বয়ফ্রেন্ড বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভাঙলেই শিক্ষিত মহিলারা 'ধর্ষণ'-এর কাঁদুনি গাইতে পারবে না: হাইকোর্ট
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে না রাখা প্রত্যেক ক্ষেত্রে ধর্ষণ বলে ধরে নেওয়া হবে না। শনিবার একটি ধর্ষণের মামলার রায় দিতে গিয়ে একথা জানায় বম্বে হাইকোর্ট।
মুম্বই, ২১ জানুয়ারি : বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে না রাখা প্রত্যেক ক্ষেত্রে ধর্ষণ বলে ধরে নেওয়া হবে না। শনিবার একটি ধর্ষণের মামলার রায় দিতে গিয়ে একথা জানায় বম্বে হাইকোর্ট। পাশাপাশি বিচারপতি মৃদুলা ভটকল এও বলেন, শিক্ষিত মহিলা যাকা বিয়ের আগে উভয়ের মিলিত সহমতে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করে তাদেরকেই নিজের সিদ্ধান্তের দায়ও নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ব্রেক আপের পর এক তরুণী বয়ফ্রেন্ডের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোদ দায়ের করেন। বম্বে হাইকোর্ট অভিযুক্ত বছর ২১-এর তরুণের প্রাক গ্রেফতারি জামিন মঞ্জুর করে।
বিচারপতি বলেন, "এই সব ক্ষেত্রে প্রলোভন, বিশ্বাসভঙ্গ শব্দগুলিকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে কিছু রেকর্ড থাকতে হবে যার ফলে বোঝা যায় মহিলাকে এহেনভাবে প্রলোভন দেখানো হয়েছিল যে তিনি যৌন সম্পর্ক গড়তে রাজি হন। বিয়ের প্রতিশ্রুতি এমন প্রলোভন নয় যার ফলে অনিচ্ছাকৃত যৌনমিলনে রাজি হয় মহিলা।"
শুধু তাই নয়, বিচারপতি বলেন, "বছরের পর বছর ধরে সমাজের রীতি হিসাবে তুলে ধরা হয় বিয়ের আগে মেয়েদের কুমারীত্ব সুরক্ষিত রাখা তাদের দায়িত্ব। যদিও আজকালকার শহুরে তরুণ সমাজ অন্য আবহে বড় হচ্ছে। যৌনক্রিয়া সম্পর্কে তারা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। সমাজ মুক্ত চিন্তাধারার হওয়ার চেষ্টা করছে, অথচ নীতির প্রশ্নে বিয়ের আগে যৌনমিলন নিয়ে সেই পুরনো রীতিকেই আঁকড়ে থাকছে।"
আজকালকার মেয়েরা যখন প্রেমে পড়েন তখন তাদের কাছে যৌনমিলন তাদের সঙ্গীর মতো তাদের কাছেও একটা বিকল্প মাত্র, গ্রহণ করাও যেতে পারে আবার এড়িয়ে যাওয়াও যেতে পারে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তারা নিয়ে নেয় কিন্তু পরে সেই সিদ্ধান্তের দায় গ্রহণ করতে অস্বীকার করে।
আদালত আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলে, সম্পর্ক শেষ হলেই প্রাক্তন সঙ্গীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ আনা ক্রমশ ট্রেন্ড হয়ে উঠছে। শিক্ষিত ও প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা যখন বিয়ের আগে পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে যৌনমিলন করেন তখন তিনি তার পরবর্তী পরিণতি জেনেশুনেই তা করে। তাহলে পরবর্তীকালে কেন ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয় প্রশ্ন তোলেন মহিলা বিচারপতি।