লকডাউনের কারণে কেরল সহ দেশের বহু রাজ্যে কমেছে অপরাধের সংখ্যা
লকডাউনের কারণে কেরল সহ দেশের বহু রাজ্যে কমেছে অপরাধের সংখ্যা
করোনা ভাইরাস মহামারি রোধ করার জন্য ৩৭ দিন হতে চলল গোটা দেশ লকডাউনের আওতায় রয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৩ হাজারের বেশিজন এই সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং হাজার জনের মৃত্যুও হয়েছে। এই মহামারি মানুষের জীবনের ওপর সাংঘাতিক প্রভাব ফেলেছে, দেশের ইতিহাসে এই প্রথম যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ঘরের মধ্যে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে অনিচ্ছাকৃত এই লকডাউনের ফলে দেশজুড়ে অন্যান্য ঘটনায় ও পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে গিয়েছে। দেশজুড়ে তার রেকর্ড উপলব্ধ না থাকলেও পুলিশ কর্মী ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে এই তথ্যই পাওয়া গিয়েছে।
বহু অপরাধ কমেছে কেরলে
কেরলের এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন যে ২৫ মার্চ থেকে ১৪ মার্চের মধ্যে লকডাউনের প্রথম পর্যায়ে রাজ্যে খুন, আত্মহত্যা, অস্বাভাবিক মৃত্যু ও পথ দুর্ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে, যেখানে গত বছর এই একই সময়ে চিত্রটা অন্য ছিল। তিরুবন্তপুরমে রাজ্যের ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর ডিএসপি করুনাকরণ বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে গত বছরের তুলনায় এ বছরের ২৫ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে খুনের ঘটনা ৪০ শতাংশ কমে গিয়েছে। একইভাবে ধর্ষণের ঘটনা কমে গিয়েছে ৭০ শতাংশ ও মহিলা ও শিশুদের ওপর হিংসার ঘটনা কমেছে ১০০ শতাংশ। স্বাভাবিকভাবে এই কম রাস্তায় কম যান চলাচল করছে তাই পথ দুর্ঘটনার সংখ্যাও কমে গিয়েছে।' পুলিশের মতে, এখনও পর্যন্ত এ বছর রাজ্যে আটটি খুন রয়েছে, যা গত বছর সংখ্যা টা ছিল ১৩। এ বছর এখনও পর্যন্ত নিখোঁজের সংখ্যাটা ১৩২ জন যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৮৫১। আত্মহত্যার সংখ্যাও গত বছর ৪৪৫টির তুলনায় এ বছর ১৯২ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর হারও এ বছর ৬৩০টি যা গত বছর ২১ দিনে সময়কালে ছিল ১০৫২টি।
পথ দুর্ঘটনা কমেছে কেরলে
কেরলে বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যা ও রাস্তায় অতিরিক্ত পরিমাণে ভিড় হওয়ার জন্য এই রাজ্যে পথ দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনায় মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হয়, কিন্তু লকডাউনের কারণে সেই সংখ্যাটা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। পুলিশের তথ্য অনুসারে, ২১ দিনের মদ্যে মাত্র ১০৫টি দুর্ঘটনার রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে যেটি গত বছর সংখ্যাটা ছিল ১৭৮৭টি। এ বছর পথ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে ১৩ জনের যেটা গত বছর ছিল ১৮৫ জন। পুলিশ কর্তাদের মতে, ‘সব দিক দিয়ে খতিয়ে দেখার পর মনে হচ্ছে কেরলে অপরাধ অনেকটাই লকডাউনের কারণে কমে গিয়েছে। আমার মনে হয় পরিবারগুলির বন্ধন এই সময় আরও দৃঢ় হয়েছে যে কারণে আমরা আত্মহত্যার হার অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। সরকারও মানসিক হেল্পলাইনের মাধ্যমে সব ধরনের চাপ কমানোর চেষ্টা করছে।'
অসম, মণিপুর ও তেলেঙ্গানাতেও অপরাধ কম হয়ে গিয়েছে
অসমের মতো বেশ কিছু রাজ্যের পুলিশ মনে করছে লকডাউনের সঙ্গে কার্ফুর মতো পরিস্থিতি হওয়ার কারণে, বিশেষ করে রাতের সময় অপরাধ অনেক কমে গিয়েছি। অসমের এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন যে এখন রাতের বেলা কেউ এমনিতেই বেড়োচ্ছেন না। আর এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন তাঁদের রাজ্য উচ্চ অপরাধপ্রবণ। কিন্তু এখন লকডাউনের সময় অপরাধ অনেক কম হচ্ছে এ রাজ্যে। মণিপুর ও তেলেঙ্গানাতেও একই দৃশ্য ধরা পড়েছে। এই দুই রাজ্যেও অপরাধের সংখ্যা এই লকডাউনের মরশুমে এখন অনেক কম হয়ে গিয়েছে।
৩৭ দিন পর খুলল পেট্রাপোল, সীমান্ত বাণিজ্য ঘিরে উঁকি দিচ্ছে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা