বয়সে নবীন হলেও বঙ্গ সংষ্কৃতিকে প্রবাসে তুলে ধরার অনন্য উদ্যোগ 'ইশা' দুর্গাপুজো কমিটির
'ইশা' (ইস্ট ইন্ডিয়ান স্যোশাল এইচএসআর অ্যাসোসিয়েশন)-র দুর্গাপুজো আগামিদিনে বেঙ্গালুরুর অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে।
সবে মাত্র মাতৃবন্দনার দ্বিতীয় বছরে পদার্পন করছে 'ইশা' (ইস্ট ইন্ডিয়ান স্যোশাল এইচএসআর অ্যাসোসিয়েশন) -র দুর্গাপুজো। তবে তার মধ্যেই সম্ভাবনার এক নবদিগন্ত উন্মোচিত করেছে এই সংস্থা। শুধু দুর্গাপুজোই নয়, বছরের নানা সময়ে নানাবিধ অনুষ্ঠানই সাড়ম্বরে পালন করছে এই সংগঠন। যদি বলা হয় এটা শুধুমাত্র বাঙালিদের সংগঠন তাহলে কিন্তু ভুল হবে। কারণ বেঙ্গালুরুর বুকে বিভিন্ন রাজ্যের প্রবাসীদের নিয়েই এই সংগঠন চলছে। তারই একটি ক্ষুদ্রতম প্রয়াস দুর্গাপুজো ও নবরাত্রির আয়োজন।
[আরও পড়ুন:মাতৃবন্দনায় ১১তম বছরে পা রাখল বেঙ্গালুরুর কগ্গদাসপুরা বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গাপুজো ]
কতিপয় লোকজনকে নিয়ে শুরু হয়ে এই সংস্থা ধীরে ধীরে বহরে বাড়ছে। ইতিমধ্যে সদস্য সংখ্যা দেড়শোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। বাঙালি ছাড়া দক্ষিণ ভারতীয়রা তো রয়েইছেন, পাশাপাশি ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহারের মানুষও এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ফলে একদিকে যেমন দুর্গাপুজোর আনন্দ রয়েছে, তেমনই নবরাত্রিও সাড়ম্বরে পালিত হয় এখানে। এবং তা নিয়ে সংগঠনের সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয়রা উচ্ছ্বাসে কম যান না।
প্রবাসের পুজো হলেই বেশিরভাগ পুজো উদ্যোক্তারা কলকাতার নামী শিল্পীদের নিয়ে এসে অনুষ্ঠান করান। সেই দৌড়ে শামিল হয়নি এইশা। সংস্থার সভাপতি বাবুন ঘোষ জানাচ্ছেন, কলকাতার প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের পিছনে না ছুটে তাঁরা গ্রামবাংলার বঞ্চিত, দৈন্য শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। গ্রামবাংলার বিভিন্ন শিল্প ও সংষ্কৃতিকে তুলে ধরার চেষ্টায় তাঁরা ব্রতী হয়েছেন। সেজন্য বাংলার পট শিল্প থেকে শুরু করে ছৌ নাচ- এসবই গতবছরের মতো এবারও থাকছে এইশা-র পুজোয়। এবং এটাই এখানকার আকর্ষণ।
গতবছরে প্রথম এখানে দুর্গাপুজো শুরু হয়। বাবুন ঘোষের মতো কতিপয় কয়েকজনের ভাবনারই ফসল এই মাতৃবন্দনার আয়োজন। বলা ভালো পূর্ব ভারতের সংষ্কৃতির এক খণ্ডচিত্র এখানকার পুজো। সকলে মিলে একযোগে পুজোর আয়োজন, হইহুল্লোড়, সন্ধ্যারতি, জমিয়ে খাওয়া, সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান সব রয়েছে।
এবছর দ্বিতীয় বর্ষেও আয়োজন কিছু কম নেই। ছৌ নাচ তো রয়েইছে। পাশাপাশি প্রতিদিন সন্ধ্যায় নাচ, গান, নাটক সহ অনুষ্ঠানের পাশাপাশি নবরাত্রি উদযাপনে 'ডান্ডিয়া নাইটস' অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া হস্তশিল্পের ওয়ার্কশপ-এর স্টল বসবে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শিল্পীদের নিয়ে এসে তাদের জায়গা দিয়ে ওয়ার্কশপের বন্দোবস্ত করা হবে। এবং এটাও ইশা-র পুজোর অন্যতম আকর্ষণ। সবমিলিয়ে বাংলার সংষ্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা এখানকার পুজোয় এলেই আপনার চোখে পড়বে।