বিজেপির ভিত্তি তিন ‘জে’! তৃণমূল কংগ্রেস একে একে ব্যাখ্যা করল মোদী সরকারের নয়া ‘রূপ’
লোকসভায় পাস হওয়ার পর রাজ্যসভায় পেশ হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। রাজ্যসভায় সেই বিতর্কে অংশ নিয়ে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন বিজে্পিকে মিথ্যাবাদী, প্রতারক ও দুর্নীতি পরায়ন দল বলে ব্যাখ্যা করলেন।
লোকসভায় পাস হওয়ার পর রাজ্যসভায় পেশ হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। রাজ্যসভায় সেই বিতর্কে অংশ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন বিজে্পিকে মিথ্যাবাদী, প্রতারক ও দুর্নীতি পরায়ন দল বলে ব্যাখ্যা করলেন। তিনি বলেন, বিজেপি তিনটি 'জে'-র উপর ভিত্তি করে করে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
বিজেপির ভিত্তি তিন ‘জে’
ডেরেক ও'ব্রায়ান বলেন, বিজেপি দলটির ভিত্তি হল তিন ‘জে'। এই তিন ‘জে' হল ঝুট (মিথ্যা), ঝাঁস (প্রতারণা) এবং জুমলা (দুর্নীতি)। গত ৫ বছরের দিকে তাকালেই সেই উপলব্ধি হবে। সাধারণ মানুষের হাত থেকে টাকা কেড়ে নিয়েছে, ২ কোটি মানুষ তাদের চাকরি হারিয়েছে, ৪৫০ জঙ্গি হামলা হয়েছে, অর্থনীতি ধসে গিয়েছে। এবার মানুষকে দেশ থেকে তাড়াতে চাইছে এই পার্টি।
নোটবন্দির ৫০ দিন, মিথ্যার আশ্বাস
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়ান বলেছিলেন, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। মোদী বলছেন চিন্তার কিছু নেই। এখানেই লুকিয়ে রয়েছে মিথ্যা। নোটবন্দির পর ৫০ দিন সময় চেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বরের পর কী হয়েছিল সবাই জানেন। মানুষের হাতের টাকা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। টাকার জন্য হাহাকার করেছিলেন মানুষজন।
জিএসটি পর কর্মহারা ২ কোটি
২০১৭-র ১ জুলাই জিএসটি চালু হয়েছিল। তারপর লাটে উঠেছিল ছোট ও মাঝারি ব্যবসা। চাকরি হারিয়েছিলেন দু-কোটি মানুষ। মানুষের অন্ন কেড়ে নিয়েছিল এই সরকার। জিএসটির পর যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছিল, তা সামলে উঠতে পারেনি মোদীর ভারত তার রেষ চলছে এখনও।
কাশ্মীরে বিলুপ্ত ৩৭০ ধারা
মোদী-শাহরা বলেছিলেন কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত হওয়ার পর জঙ্গি হামলা বন্ধ হয়ে যাবে। সেইমতো ২০১৯-এর ৫ আগস্ট কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত হয়েছিল। কিন্তু আদতে দেখা গিয়েছে জঙ্গি হামলার ঘটনা আরও বেড়ে গিয়েছে। ৩৭০ ধারা রদের পরও কাশ্মীরে রক্ত ঝরছে। প্রাণ যাচ্ছে সেনা জওয়ানদের। মোদী জমানায় নয় নয় করে সাড়ে চারশো জঙ্গি হামলা হয়েছে। তাহলে মোদী কি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেননি।
অসমে এনআরসি লাগু
২০১৮-র ৩১ আগস্ট এনআরসি লাগু হয়েছিল অসমে। ১৯ লক্ষ নাম বাদ পড়েছিল চূড়ান্ত তালিকা থেকে। এনআরসিতে হিন্দু বা মুসলসিম ভিন্ন অন্য ধর্মী লোকেদের গায়ে আঁচা লাগবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু দেখা গিয়েছে ১৯ লক্ষের মধ্যে ১২ লক্ষই হিন্দু বাঙালি।
অর্থনীতি তলানিতে
২০১৪-য় ক্ষমতায় এসে মোদী বলেছিলেন দেশকে ৫ মিলিয়ন ডলার অর্থনীতি উপহার দেবেন তিনি। কিন্তু আদতে দেখা গিয়েছে জিডিপি নেমে গিয়েছে ৪.৫-এ। একেবারে তলানিতে চলে গিয়েছে অর্থনীতি। সাধারণ মানুষই বুঝতে পারছেন দেশের অর্থনীতির কী হাল করে ছেড়েছেন মোদী। আজ দেশের অর্থনীতি নিয়ে সবথেকে বেশি চিন্তার দরকার।
সিএবি চালু করে বলছেন চিন্তা নেই
ডেরেক ও'ব্রায়ানের কথায়, মোদী যখন বলছেন চিন্তার কোনও কিছু নেই, তখন চিন্তার কারণ আছে বৈকি। কেননা যতবার তিনি একথা বলেছেন, ততবার দেশ বিপাকে পড়েছে। দেশের মানুষের কাছে অন্ধকার দিন অবতীর্ণ হয়েছে। আচ্ছে দিন আর আসেনি দেশের মানুষের কাছে। তাই মোদী আশ্বাস মানেই দুর্গতির সুত্রপাত।