মরুঝড়ের পূর্বাভাস! পাইলটকে ধরাশায়ী করতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে গেহলটের বিদ্রোহ
এবার সরাসরি রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী সংঘাত রাজস্থানে। এতদিন ধরে যে জিনিস আমরা বাংলায় দেখে অভ্যস্ত ছিলাম, তাই দেখা যাচ্ছে রাজস্থানে। আর সেই সংঘাত এবার সরাসরি বিদ্রোহে পরিণত হল রাজস্থানে। লক্ষ্য একটাই, সচিন পাইলটের পতন। আর এর জন্য রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে সরাসরি অমান্যের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট।
রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় গেহলট
এদিন রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করতে কংগ্রেসর পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকেন অশোক গেহলট। সেই বৈঠকের পর গেহলট বলেন, 'আমরা সিদ্ধআন্ত নিয়েছি যে রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের দেওয়া অধিবেশন সংক্রান্ত শর্ত মানব না। অধিবেশন ডাকার দায়িত্ব ও অধিকার রয়েছে সরকারের।'
গেহলটের দাবি মেনেও রাজ্যপালের চাল
এর আগে রাজস্থানে অধিবেশন ডাকার গেহলটের দাবি মেনে নিয়ে রাজ্যপাল কয়েক দফা শর্ত আরোপ করেছিলেন। রাজ্যপাল প্রথমে জানিয়ে দেন যে তিনি কোনও ভাবেই এই অধিবেশন ডাকার বিষয়টি নিয়ে টালবাহানা করছিলেন না। যদিও এদিনও সকালে একবার গেহলটের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। ৩১ জুলাই থেকে বসবে এই অধিবেশন। এরপরই সংবিধানের দোহাই দিয়ে রাজ্যপালি জানিয়ে দেন যদি আস্থা ভোটের জন্য এই অধিবেশন ডাকা হয় তবে তা ৩১ জুলাই বসবে না হলে তার জন্য ২১ দিনের নোটিশ দিতে হবে। এতে জোর ধাক্কা খায় কংগ্রেস।
অধিবেশন ডাকা নিয়ে রাজস্থান উত্তাল
দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত সোমবার বিধাসভার অধিবেশন ডাকার বিষয়ে সম্মতি জানান রাজস্থানের রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। অশোক গেহলটের জেদি মনোভাবের কাছে পিছু হটে তাঁর প্রস্তাবে সায় দেন রাজস্থানের রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। আর এর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কংগ্রেসও নিজেদের ঘর গুছিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এই বিষয়ে এদিন সকাল ১০টায় ফের পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকেছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক। তবে রাজ্যপালের কন্ডিশন অ্যাপ্লাইডের লিস্ট দেখে মাথা ঘুরেছে কংগ্রেসের।
রাজ্যপাল নিয়ে মোদীর কাছে সরব গেহলট
এর আগে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট জানান, রাজ্যপালের আচরণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। রাজস্থানে চূড়ান্ত রাজনৈতিক নাটকের মাঝে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেন অশোক গেহলট। এর আগে রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রর কাছে বারংবার অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েও ফল পায়নি কংগ্রেস। এই আবহে মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন গেহলট। এবার সরাসরি মোদীকে ফোন করলেন গেহলট। এই অবস্থায় গেহলট বলেন, 'রাজ্যপাল ফের আমাদের ছয় পাতার প্রেমপত্র পাঠিয়েছিলেন। সেটা নিয়েই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কথা বলি।'
পাইলটের উড়ান আরও কতদিন?
সচিন পাইলট ও ১৮ জন কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে নোটিস পাঠিয়েছিলেন রাজস্থান বিধানসভার স্পিকার। স্পিকারের সেই নোটিসের বিরোধিতা করে রাজস্থান হাইকোর্টে যান প্রাক্তন সচিন পাইলট ও ১৮ জন বিধায়ক। এরপরই সুপ্রিম কোর্টে যান অধ্যক্ষ। তাঁর বক্তব্য, বিধানসভার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না হাইকোর্ট। গতকাল তাঁর আর্জি খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে রাজস্থান হাইকোর্ট। সেই মতো শুক্রবার সকালে শুনানি শুরু হয়। আর তাতে জয় হয় সচিনের।
সচিনকে দল থেকে সরাতে চাইছেন গেহলট
এরপরই সচিনকে দল থেকে সরানোর লক্ষ্যে বিধানসভা অধিবেশন ডাকার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন অশোক গেহলট। কারণ সেখানে আস্থা ভোট হলে হুইপের নির্দেশে পাইলট পন্থীদের অশোক গেহলটকেই ভোট দিতে হবে। আর তা না করলে বা ভাটোভুটি থেকে অনুপস্থিত থাকলে দলবিরোধী কাজের দায়ে তাঁদের বহিষ্কার করার ক্ষমতা থাকবে স্পিকারের হাতে। আর সেই শেষ চালটি নিখুঁত ভাবে দিতে গিয়ে একাধিক বেগ পেতে হচ্ছে গেহলটকে।