পণের দাবি, তিন বছর পর শৌচাগার থেকে বধূকে উদ্ধার করল পুলিশ
দ্বিতীয় 'অপরাধ' হল প্রথম সন্তানই মেয়ে।
এ কারণে এক বধূকে শৌচাগারে বন্দি হয়ে থাকতে হল টানা তিন বছর। নিজের তিন বছরের মেয়েও মাকে দেখে চিনতে পারল না। ঘটনাটি ঘটেছে দ্বারভাঙ্গা শহরের রামবাগে।
পুলিশ জানায়, ২০১০ সালে ২৫ বছর বয়সী ওই মহিলার বিবাহ হয়েছিল দ্বারভাঙ্গার বাসিন্দা প্রভাতকুমার সিংয়ের সঙ্গে। বিয়ের সময় টাকাপয়সা, গয়না ইত্যাদি দেওয়া হলেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আরও টাকা চেয়ে অত্যাচার শুরু করে। দাবি না মানায় খেতে দেওয়া হত না তাঁকে। ২০১১ সালের মাঝামাঝি তিনি একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন। এতে অবস্থা আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। তাঁকে বাড়ির শৌচাগারে আটকে রাখা হয়। তিন-চারদিন অন্তর একবেলা করে খেতে দেওয়া হত। এ ভাবে তিন বছর কেটে যায়।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন সময় ওই মহিলার বাপের বাড়ির লোকজন খোঁজ নিতে আসেন। প্রতিবারই কোনও না কোনও অজুহাতে তাঁদের ভাগিয়ে দেওয়া হত। শেষ পর্যন্ত মরিয়া হয়ে মেয়েটির বাবা শ্যামসুন্দর সিং দ্বারভাঙ্গা জেলার এসএসপি-র সঙ্গে দেখা করেন। সব ঘটনা বলেন। অভিযোগ পেয়ে তৎপর হয় পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে বাড়িতে হানা দেয় পুলিশবাহিনী। প্রথমে ওই বধূর স্বামী কিছু বলতে না চাইলেও পুলিশের ধমক খেয়ে সব ফাঁস করে দেন।
শৌচাগারের দরজা খুলে পুলিশ অবাক হয়ে যায়। ছিন্ন কাপড়, শূন্য চাউনি। গত তিন বছর একটিই শাড়িতে লজ্জা নিবারণ করতে হয়েছে ওই মহিলাকে। মাথার চুল জট পাকিয়ে ময়লায় থিকথিক করছে। হাত-পায়ে বড় বড় নখ। শরীর থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। বাইরে আনার পর তিনি আলোর দিকে ভালো করে তাকাতেও পারছিলেন না। তিন বছরের শিশুকন্যা মাকে দেখে চিনতেই পারেনি। আপাতত ওই মহিলার চিকিৎসা চলছে সরকারি হাসপাতালে।
স্বামী প্রভাতকুমার সিং, শ্বশুর ধীরেন্দ্র সিং ও শাশুড়ি ইন্দ্রা সিংকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।