পরপর সফল পরীক্ষণ, লাদাখে মিসাইল মোতায়েন! গত ২ সপ্তাহ ধরে চিনকে কোন বার্তা ভারতের
গত দুই সপ্তাহ ধরে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করে চলেছে ডিআরডিও। এই মিসাইলগুলির পরপর সফল পরীক্ষণের ফলে ভারতের মিসাইল সিস্টেম আরও মজবুত হয়ে যাবে। এরই মাঝে ভারতের দূরপাল্লা প্রতিরক্ষা মজবুত করতে ভারতীয় সেনা সাবসোনিক মিসাইল নির্ভয়কে নিয়ে গেল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায়৷ ভূমি থেকে ভূমি প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে এই মিসাইলটি৷ সূত্রের খবর অনুযায়ী খুব কম সংখ্যকই নির্ভয় মিসাইল এই মুহূর্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷
শৌর্য ব্যালিস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা
এদিকে ৩ অক্টোবর পারমাণবিক সক্ষম এবং সারফেস টু সারফেস শৌর্য ব্যালিস্টিক মিসাইলের নব সংস্করণ সফলভাবে পরীক্ষা করে ভারত। সূত্রে খবর, ৮০০ কিলোমিটার দূরে থাকা লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে পারবে শৌর্যের এই নবসংস্করণ। শৌর্য ব্যালিস্টিকের নব সংস্করণ মিশাইলটি পূর্বের তুলনায় হালকা এবং ব্য়বহারের ক্ষেত্রেও সহজ। মিসাইলটি শেষ পর্যায়ে লক্ষ্যবস্তুর কাছাকাছি এলে হাইপারসোনিক গতিতে আঘাত করে।
স্মার্ট-এর সফল পরীক্ষা
এরপর ৫ অক্টোবর সুপারসনিক মিসাইল অ্যাসিস্টেড রিলিজ অফ টর্পেডো (স্মার্ট)-এর সফল পরীক্ষা করা হয়। ওড়িশা উপকূলের হুইলার আইল্যান্ড থেকে একটি ক্ষেপনাস্ত্রকে টর্পেডো সহ উৎক্ষেপণ করা হয়। শত্রুপক্ষের ডুবোজাহাজ সহজেই ধ্বংস করতে পারবে এটি। ডুবোজাহাজবিরোধী যুদ্ধের জন্য এটি একটি বড় যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সাধারণ টর্পেডোর থেকে এটি অনেক উন্নত৷
সুপারসোনিক ব্রহ্মোস ক্ষেপাণাস্ত্রের পরীক্ষা করে ভারত
এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর বর্ধিত পরিসীমার সুপারসোনিক ব্রহ্মোস ক্ষেপাণাস্ত্র সফলভাবে পরীক্ষা করে ভারত৷ এই নতুন মিসাইলটি ৪০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আঘাত হানতে পারে৷ ডিআরডিও-র পিডে-১০ প্রকল্পের আওতায় এই পরীক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্রটির উৎক্ষেপণ করা হয়৷ এই প্রজেক্টের আওতায় দেশীয় বুস্টার দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়৷ এই মিসাইলটি ভূমিগত লঞ্চপ্যাড থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এটি সাবমেরিন, জাহাজ, ফাইটার জেটস বা ভূমি থেকে উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে।
পৃথ্বী -২ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ
এর আগে, ২৪ সেপ্টেম্বর ওড়িশার একটি ঘাঁটি থেকে দেশীয় প্রযুক্তিগত ভূমি থেকে ভূমি পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম পৃথ্বী -২ ক্ষেপণাস্ত্রের সফলভাবে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে ভারত। অত্যাধুনিক এই ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য চলমান ট্র্যাজেক্টরি ব্যবহার করে৷
অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা
এর একদিন আগে, অর্থাৎ, ২৩ সেপ্টেম্বর উন্নত লেজার-গাইডেড অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রটি মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরের একটি ফায়ারিং রেঞ্জে সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়। আহমেদনগরের আর্মার্ড কর্পস সেন্টার অ্যান্ড স্কুল-এর কেকে রেঞ্জে এমবিটি অর্জুন ট্যাঙ্কের কাছ থেকে পরীক্ষা করা হয়েছিল এটি। চার কিলোমিটার দূরে থাকা লক্ষ্যবস্তুগুলিকে নির্ভুল ভাবে আঘাত করেছিল মিসাইলটি। লাদাখে চিনা ট্যাঙ্কের বিরুদ্ধে এই প্রযুক্তি কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বেজিংকে বার্তা দিল্লির
এই পরপর মিসাইলের পরীক্ষণে একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারত, যে যেকোনও পরিস্থিতির জন্যে তারা তৈরি। আগ্রাসন লাদাখে হোক বা সাগরে। ভারতীয় নৌসেনা থেকে বায়ুসেনা সবার ক্ষেত্রেই নতুন প্রযুক্তি সংযোজন ঘটেছে বিগত কয়েক দিনের ব্যবধানে। তাছাড়া চিনের আগ্রাসনের কডা জবাব দিতে যে ভারত প্রস্তুত, সেই বার্তাও বেজিংকে পাঠিয়েছে দিল্লি।
চিন সীমান্ত পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ, ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে ভারত-নেপাল সীমান্ত বিতর্ক