Golden Journey Of Gold: ৬০ হাজারে উঠতে পারে সোনার দাম! কিন্তু জানেন কি ১৯৪৭ সালে কত ছিল দাম
অনেকের বাড়িতে অনেক সোনা-রুপোর ভান্ডার থাকে! অনেক পুরানো দিনের রত্ন ভান্ডার যত্ন করে রেখে দেন। বংশ পরম্পরায় সেই সম্পত্তি রক্ষা করা হয়। কিন্তু জানেন কি একটা সময়ে বিপুল পরিমাণ এই সোনা-রুপোর ভান্ডার কত টাকায় কেনা হয়েছিল।
অনেকের বাড়িতে অনেক সোনা-রুপোর ভান্ডার থাকে! অনেক পুরানো দিনের রত্ন ভান্ডার যত্ন করে রেখে দেন। বংশ পরম্পরায় সেই সম্পত্তি রক্ষা করা হয়। কিন্তু জানেন কি একটা সময়ে বিপুল পরিমাণ এই সোনা-রুপোর ভান্ডার কত টাকায় কেনা হয়েছিল।
পুরোনো দিনের মানুষজন এত সোনা কীভাবে বা কিনে রাখতে পারতেন? জলের দরে কি বিক্রি হতো? এই সমস্ত প্রশ্ন কি কখনও মাথায় এসেছে। এমনকি কখনও ভেবে দেখেছেন দেশ যখন স্বাধীন হয়েছিল সেই সময় সোনা-রুপোর কি দাম ছিল? বর্তমান অবস্থায় দাঁড়িয়ে সোনার দাম এখন হাতে ছোঁড়ার বাইরে। ক্রমশ বাড়ছে!
এই অবস্থায় বাড়িতে পুরানো দিনের সোনা গহনা যেন মহামুল্যবান। এই প্রতিবেদনে রইল সোনার ৭৫ বছরের একটা লম্বা ইতিহাস!
স্বাধীনতার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সোনার দাম 52,000% বেড়েছে!
সামনেই স্বাধীনতা দিবস। গোটা দেশ ১৫ অগস্ট অর্থাৎ ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস পালনে সেজে উঠছে। কিন্তু জানেন কি পুরানো সময়ে কেনা যদি সোনা আপনার কাছে থাকে তাহলে উৎসবের মুহূর্তটা আরেকটু বদলে যাবে। কারণ ১৯৪৭ সালে কেনা সোনা যদি এই মুহূর্তে আপনার কাছে থেকে থাকে তাহলে আপনি কি জানেন কত শতাংশ লাভের কাছাকাছি আপনি রয়েছেন? সোনার কারবারিরা বলছেন এই বিষয়ে আন্দাজ লাগানোটাও কঠিন। কারণ ৫২ হাজার শতাংশেরও বেশি লাভে থাকবেন গ্রাহক। তথ্য বলছে ১৯৪৭ সালে যখন দেশ স্বাধীন হয় তখন ১০ গ্রাম সোনার দাম ১০০ টাকাও ছিল না। আর আজ ১০ গ্রাম সোনার দাম ৪৬ হাজার টাকা! যা মধ্যবিত্তের আয়ত্তের বাইরে রয়েছে।
১৯৪৭ সালে মাত্র ৮৮ টাকা ছিল সোনার দর
১৯৪৭ সাল! স্বাধীনতা আনন্দে মেতে ওঠে গোটা দেশ। পরাধিনতার গ্লানিকে ভুলে মুক্তির স্বাদ চারপাশে। যে যার মতো করে স্বাধীন হওয়ার আনন্দ ভোগ করছেন। কিন্তু জানেন কি সেই সময় মাত্র ১০ গ্রাম সোনার দর ছিল মাত্র ৮৮ টাকা। সেই সময় ১০ গ্রাম সোনার দাম ১০০ টাকা ছুঁতে প্রায় ১০ বছর লেগে গিয়েছিল।
১৯৫৯ সাল প্রথম বার সোনার দাম ১০০ টাকা পেরিয়ে যায়। সেই সময় মাত্র ১০ গ্রাম সোনার দাম হয় ১০২ টাকা। ১০০ টাকা থেকে ১০ গ্রাম সোনার দাম ৫০০ টাকা হতে ১৫ টা বছর লেগে গিয়েছিল। শেষমেষ ১৯৭৪ সালে সোনার দর ৫০০ টাকা ক্রশ করেছিল। আর এই সময় থেকে সোনার মূল্যবৃদ্ধি যেন চোখের পলকে হতে থাকল।
সোনাতে বিনিয়োগের মাত্রা বাড়তে থাকল। চাহি বাড়ল। এই অবস্থায় দ্রুত ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা, ১০০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত দির বাড়তে থাকল। আর তা ঘটল খুব অল্প সময়ের মধ্যে। তথ্য বলছে মাত্র ১০ বছরের মধ্যেই ১০ গ্রাম সোনার দর পেরিয়ে যায় ২০০০ টাকা।
এখানেই শেষ নয়, ১৯৮৫ সাল থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে সোনার দাম পাঁচ গুন বেড়ে যায়। ২০০৭ সালে সোনার দামের গন্ডি ১০ হাজার পেরিয়ে যায়।
বিশ্বের আর্থিক মন্দার কারণে আরও চকচকে সোনা!
ক্রমশ লম্বা হয়েছে সোনার জার্নি! আর এই লম্বা সফরে আরও একটা টুইস্ট রয়েছে। ২০০৮ সালে গোটা বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দা শুরু হয়। আর তাতে গোটা বিশ্বের অর্থ ব্যবস্থাতে একটা বড় ঝটকা লাগে। সমস্ত বিনিয়োগেও বড়সড় ধাক্কা লাগে। শেয়ার বাজারে বড়সড় পতন লক্ষ্য করা যায়।
শুধু তাই নয়, রিয়েল এসেস্ট, মিউচুয়াল ফান্ডে বড়সড় পতন দেখা যায়। কার্যত বিনিয়োগকারীদের মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে। সেই সময় সোনাতে বিনিয়োগ লাভ দিতে থাকে। ২০০৮ সালে আর্থিক মন্দার সময়েও ২৫ শতাংশের বেশি রিটার্ন দিয়ে সবাইকে চমকে দেয়।
আর এরপর থেকে সোনার ক্ষেত্রে মানুষের বিশ্বাস বেড়ে যায়। আর এরফলে মাত্র তিন বছরের মধ্যে সোনার দাম দ্বিগুণের বেশি হয়ে গিয়েছে। ২০০৮ সালে সাড়ে ১২ হাজার বিক্রি হওয়া সোনা ২০১১ সালে ২৬ হাজার টাকা পর্যন্ত চলে যায়।
৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত যেতে পারে সোনার দাম!
আর সেই সময় থেকেই সোনার দামে কার্যত বিপ্লব ঘটতে থাকে। ধীরে ধীরে মধ্যবিত্তের আয়ত্তের বাইরে চলে যেতে থাকে দাম। ১০ বছরেরও কম সময়ে ২০২০ সালে সোনার দাম সোনার দাম ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত চলে যায়। এমনকি ৫৬ হাজার টাকা দরেও ১০ গ্রাম সোনা বিক্রি হয়েছে। যা সর্বকালীন রেকর্ড ছিল।
তবে এই অবস্থায় সোনার দামে বড়সড় পতন চলছে। বর্তমানে ১০ গ্রাম সোনা ৪৬ হাজার টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। তবে সোনার কারবারিরা বলছেন, বেশিদিন এই রেটে সোনা পাওয়া যাবে না। খুব শীঘ্র ফের বাড়তে থাকবে সোনার দাম। আর তা বেড়ে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা সোনার কারবারিদের।
স্বাধীনতার পর থেকে কীভাবে এগিয়েছে রুপোর দামও
এই ৭৫ বছরে রুপোর দামেও একাধিকবার পরিবর্তন এসেছে। তবে এই ৭৫ বছর ধরে সোনার পরিপূরক হিসাবে কাজ করেছে রুপো। অনেক সময়ে সোনার জায়গাতে রপো কিনে কাজ সারতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। কিন্তু স্বাধীনতার সময়ে মাত্র ১০৭ টাকাতে এক কিলো রুপো কিনতে পাওয়া যেত।
বর্তমান পরিস্থিতিতে এক কিলো রুপো কিনতে হলে ৬৫ হাজার টাকারও বেশি খরচ করতে হবে। এমনকি কয়েকদিন আগে রুপোর দাম ৭৫ হাজার টাকারও বেশি হ্যে গিয়েছিল। ৭৫ বছরের ইতিহাসে রুপোর দামে সবথেকে বেশি ঝটকা আসে গত বছর।
২০২০ সালে মার্চ মাসে ৩৩ হাজার ৫০০ টাকার কাছাকাছি বিক্রি হওয়া রুপোর দাম পাঁচমাসের মধ্যে অর্থাৎ অগস্টে ৭৪ হাজার টাকার কাছাকাছি বিক্রি হতে থাকে। আশঙ্কা, রুপোর চাহিদা বেড়েছে। এই অবস্থায় আগামী ২ থেকে তিন বছরের মধ্যে রুপোর দাম ১ লাখের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।