৭২ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় উষ্ণতম 'এপ্রিল' অনুভব করছে দিল্লিবাসী
৭২ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় উষ্ণতম 'এপ্রিল' অনুভব করছে দিল্লিবাসী
তাপপ্রবাহের ভয়ঙ্কর ধাক্কা সহ্য করছে দিল্লিবাসী৷ শেষ ৭২ বছরে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এরকম গরমের মুখোমুখি রাজধানী শহরের বাসিন্দারা। দ্বিতীয় উষ্ণতম এপ্রিলের রেকর্ড গড়েছে রাজধানী শহর৷ মাসিক গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে৷ একই সঙ্গে দেশের বেশ কিছু অংশ তীব্র তাপপ্রবাহে চলছে। সঙ্গে রয়েছে ঘন্টার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ ব্ল্যাকআউটের ঘটনা!
দিল্লির বিদ্যুৎমন্ত্রী জৈন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, 'এক দিনের বিদ্যুৎ ব্যাকআপ নিয়ে কোন শহর কাজ করতে পারে না৷ রাজধানীতে কিছু কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে একদিনের কয়লা মজুদ রয়েছে৷ অন্তত ২১ দিনের কয়লা মজুত হওয়া উচিৎ বলেও তিনি জানিয়েছেন। দিল্লির তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ে তিনি আরও বলেছেন, 'জাতীয় রাজধানী তাপপ্রবাহের একটি ভয়ঙ্কর অধ্যায়ের মুখোমুখি হচ্ছে! যার ফলে রাজধানী শহরে বিদ্যুৎ খরচ বেড়েছে।' অন্যদিকে ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড কয়লার ঘাটতির দাবি অস্বীকার করায়, বিদ্যুতের সংকট নিয়ে কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারের মধ্যে একটি নতুন টানপোড়েন তৈরি হয়েছে!
দিল্লির তাপপ্রবাহ নিয়ে দশটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট রইল ওয়ানইন্ডিয়ার পাঠকদের জন্য
এক, ২৮ এপ্রিল এবং ২৯ এপ্রিল শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটি ১২ বছরের মধ্যে দিল্লিতে এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল৷
দুই, আবহাওয়া দফতর একটি 'কমলা' সতর্কতা জারি করেছে, দিল্লির অনেক অংশে তীব্র তাপপ্রবাহের জন্য মানুষকে সতর্ক করেছে।
তিন, সারা ভারতের মতোই দিল্লিতে বিদ্যুত বিভ্রাট ও তাপপ্রবাহ লক্ষাধিক লোকের দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে! গ্রীষ্মের তাপমাত্রায় কার্যত মানুষ ছ্যাঁকা খেতে শুরু করেছেন৷ যার জন্য বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
চার, অস্বাভাবিকভাবে উত্তপ্ত মার্চ এবং এপ্রিল বিদ্যুতের চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে যা মজুত কয়লার কয়লার ঘাটতি তৈরি করেছে৷ যা আবার পরে বিদ্যুত ঘাটতির জন্য দায়ী।
পাঁচ, অনেক অঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহ কমে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে যা জুন এবং জুলাই মাসে বার্ষিক বর্ষা না হওয়া পর্যন্ত আরও খারাপ হবে।
ছয়, কর্তৃপক্ষ স্কুলগুলিও বন্ধ করে দিয়েছে বা স্কুলের নির্ধারিত সময় কমিয়েছে। বিহারে স্কুলের ক্লাসগুলি সকাল ১০.৪৫ টার মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সেখানের সরকার। দিল্লিতেও সাধারণ মানুষকে দুপুরে বাইরে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷
সাত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, আবহাওয়া বিভাগ উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য ভারতের জন্য পরবর্তী পাঁচ দিন একটি কমলা সতর্কতা জারি করেছে।
আট, তীব্র তাপপ্রবাহ আগামী মাসের শুরুর দিকেও থাকবে হবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা, যার অর্থ লক্ষ লক্ষ মানুষকে আরও কয়েকদিন বিপজ্জনক তাপমাত্রা এবং ঘন্টাব্যাপী ব্ল্যাকআউট সহ্য করতে হবে।
নয়, দেশে এখনও গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাত শুরু হয়নি! যা সাধারণত এপ্রিল এবং মে মাসেরনতাপমাত্রা কমিয়ে আনে।
দশ, ২০১০ সাল থেকে ভারতে তাপপ্রবাহের কারণে ৬৫০০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছে এবং বিজ্ঞানীরা বলছেন যে জলবায়ু পরিবর্তন দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে তাপপ্রবাহলে আরও কঠিন ও দ্রুত করে তুলছে৷