নোটবন্দি মামলায় হলফনামা পেশে অতিরিক্ত সময়ের আবেদন কেন্দ্রের, অসন্তোষ সুপ্রিম কোর্টের
নোটবন্দি মামলায় হলফনামা পেশে অতিরিক্ত সময়ের আবেদন কেন্দ্রের, অসন্তোষ সুপ্রিম কোর্টের
সুপ্রিম কোর্ট নোটবন্দির সিদ্ধান্ত ও তার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে কেন্দ্র ও আরবিআইকে হলফ নামা দেওয়ার রায় দেয়। ৯ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির ধার্য হয়। বুধবার ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেক্টটারমন সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের হলফনামা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় চান। ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সংবিধানিক বেঞ্চ। বিচারপতি নাগারথনা স্থগিতের অনুরোধে বলে, 'আদালতের জন্য এটি অত্যন্ত বিব্রতকর।'
অসন্তোষ প্রকাশ সুপ্রিম কোর্টের
নোটবন্দি মামলায় বিস্তৃত হলফনামা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের তরফে আরও কিছুটা সময় চাওয়া হয়। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে নোটবন্দি মামলায় পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এস. আব্দুল নাজির, বিআর গাভাই, এএস বোপান্না, ভি. রামাসুব্রমানিয়ান এবং বিভি নাগারথনা। নোটবন্দি মামলায় শুনানি স্থগিতের আবেদনে বিভি নাগারথনা বলেন, 'সাধারণত একটি সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি এভাবে স্থগিত করা যায় না। আমরা একবার শুনানি শুরু করার পর আর উঠি না। এই ধরনের অনুরোধ আদালতের জন্য খুব বিব্রতকর।'
সুপ্রিমকোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুরোধ
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেলের তরফে কেন্দ্রকে হলফনামা দেওয়ার বিষয়ে আরও এক সপ্তাহ সময় দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। কেন্দ্রের এই বিলম্বের জন্য তিনি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়ে নেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদনে বলেন, 'আমরা হলফনামা প্রস্তুত করতে পারিনি। আমাদের আরও এক সপ্তাহের সময়ের প্রয়োজন। হলফনামাটি আরও বিস্তৃতভাবে আদালতে পেশ করতে পারব। তা না হলে শুনানিতে বাধার সৃষ্টি হতে পারে।' তিনি পরের বুধবার বা বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানির জন্য সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে আবেদন করেন।
তীব্র প্রতিক্রিয়া আবেদনকারীর আইনজীবীর
সুপ্রিম কোর্টের এই ধরনের অনুরোধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান প্রবীণ আইনজীবী শ্যাম দিভান। তিনি বলেন, 'আমরা যতদূর জানি, এই ধরনের স্থগিতের অনুরোধ একটি সাংবিধানিক বেঞ্চে কখনও করা যায় না। সাংবিধানিক বেঞ্চকে সর্বাগ্রাধিকার দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে এই ধরনের অনুরোধ অস্বাভাবিক।' তিনি বলেন, আগে কখনও তিনি সাংবিধানিক বেঞ্চে এই ধরনের শুনানি স্থগিতের আবেদন শোনেননি। এরপর অ্যাটর্নি জেনারেলের তরফে জানানো হয়, 'আমরা সবাই সাংবিধানিক বেঞ্চের গুরুত্ব জানি। আমরা এই ধরনের আবেদন করি না। কিন্তু কিছু গুরুতর সমস্যার জন্য এই ধরনের আবেদন করা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি আশা করব আদালত সমস্যাটি বুঝবে এবং আবেদনের সম্মতি জানাবে।'
সুপ্রিম কোর্টে নোটবন্দি মামলার শুনানি
১২ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে নোটবন্দিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ৫৮টি মামলার শুনানি হয়। বিপক্ষের আইনজীবী জানান, নোটবন্দি হওয়ার পর প্রায় ছয় বছর কেটে গিয়েছে। সেই অর্থে এখন এই মামলার কোনও মূল্য নেই। এই মামলাটি কেতাবি হয়ে গিয়েছে। যদিও সেই দাবি আবেদনকারীদের আইনজীবী নস্যাৎ করে দেন। আবেদনকারীদের আইনজীবী বলেন, নোটবন্দির ফলাফল সদূর প্রসারী। অতীতে মানুষকে নোটবন্দির জেরে ভুগতে হয়েছে। ভবিষ্যতেও এর প্রভাব রয়েছে। দুই পক্ষের যুক্তি শোনার পরেই সুপ্রিম কোর্টের সংবিধানিক বেঞ্চ নোটবন্দির প্রক্রিয়াটি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্র ও আরবিআইকে বিস্তৃত হলফনামা পেশ করার নির্দেশ দেয়। প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশে ভাষণে পুরনো ৫০০ টাকা ও এক হাজার টাকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। রাতারাতি পুরনো ৫০০টাকা ও হাজার টাকার নোটে নিষেধাজ্ঞার জেরে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ।
হিমাচল নির্বাচন ২০২২: অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কনভয় থামিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, ভিডিও ভাইরাল