চালক পলাতক, হাইওয়েতে লুট হচ্ছে পণ্য, লকডাউনে বিভিন্ন সমস্যায় ট্রাক মালিকরা
চালক পলাতক, হাইওয়েতে লুট হচ্ছে পণ্য, লকডাউনে বিভিন্ন সমস্যায় ট্রাক মালিকরা
রবিবারই কেন্দ্র থেকে এই লকডাউন সময়কালে যাবতীয় জরুরি এবং অ–জরুরি পণ্য পরিবহনের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বহু ট্রাককেই রাজ্যের সীমান্তগুলিতে আটকে সমস্যার সৃষ্টি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। দিল্লি ও মুম্বই সহ উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলি থেকে শ্রমিকরা ফিরে যাওয়ার ফলে নতুন করে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন সড়ক পরিবহনকারীরা।
সমস্যা বাড়ছে ট্রাক মালিকদের
ট্রাক মালিকরা জানিয়েছেন, আন্তঃরাজ্য সীমান্তে ট্রাক ফেলে রেখে অধিকাংশ চালকই তাঁদের আদি শহর ও গ্রামে পালিয়ে গিয়েছেন। কেউ কেউ তো হাইওয়েতেই কোটি টাকার পণ্যসহ ট্রাক ফেলে রেখে পালিয়েছেন, এমনকী মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ সীমান্তেও ট্রাক লুটের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন ট্রাক মালিকরা। এর সঙ্গে ট্রাক মালিকরা এও যুক্ত করেছেন যে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র ও পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তের প্রবেশ পথ ও হাইওয়েতে যানজটের মুখোমুখি হচ্ছে ট্রাক। অল ইন্ডিয়া মটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেসের সভাপতি কুলতরণ সিং আটওয়াল বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর এসেছে যে মহারাষ্ট্রে বেশ কিছু ফল ও সবজি লুট হয়েছে এবং চাল ও অন্যান্য পণ্য লুট করা হয়েচে পাঞ্জাবের কিছু গ্রামে। আমরা আমাদের খালি ট্রাকে অভিবাসী শ্রমিকদের বহন করে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি কর্তৃপক্ষকে কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনও সাড়া পাইনি।' স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে চালান নিয়ে গণ্ডগোল হওয়ার ফলে ট্রাক চালকদের বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃস্ফূর্ত অভিযোগ দায়ের করেছে।
শ্রমিকের অভাব
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও দিল্লি থেকে অধিকাংশ অভিবাসী শ্রমিক নিজের নিজের গ্রামে রওনা দিয়েছেন। আটওয়াল বলেন, ‘আমরা সরকারকে প্রয়োজনীয় পণ্য ও জিনিস বহনকারী ট্রাকের পথ সাফ করার জন্য অনুরোধ করছি অন্যথায় এটি আগামী দিনে বড় কেন্দ্রগুলিতে সরবরাহের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সরকার আদেশ দিয়েছে তবে বর্তমান পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা।' তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৫০ শতাংশ ট্রাক চালক তাঁদের গ্রামে পালিয়ে গিয়েছেন।' এখানে উল্লেখ্য যে প্রধান প্রধান শহরগুলিতে গণ অভিবাসী শ্রমিকরা তাঁদের গ্রামে চলে যাওয়ার ফলে এই কেন্দ্রগুলিতে শ্রমিকের অভাব হয়ে গিয়েছে, যা ট্রাক পরিচালনা ও মুদির দোকানে সমস্যার সৃষ্টি করছে। পাটনার এক পরিবহন সংস্থার মালিক জানিয়েছেন যে দু'টি ট্রাক ভর্তি ওষুধ গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছে কিন্তু ট্রাক খালি করার মতো শ্রমিক সেখানে নেই। জাতীয় রাজধানী দিল্লির মতো জায়গায় বেশ কিছু মুদির দোকানে ময়দা, আটা, বিস্কুট, প্যাকেটজাত স্ন্যাকস খাবারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
সরবরাহ নেই অনলাইন গ্রসারিতেও
অন্যদিকে, বিগ বাস্কেট ও গ্রুফার্সের মতো অনলাইন গ্রসারি সংস্থাও ঘাটতির মুখে। তাদের কাছেও নেই পুরো পণ্য বা প্রয়োজনীয় জিনিস। যার জন্য তারা ডেলিভারি আপাতত বন্ধ করে রেখেছে। এর পাশাপাশি শহরের রেস্তোরা ও ফুড ডেলিভারি সংস্থাগুলিও কাটলারি ও প্যাকেজিং পণ্য পাচ্ছে না, যা ডেলিভারির জন্য প্রয়োজন। যদিও এখনও তার দরকার নেই।