেয়েকে লকডাউনের পর থেকে খেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগে মহিলা কমিশনকে জানিয়েছেন। লকডাউনের কারণে অনেক পোস্টাল অভিযোগও পোস্ট অফিসে জমা হয়ে রয়েছে, তাই সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলে মনে করছে কমিশন। রাজ্য মহিলা কমিশনগুলিকেও এ বিষয়ে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
মহিলারা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করুক
রেখা শর্মা মহিলাদের কাছে জানিয়েছেন যে যদি তাঁরা এ ধরনের অত্যাচারের সম্মুখীন হন তবে যেন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। লকডাউনের কারণে মহিলা কমিশন পর্যন্ত মহিলারা পৌঁছাতে পারছেন না এখন। নারী সুরক্ষা অধিকারের কর্মীরাও জানিয়েছেন যে তাঁরা প্রচুর গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ পেয়েছেন। অল ইন্ডিয়া প্রগ্রেসিভ মহিলা সংগঠনের সেক্রেটারি এবং অধিকার কর্মী কবিতা কৃষ্ণান বলেছেন, ‘সরকার যদি লকডাউন হওয়ার বিষয়ে কিছু সতর্কতা দিত তবে দুর্বল মহিলারা নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে পারত।'