'আমি কি মরে যাব!' কেন এমন প্রশ্ন তুলে মোদী সরকারকে খোঁচা দিলেন কেসিআর
'আমারই বার্থ সার্টিফিকেট নেই, আমার বাবার টা কী দেব'!
মুখ্যমন্ত্রীই জানাচ্ছেন যে তাঁর নিজেরই বার্থ সার্টিফিকেট নেই। এরপর তাঁর পক্ষে তাঁর পরিবারের সকলের জন্মবৃত্তান্ত পেশ করা মুশকিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। কথা হচ্ছে, তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাওকে নিয়ে। তিনি এবার এনপিআর নিয়ে সরব হয়েই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছেন।
তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য
তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বলেছেন, ' যখন আমার নিজেরই বার্থ সার্টিফিকেট নেই, আমি কীভাবে আমার বাবার বার্থ সার্টিফিকেট পেশ করব.. ' কোনও জনসভা নয়, তেলাঙ্গানার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এমন কথা বলেছেন সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। কেন্দ্রের আনা এনপিআর নিয়ে তিনি এমনই মন্তব্য করেছেন।
জন্মবৃত্তান্ত কেন দেওয়া যাবে না , তা খোলসা করেছেন রাও
তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, তিনি একটি গ্রামে জন্মেছিলেন। সেখানে সেই সময় কোনও হাসপাতাল ছিলনা। ফলে তাঁকে গ্রামের বর্ষীয়ানদের দেওয়া 'জন্মনামা' নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। যে জন্মনামায় কোনও 'অফিশিয়াল সিল' নেই। তাঁর দাবি, '..আমিই যখন বার্থসার্টিফিকেট দিতে পারছি না, তখন দলিত, উপজাতি, গরিবরা কীভাবে দেবেন?'
কোষ্ঠীই বার্থ সার্টিফিকেট?
তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সেই যুগে কোষ্ঠীকেই বার্থ সার্টিফিকেট হিসাবে দেখা হত। তিনি বলেন, 'আমার জন্মের সময়ের গ্রহ, নক্ষত্রের নথি আমার রয়েছে। ..' এইভাবেই কেন্দ্রের এনপিআরকে খোঁচা দিয়ে বক্তব্য পেশ করেন কেসিআর। কটাক্ষের সুরে বিঁধতে ছাড়েননি মোদী সরকারের জনগণনা সংক্রান্ত এই পদক্ষেপকে।
'আমি কি মরে যাব তাহলে..?'
এনপিআর এর নথি দেখানোর প্রসঙ্গ তুলে, তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, '.. আমি কি মরে যাব তাহলে, যদি আমাকে আমার বাবার নথি দেখাতে বলা হবে.. যখন আমার নিজেরটাই নেই। .. ' এভাবেই তিনি কেন্দ্রের এনপিআর-এর পদক্ষেপকে আক্রমণ করেন।
'একটি বিশেষ ধর্মকে বাদ দিয়ে..'
কেসিআর একের পর এক শক্তিশেলে এনপিআর নিয়ে বেঁধেন কেন্দ্রকে। তিনি বলেন, 'সংবিধানের প্রথম বাক্যেই আছে, কোনও ধর্ম, জাতি, বর্ণের বাইরে.. কিন্তু যদি আমাদের দেশে কোনও একটি সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে দেওয়ার কথা হয়, তাহলে তা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা একমত হবনা। শুধু আমরাই নই, কোনও সভ্যসমাজ মেনে নেবে না। '
বিহারের পথে তেলাঙ্গানা!
তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর জানিয়েছেন, এনপিআর আর এনআরসি নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হবে। তারপর প্রস্তাব পেশ ও পাশ হবে। ফলে বিহারের মতো নাগরিকত্ব ইস্যুতে আরও একটি সরকার যে মোদী বিরোধিতায় নামছে , তা বলাই বাহুল্য।
আঞ্চলিক দল ও কেসিআর
এর আগে , তেলাঙ্গানায় দাপুটের সঙ্গে সরকার দখল করেছে কেসিআর-ওর দল টিআরএস। এরপরই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লোকসভা ভোটের আগে দেখা করেন। সেই বৈঠকে আঞ্চলিক শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে দেশের মাটিতে আরও প্রাসঙ্গিক করে তোলার বার্তা দেন কেসিআর। যাতে সেই শক্তিই দেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিক পালন করে। আর তারপরই লোকসভার পর থেকে মোদী বিরোধিতায় মুখর হন কেসিআর।
করোনা ভাইরাসে আমেরিকায় মৃত ১৯, নিউ ইয়র্কে জারি জরুরি অবস্থা