
কোভিড–১৯ থেকে বাঁচতে নিয়মিত খান এই খাবারগুলি
করোনা ভাইরাস আতঙ্ক বিশ্বজুড়ে। ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৯৬,৫০০ জন। এই ভাইরাসে সংক্রমণ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিন হাজারেও বেশি মানুষের। এই সংক্রমক রোগের প্রতিষেধক এখনও তৈরি না হলেও চিকিৎসক–বিশেষজ্ঞরা সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বারে বারে হাত ধোওয়া ও কোভিড–১৯–এর ঝুঁকি রয়েছে এমন জায়গা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা। যদিও চিকিৎসকদের মতে কিছু সংক্রমক রোধ করতে পারে এমন কিছু খাবার খেলেও এই ভাইরাস থেকে কিছুটা হলেও নিরাপদে থাকা যায়। স্বাস্ব্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে পেঁয়াজ, রসুন, ডিম ও হলুদ রোজকার খাবারে রাখুন। যদিও তাঁরা আশ্বস্ত করছেন না যে এগুলো খেলেই ভাইরাস সংক্রমণ করবে না কিন্তু আপনার শরীরকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তুলবে। করোনা ভাইরাসের প্রকোপের ফলে বিশ্বজুড়ে অধিকাংশ মানুষ সংক্রমণ রুখতে ওষুধ খাচ্ছেন, নিজেদের একঘরে করে দিয়েছেন এবং আক্রান্ত দেশে যাওয়ার সফর বাতিল করছেন।
তবে এই ভাইরাসকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনও উপায় নেই কিন্তু নিজের দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুললে এই সংক্রমণ সহজে আপনাকে ছুঁতে পারবে না। যা আপনার রোজকার খাদ্যের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে।

পেঁয়াজ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন বেরিস, রসুন ও পেঁয়াজ শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে খুবই জরুরি। এই খাদ্যগুলি ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে এবং আপনাকে সুস্থ রাখে। এই তিন খাবারেই রয়েছে ভিটামিন সি, বি ও ই, যা আপনাকে রোগের ঝুঁকি থেকে দূরে রাখে ও সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করে। এগুলি ছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ খাবার হল বেগুন, কুমড়ো ও গাজর। এই খাবারগুলি দিনে অন্তত একবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।

হলুদ
ফুড ব্লগার লি বলেন, ‘এখন আমরা অক্সিডেটিভ ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, এখন প্রদাহ নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর দেওয়া উচিত।' শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার কথা যখন আসে তখন অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি সমৃদ্ধ খাবার, যা সবজি ও ফলের মধ্যে পাওয়া যায় তা খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। হলুদের মধ্যে আছে সেই অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, যা আপনার শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক দিন অন্তত পাঁচটি ফল খান, যাতে ইনফ্লেমেটরির বিরুদ্ধে লড়তে পারেন এবং খাবারে হলুদকে রাখুন তাহলে তা অতিরিক্ত সাহায্য করবে।

ডিম
ডিমকে সুষম খাদ্য বলা হয়। তার কারণ এটি খুবই পুষ্টিকর ও এর মধ্যে রয়েছে ২০টিরও বেশি জরুরি ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। এছাড়াও ডিমে রয়েছে উন্নত মানের প্রোটিন, ভালো ফ্যাট ও ভিটামিন এ ও ই। ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ অন্য খাবারের মধ্যে পেলেও সেলেনিয়াম ডিম ছাড়া আর কোথাও পাবে না। অত্যন্ত ক্ষমতাশালী এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডিম ছাড়াও সেলেনিয়াম পাওয়া যায় ব্রাজিলের বাদামে। একটা ডিমই আপনার প্রতিদিনের জীবনে সেলেনিয়ামের অভাব পূরণ করবে। এছাড়াও বন্ধ্যাত্ব, পেশির দূর্বলতা, চুল পড়া ও মানসিক অবসাদ দূর করে। সেলেনিয়াম দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতাকে চাঙ্গা করে দেয়।

মাশরুম
পূর্বের দেশগুলিতে এই মাশরুমকে হাজার বছর ধরে দারুণ ক্ষমতাশীল খাবার হিসাবে ধরা হয়। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে মাশরুমের জুড়ি মেলা ভার। এই বিস্ময়কর ছত্রাক চিকিৎসার উপাদান হিসাবে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং সেল-রিজেনারেটিং এজেন্ট হিসাবে কাজ করে।

আদা
ফ্লু থেকে রক্ষা পেতে এই আদা দারুণ উপকারি। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, যা ফ্লু থেকে দূরে রাখে আপনার শরীরকে।

রসুন
শরীরের প্রাকৃতিক রক্ষা ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য প্রতিদিন রসুন খান। কারণ রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন, যা শ্বেত রক্ত কণিকার অসুস্থতার প্রতিক্রিয়া বাড়ানোর জন্য পরিচিত।

গ্রিন টি
বর্তমান সময়ে অনেকেই এখন স্বাস্থ্য সচেতন হতে গ্রিন টি সেবন করছেন। তবে এটি দারুণ কাজ দেয় শরীরকে ভাইরাস মুক্ত রাখতে। কারণ গ্রিন টিতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, যা মনে করা হয় যে এটি শরীরে ভাইরাস ছড়ানোর এনজাইমগুলির উৎপাদন আটকাতে সহায়তা করে। এছাড়াও এই চায়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আপনি কোনও জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হলে তা জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই গ্রিন টিতে আছে মেটাবলিজম যা আপনাকে সুস্থ ও মেদহীন শরীর পেতেও সাহায্য করে।

দারচিনি
সুগন্ধযুক্ত এই মশলা আপনার খাবারকে সুস্বাদু করে তোলার পাশাপাশি আপনাকে জীবাণু থেকেও দূরে রাখে। কারণ এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিভাইরাল উপাদান। যা রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ভাইরাল জ্বর থেকে আপনার শরীরকে দূরে রাখে। একটা দারচিনি সারারাত জলে ভিজিয়ে তা পরেরদিন সকালে ওই জলটা খেয়ে নিন। এমনকী নিজের চা বা কফিতেও দারচিনি গুঁড়ো মেশাতে পারেন।