এক দিনে রেকর্ড বৃষ্টি ম্যাঙ্গালুরুতে, কর্ণাটকের উপকৃলে বন্যা পরিস্থিতি
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কর্নাটক রাজ্য বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন। ইতিমধ্যেই এই বন্যায় এক শিশু-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
গত তিন দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাতে কর্ণাটকের উপকূলবর্তী শহরগুলির বহু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ব্য়াহত হয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। প্রশাসন থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বুধ এবং বৃহস্পতিবার আক্রান্ত এলাকাগুলির স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় জেলাগুলির মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দক্ষিণ কানাড়া এবং উদুপি-র। এরমধ্যে আজ সকাল ৮ টা পর্যন্ত ম্যাঙ্গালুরুর পানাম্বুরে রেকর্ড ৩৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ছাপিয়ে গেছে আগের সব রেকর্ড। এর আগে ১৯৮২ সালে ৩৩০.৮ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছিল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ম্যাঙ্গীলুরু ও উডুপি জেলার কিছু অংশে ৩৪০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই দুই জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাতে বন্যা হয়েছে। তাতে এখনও পর্যন্ত প্রবল বর্ষণ ও বন্যার প্রকোপে মোট তিনজনের প্রাণ হানির খবর মিলেছে। তার মধ্যে একজন স্কুলছাত্রীও আছে। জানা গিয়েছে উডুপির পাদুবিদ্রি এলাকায় নালার জল উপচে এই ছাত্রীকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, ম্যাঙ্গালুরুর এক কম্পাউন্ড ওয়ালের ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক বছর ষাটেকের মহিলার দেহ । বুধবার উদুপির কর্কল তালুকে বুধবার আরেক মহিলা নিজের বাড়িতেই তড়িতাহত হয়ে মারা গিয়েছেন।
দুর্যোগ এখনও কাটেনি। আবহাওয়া দপ্তর আজ উপকূলীয় অঞ্চলে আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। এ অবস্থায় দক্ষিণ কানাড়া এবং উদুপির স্কুল ও কলেজ আজ ও আগামীকাল বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা বন্দী হয়ে পড়েছিল। শেষে দমকল বিভাগের আধিকারিকরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। তারপর রাবারের ডিঙিতে করে তাদের প্রত্যেককে বাড়ি পোঁছে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার ম্যাঙ্গালুরুর বেশ কিছু বাজার এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। বাইক্যাম্পাডি শিল্প এলাকার বেশিরভাগ কারখানাগুলিতেও জল ঢুকে গিয়েছে।
সরকার থেকে ইতিমধ্যেই ত্রাণ পরিচালনার জন্য জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি দলকে প্লাবিত এলাকাগুলিতে পাঠিয়েছে। মঙ্গলবারই ম্যাঙ্গালুরুর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে গিয়ে তারা উদ্ধার ও ত্রাণ বিতড়নের কাজ শুরু করেছে। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর এইচডি কুমারস্বামী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। জানা গিয়েছে, তিনি ওই দুই জেলার সরকারি আধিকারিকদের ত্রাণ ও উদ্ধারের প্রয়োজনে উপকূল রক্ষা বাহিনীর সহায়তা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও জেলাদুটির ক্ষতির মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে প্রাণহানি প্রতিরোধ করার ওপরে। ম্যাঙ্গালুরু সিটি কর্পোরেশন ২৪ ঘন্টার মনসুন হেল্পলাইন সেন্টার চালু করেছে। স্থানীয়দের যোগাযোগ করার জন্য জরুরী নম্বর হল, ০৮২৪-২২২০৩০৬