Tripura Elections 2023: 'এগিয়ে থেকেও' CPIM-এ 'বিদ্ধ' কংগ্রেস! 'ঐতিহাসিক ভুল' কাজে লাগাবে নাতো বিজেপি
ত্রিপুরায় বিজেপি শাসনের জেরে গত পাঁচ বছরের শেষ সময়ে কাছাকাছি এসেছে সেখানকার বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব। রাজ্যের মর্যাদা পাওয়ার পর থেকেই লড়াই ছিল বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের।
ত্রিপুরায় বামেরা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিলেও জোটসঙ্গী কংগ্রেস এখনও তা করতে পারেনি। যে আসন ছাড়া হয়েছে, তা নিয়ে রাজ্য কংগ্রেসে অসন্তোষ রয়েছে। অসন্তোষ রয়েছে সিপিআইএম-এও। রাজ্যে চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা বিজেপি এই সুযোগ কাজে লাগাতে নেমে পড়েছে।
সিপিআইএম-এ 'বিদ্ধ' কংগ্রেস
ত্রিপুরা বামফ্রন্ট ২৫ জানুয়ারি তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। এব্যাপারে কংগ্রেসের তরফে প্রকাশ্যে তেমন কোনও মন্তব্য করা না হলেও, সিপিআইএম বড় ভাইয়ের মতো আচরণ করছে বলেও মনে করছেন রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের একাংশ। তাঁরা বলছেন এইভাবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা কংগ্রেসের পক্ষে অপমানজনক এবং তাদের প্রাসঙ্গিকতাকেই অগ্রাহ্য করা হয়েছে।
হতবাক কংগ্রেস
জানা গিয়েছে, যে সময় সিপিআইএম তথা ত্রিপুরা বামফ্রন্ট বিধানসভা নির্বাচনে তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করছে, সেই সময় রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা ছিলেন দিল্লিতে। তিনি আসন সমঝোতা নিয়ে সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে কথা বলতে দিল্লিতে গিয়েছেন। তবে বামেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণায় রাজ্য কংগ্রেস হতবাক। অসন্তুষ্ট রাজ্য কংগ্রেসের একমাত্র বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন বলেছেন, তারা প্রথমে ২৭ টি আসন দাবি করলেও, পরে ২৩ টি আসন দাবি করেছিলেন। তারই মধ্যে এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বাম দলগুলি তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন।
বেশি ভোট পেয়েও কম আসন বরাদ্দ
ত্রিপুরায়
৬০
টি
আসনের
মধ্যে
বামেরা
কংগ্রেসকে
ছেড়েছে
১৩
টি।
আর
৪৭
টিতে
তাদের
প্রার্থী
থাকছে।
এর
মধ্যে
থেকে
তারা
একটি
আসনে
নির্দল
হিসেবে
একজন
আইনজীবী
তথা
মানবাধিকার
কর্মীকে
সমর্থন
জানাবে।
সিপিআইএম
প্রার্থী
দেবে
৪৩
টি
আসনে।
শতাংশের
নিরিখে
বাম
ও
কংগ্রেসের
এই
আসন
ভাগাভাগি
দাঁড়িয়ে
রয়েছে
৮০
ও
২০-তে।
২০১৮
সালের
বিধানসভা
নির্বাচন
ফলাফল
বিশ্লেষণ
করলে
দেখা
যাবে,
প্রাপ্ত
ভোটের
নিরিখে
কংগ্রেস
ছিল
দ্বিতীয়স্থানে।
বিজেপি
৪৯
শতাংশ
ভোট
পেয়ে
ক্ষমতা
দখল
করেছিল।
কংগ্রেস
২৫
শতাংশ
ভোট
পেলেও
কোনও
আসন
দখল
করতে
পারেনি।
অন্যদিকে
সিপিআইএম
তথা
বামেরা
১৭
শতাংশ
ভোট
পেয়ে
তৃতীয়
স্থানে
থেকেও
১৬
টি
আসন
দখল
করেছিল।
অন্যদিকে
২০২৯-এর
লোকসভা
নির্বাচনে
বিজেপি
৬০
টি
আসনের
মধ্যে
৫১
টিতে
এগিয়ে
ছিল।
কংগ্রেস
এগিয়ে
ছিল
নটি
আসনে।
সিপিআইএম
তথা
বামেরা
একটি
আসনেও
এদিয়ে
থাকতে
পারেনি।
তবে
কংগ্রেস
নেতারা
আড়ালে
একথা
স্বীকার
করে
নিচ্ছেন
রাজ্যে
তাদের
সাংগঠনিক
শক্তি
বলতে
কিছুই
নেই।
অসন্তোষ সিপিআইএম এবং কংগ্রেসেও
কংগ্রেসের নিচু তলার কর্মী যেমন বামেদের ছাড়া আসন সংখ্যা নিয়ে অসন্তুষ্ট, ঠিক তেমনই সিপিআইএম-এর শাসনে যাঁরা তৎকালীন শাসকের হামলার মুখে পড়েছিলেন, তাঁরাও অসন্তুষ্ট। অন্যদিকে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে অসন্তুষ্ট কংগ্রেস-টিইউজেএস আমলে সন্ত্রাসের শিকার হওয়া কর্মী-সমর্থকর। তাঁরা কোনওভাবেই এই জোটকে মেনে নিতে পারছেন না।
শেষ পর্যন্ত ঐতিহাসিক ভুল হবে না-তো
১৯৯৭ সালে জ্যোতি বসুকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে না দেওয়াকে ঐতিহাসিক ভুল বলেছেন সিপিআইএম। আবার ২০০৮ সালে পারমাণবিক চুক্তির ইস্যুতে ইউপিএ সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়াকেও ঐতিহাসিক ভুলের পর্যায়েই ফেলে থাকেন সিপিআইএম নেতারা। তারা বলেন, সেটা না করলে হয়ত ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে সিপিআইএম ক্ষমতা হারাত না। আর এবার ত্রিপুরায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে পরে সিপিআইএম নেতারা বলবেন না-তো সেটা ঐতিহাসিক ভুল ছিল। কেননা বিজেপির ইতিমধ্যেই এই জোট নিয়ে সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের নিচু তলার কর্মীদের ক্ষোভ কাজে নাগাতে নেমে পড়েছে উত্তর-পূর্বের এই ছোট রাজ্যে।