'দিল্লির ঘটনা জাতীয় লজ্জা', বিজেপিকে তোপ দেগে মন্তব্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের
শনিবার শুরু হয় দিল্লিতে সিএএ সমর্থক ও বিরোধী পক্ষের সংঘর্ষ। এরপর বুধবার পরিস্থিতির এতটা অবনতি হয় যে রাজধানীতে সেনা নামানোর পক্ষে সওয়াল করেন আপের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। জাতীয় রাজধানীতে এহেন পরিস্থিতিকে জাতীয় লজ্জা বলে আখ্যা দিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। আজ দিল্লি হিংসা নিয়ে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেন। সেই দলে ছিলেন মনমোহন। সেখানেই এই মন্তব্য করেন প্রাক্তন এই প্রধানমন্ত্রী।
'দিল্লিতে গত চার দিনে যা ঘটেছে তা জাতীয় লজ্জার বিষয়'
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মনমোহন সিং বলেন, 'আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে তাঁকে বলি যে তিনি যাতে এই বিষয়ে কেন্দ্রকে পরামর্শ দেন। দিল্লিতে গত চার দিনে যা ঘটেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় এবং জাতীয় লজ্জার বিষয়। এতে কমপক্ষে ৩৪ জন মারা গিয়েছে এবং কংপক্ষে ২০০ জন জখম হয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।'
অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করে কংগ্রেস
এদিকে সনিয়া গান্ধী দিল্লির ঘটনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি দিল্লির সরকারকে দোষারোপ করেন। রাজধানীতে হিংসা থামাতে সরকার সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন সনিয়া। সনিয়া গান্ধী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগও দাবি করেছিলেন বুধবার।
এখনও পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে দিল্লিতে
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসার আগুন আরও জ্বলে উঠছে দিল্লিতে। গত তিন দিনের হিংসায় এখনও পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে অশান্ত এলাকায় খবর সংগ্রহে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের রোষের সামনে পড়েছেন সাংবাদিকরাও। জানা যায় মঙ্গলবার এক সাংবাদিককে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। জখম অবস্থায় পরে সেই সাংবাদিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দিল্লির হিংসায় যেমন মারা গিয়েছেন এক পুলিশ কনস্টেবল ও আইবি অফিসার, তেমনই মৃতদের মধ্যে রয়েছেন সদ্য বিবাহিত এক ব্যক্তি, একজন ডিজে, এক ব্যবসায়ী, একজন বাবা যে তাঁর সন্তানদের জন্য টফি কিনতে বেরিয়েছিলেন।
৩৫ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন দিল্লিতে
এদিকে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না দিল্লিতে। এই গোষ্ঠী সংঘর্ষের মধ্যে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য স্পেশাল সেল, ক্রাইম ব্রাঞ্চ এবং অর্থনৈতিক অপরাধ শাখার (ইডাব্লু) তরফ থেকে প্রায় ৩৫ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেওয়া হয় শুট অ্যাট সাইটের নির্দেশ। বিশেষ পুলিশ কমিশনার পদে নিয়োগ করা হয় এসএন শ্রীবাস্তবকে।
দিল্লি পুলিশকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট
মূলত, দিল্লির মৌজপুর, বাবরপুর, কবিরনগর, পশ্চিম জ্যোতি নগর, গোকুলপুরীর গলিতে এই হিংসার ছবি নজরে পড়েছে বারবার। দিল্লির হিংসা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ পুলিশ। এই নিয়ে প্রকাশ্যে দিল্লি পুলিশকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট।
বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর-এর নির্দেশ দেয় দিল্লি হাইকোর্ট
দিল্লি হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখেও পড়ে দিল্লি পুলিশ। হাইকোর্টের প্রশ্ন, উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা সত্ত্বেও কেন তিনজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের করেনি দিল্লি পুলিশ। হাইকোর্ট বলে, 'এই নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে যত দেরি হবে তত পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে চলে যাবে। এই নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের না হলে তা ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে।'