রাজ্যে সেনা মোতায়েন, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় আঘাত, সংসদের ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ বিরোধীদের
রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে সেনা মোতায়েনের ঘটনা দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় আঘাত। এটা ভারতীয় সংবিধানের পরিপন্থী। একযোগে সংসদের উভয় কক্ষে গর্জে উঠলেন বিরোধী সাংসদরা।
নয়াদিল্লি ও কলকাতা, ২ ডিসেম্বর : রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে সেনা মোতায়েনের ঘটনা দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় আঘাত। এটা ভারতীয় সংবিধানের পরিপন্থী। একযোগে সংসদের উভয় কক্ষে গর্জে উঠলেন বিরোধী সাংসদরা। কংগ্রেসকে তো আগেই পাশে পেয়েছিল তৃণমূল, এবার সেনা ইস্যুতে অন্যান্য বিরোধীদলগুলিও তৃণমূলের পাশে দাঁড়াল। সেনা বিরোধিতায় সরব হয়ে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভে সামিল হলেন বিরোধীরা। কেন্দ্র-রাজ্য সেনা সংঘাতে দিনভর উত্তাল হয়ে উঠল সংসদের দুই কক্ষই।
এদিকে সেনার তরফে অনুমতিপত্র পেশ করে মেজর জেনারেল সুনীল যাদব জানিয়ে দেন, আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই সেনা মোতায়েন করে রুটিন সমীক্ষা চালাচ্ছি। বনধ থাকায় গত ২৮ নভেম্বর এই রুটিন সমীক্ষা চালানো যায়নি। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেওয়া নির্ধারিত সময় মেনেই ১ ও ২ ডিসেম্বর রাজ্যের টোলপ্লাজাগুলিতে সেনা মোতায়েন করে এই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। কোনও চাপের কাছেই নতি স্বীকার করা হবে না। তার কারণ, সমস্ত কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েই সেনা এই কাজে সামিল হয়েছে।
সেনার দাবি, গত বছর নভেম্বরেও এই সমীক্ষা চলেছিল। এবার সেনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। ভিত্তিহীন সেনারা টাকা তোলার অভিযোগও। মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হয়, সেনার টাকা তোলার সত্যতা প্রমাণ করুন মুখ্যমন্ত্রী। ইস্টার্ন কম্যান্ডের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রমাণ থাকলে তদন্ত করা হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সেনাকর্তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, রাজনৈতিক হতাশা থেকেই এইসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। রাজ্যের অনুমতি নিয়েই সেনা রুটিন সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, অযথা ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে। এইসব অভিযোগের কোনও যৌক্তিকতা নেই।
যদিও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সুধাংশুশেখর রায় তাঁদের দাবিতে অনড়। সকাল থেকেই দুই কক্ষেই উত্তাপ ছড়িয়েছে তৃণমূল সাংসদদের এই সেনা মোতায়েএনর অভিযোগে। কংগ্রেস থেকে শুরু করে সপা, বসপা-সহ বিরোধীরা এক বাক্যে তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছে।
সুদীপবাবু বলেন, সেনা লরি থেকে টাকা আদায় করছে, পেনড্রাইভে ছবি এনে আমরা রাষ্ট্রপতিকে সব জানিয়েছি। বাংলায় যা হচ্ছে, কোনওদিনও এর আগে অন্য কোনও রাজ্যে হয়নি। সেনা নামিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। রাজ্যসভায় বলেন সুধাংশু শেখর রায়। অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তোলেন তিনি।
বহুজন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী বলেন, রাজ্যকে জানিয়ে সেনা মোতায়েন করাই যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর রীতি। তা মানছে না কেন্দ্র। সেই কারণেই বারবার কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত তৈরি হচ্ছে।