কোভিড–১৯ ওষুধের চাহিদা ক্রমশঃ কমছে ভারতে, দাবি সিপলার
কোভিড–১৯ ওষুধের চাহিদা ক্রমশঃ কমছে ভারতে, দাবি সিপলার
ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা সিপলা জানিয়েছে যে দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ফলে দ্বিতীয় ওয়েভের সময় যে সমস্ত ওষুধের চাহিদা ছিল তা বর্তমান তৃতীয় ওয়েভের সময় লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। রেমডেসিভির, টোসিলিজুমাব, ফ্যাভিপিরাভির ও কিছু ইনহেলড কর্টিকোস্টেরয়েডের ওষুধের চাহিদা এখন খুন একটা বেশি নেই বলেই জানিয়েছে সিপলা।
লাভ করেছে প্যারাসিটামল
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাতকারে সিপলার গ্লোবাল সিএফও কেদার উপাধ্যায় বলেছেন, ‘হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কম, রোগের তীব্রতা (মৃদু থেকে মাঝারি ও গুরুতর কোভিড কেস) কম, এটি মূলত বিশ্বে প্যারাসিটামলগুলি লাভ করেছে।' উপাধ্যায় এও জানিয়েছেন করোনার এই তৃতীয় ওয়েভ সীমিত এবং সিপলার কাছে প্রধান ফোকাসই হল রোগীদের জন্য যেন ওষুধ উপলব্ধ থাকে। এমন অনেক শহর রয়েছে, যেখানে তৃতীয় ওয়েভ শেষ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু মানুষ (যাঁরা সংক্রমিত ছিল) তাঁরা এখনও দুর্বল। তিনি জানান যে ভিটামিন ওষুধগুলির বিক্রি এবার তাই বাড়তে পারে।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই দেশে তৃতীয় করোনা ওয়েভের সূচনা, এটি উচ্চ সংক্রমণযোগ্য অথচ মাঝারি উপসর্গ। এই ওমিক্রনের কারণে ফ্লু-এর মতো উপসর্গ যেমন জ্বর, শরীরে বেদনা ও গলা ব্যথা হতে পারে। যার জন্য প্যারাসিটামল ও মাল্টিভিটামিন ওষুধ যথেষ্ট। মাইক্রো ল্যাবসের ডোলো, যা প্যারাসিটামলের ব্র্যান্ড তা বাজারে এখন হু হু করে বিক্রি হচ্ছে। এরপরই বাজার দখল করেছে জিএসকে-এর ক্রোসিন ও ক্যালপল।
সিপলার ফোকাস
বিভিন্ন ডোজের ক্ষমতাসম্পন্ন প্যারাসিপ ও প্যারাফিজ ব্র্যান্ড নাম দিয়ে সিপলা বাজারে প্যারাসিটামল বিক্রি করছে। উপাধ্যায় জানিয়েছেন যে সিপলা প্যারাসিটামল ব্র্যান্ডগুলিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা করছে না। তিনি বলেন, ‘গোটা দেশে এই ওষুধগুলি (ব্র্যান্ড) যাতে উপলব্ধ হয়, সেটার দিকেই আমাদের ফোকাস। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে এই ব্র্যান্ডের মার্জিন এত বেশি নয়। এসব পণ্যের বিপণনে খরচ করার সামর্থ্য আমাদের নেই।'
সিপলার কোভিড পোর্টফোলিও
ভারতের ওষুধ সংস্থাগুলির মধ্যে সিপলার একটি বিস্তৃত কোভিড পোর্টফোলিও রয়েছে, যাতে অ্যান্টিভাইরালস, মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি, কর্টিকস্টেরয়েড, ভিটামিন রয়েছে। এছাড়াও স্যানিটাইজার, মাসক ও অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটও সিপলার পকেটে আছে।
গত আর্থিক বছরে সিপলার লাভ
সিপলা ২০২১ সালের আর্থিক বছরে তার কোভিড পোর্টফোলিওর সুবিধা পেয়েছে, যখন তার ভারতে ব্যবসা, যাকে ‘ওয়ান ইন্ডিয়া' বলা হয়েছে, তা ১৫ শতাংশ বেড়েছে। সংস্থা যদিও কোভিড নির্দিষ্ট বিক্রির সংখ্যা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও এটা বলেছে যে পোর্টফোলিওটি ২০২১ সালের আর্থিক বছরে সংস্থার ১৯,১৬০ কোটি আয়ের প্রায় ৪-৫ শতাংশ লাভ করেছে। ২০২১ সালের আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ডেল্টা ওয়েভের কারণে ভারতে বিক্রি বছরে রেকর্ড ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২,৭১০ কোটিতে পৌঁছেছে। সিপলা জানিয়েছে যে প্রথম ত্রৈমাসিকে, কোভিড পোর্টফোলিও ৫,৫০৪ কোটির সামগ্রিক বিক্রয়ের একটি উচ্চ একক সংখ্যায় অবদান রেখেছে। কিন্তু কোভিড পোর্টফোলিও থেকে বিক্রয় তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বছরে ১০% এবং ক্রমানুসারে ১৭% হ্রাস পেয়েছে বলে ফার্মা সংস্থা জানিয়েছে।