ভারতের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে অন্তিম টুইট, হিমাচলের ধসে প্রকৃতির কোলে হারিয়ে গেলেন চিকিৎসক দীপা
হিমাচলের ধসে প্রকৃতির কোলে হারিয়ে গেলেন চিকিৎসক দীপা
টুইট করার কয়েক মিনিট আগেও কি জানতে পেরেছিলেন যে এটাই তাঁর শেষ টুইট হতে চলেছে। রবিবার জয়পুরের ৩৪ বছরের দীপা শর্মা হিমাচল প্রদেশের নাগাস্তি পোস্ট থেকে নিজের ছবি দিয়ে লেখেন, 'ভারতের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে যেখানে নাগরিকদের আসার অনুমতি রয়েছে। এই পয়েন্টের পর ৮০ কিলোমিটার গেলেই তিব্বতের সীমান্ত, যা বেআইনিভাবে দখল করে রেখেছে চিন।’ রবিবার দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিটে এই পোস্টের কয়েক মিনিট পরই পাহাড় থেকে হুড়মুড়িয়ে নেমে আসা ধসে মৃত্যু হয় দীপার।
|
টুইটের কয়েক মিনিট পরই মৃত্যু দীপার
রবিবার গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে, হাসিমুখে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন দীপা। ওইদিনই দুপুর ১টা ২৫ মিনিট নাগাদ হিমাচলের কিন্নরে আচমকাই পাহাড় থেকে নেমে আসে ধস আর তাতেই মৃত্যু হয় ৯ জন পর্যটকের এবং তিনজন আহত হন। এঁদের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। এই পর্যটকদের চিটকুলা থেকে সাংলাতে নিয়ে আসা হয়েছিল।
সেতু ভেঙে পড়ে ধসে
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বৃষ্টিতে একাধিক ধসে সেতু ভেঙে পড়ার কারণে বাস্তেরির কাছে সাংলা-চিটকুল রোড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এই ধসের নাটকীয় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেট দুনিয়াতে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে পাহাড় থেকে বড় বড় পাথর নেমে আসছে, যার কারণে সেতুটি ভেঙে দু'টুকরো হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার জেরে নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও আহতদেরকে ৫০ হাজার করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রাণোচ্ছল দীপা হারিয়ে গেলেন প্রকৃতিতে
টুইটারে দীপা শর্মা বেশ জনপ্রিয় মুখ। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর খবর শোনার পর তাঁর অনুগামীরা একের পর এক শোকবার্তা পাঠাচ্ছেন টুইটারে। দীপার টুইটারের বায়ো থেকে জানা গিয়েছে তিনি একজন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক, পুষ্টিবিদ ও একজন লেখিকা। তাঁর ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বলছে তিনি ছবি তুলতে, বেড়াতে এবং নতুন নতুন মানুষদের সঙ্গে দেখা করতে ভালোবাসেন। ধসে দীপার মৃত্যুর ঠিক একদিন আগে তিনি পাহাড়ে উঠে ছবি তোলেন এবং ক্যাপশন দেন, 'প্রকৃতি ছাড়া জীবনই বৃথা।' আর সেই প্রকৃতির কোলেই তিনি চিরতরে হারিয়ে গেলেন। দীপার ওয়েবসাইট থেকে এটাও জানা যাচ্ছে যে তিনি মানুষকে সহায়তা করার জন্য একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রকৃতিকে বরাবরই তিনি ভালোবাসতেন আর সেই টানেই ঘুরে বেড়াতেন তিনি।
আটজন মৃতের পরিচয়
অন্য আটজন যাঁরা হিমাচল প্রদেশের ধসে মারা গিয়েছে তারা হলেন মায়া দেবী বিয়ানি (৫৫), তাঁর ছেলে অনুরাগ বিয়ানি (৩১) ও মেয়ে মায়া দেবী বিয়ানি (২৫), এঁরা তিনজনেই রাজস্থানের শিকারের বাসিন্দা, মহারাষ্ট্রের প্রতীক্ষা সুনীল পাটিল (২৭), এছাড়াও ছত্তিশগড়ের সতীশ কাটাকবার (৩৪), পশ্চিমবঙ্গের উমরাও সিং (৪২) ও উল্লাস বেদপাঠক (৩৭)।
ছবি সৌ:টুইটার