সাম্প্রদায়িক নয় নির্মমতা! তরুণীর প্রেমে করুণ পরিণতি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের
উত্তর-পশ্চিম দিল্লির আদর্শনগরের ভিন্ন সম্প্রদায়ের এক তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্বের অভিযোগে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। অঙ্কিত স্যাক্সেনা হত্যার দু'বছর পর ফের এই ধরনের নির্মম-কাণ্ড ঘটে। নিহত রাহুল রাজপুত দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ওপেন লার্নিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র, তিনি স্কুল ছাত্রদেরও শিক্ষাদানও করতেন।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ছাত্রটি তাঁর এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল। তবে ওই তরুণীর পরিবার এই প্রেমের সম্পর্কের বিরুদ্ধে ছিল। বুধবার সন্ধ্যায় তরুণীর আত্মীয়-স্বজনরা দুজনকে একসঙ্গে দেখে। এরপর তারা তাদের কোনও অজুহাতে নন্দা রোডে ডেকে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
রাহুল রাজপুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই চার-পাঁচ জনের একটি দল তাঁকে মারধর শুরু করে। এই দলে তরুণীর ভাইরাও ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে রাজপুতকে আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে দেখা যায় ওই তরুণীকে। নিহত ছাত্রের কাকা এক বিবৃতিতে জানান, তাঁর ভাইপো ও ওই তরুণী একে অপরকে প্রায় দু-বছর ধরে চেনে। তাঁরা একই অঞ্চলে বাস করত। তবে তরুণীর বাবা-মা এবং বিশেষত তাঁর ভাইয়েরা এই বন্ধুত্বের বিরুদ্ধে ছিলেন।
তিনি বলেন, বুধবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ আমার বন্ধুর কাছ থেকে আমার কাছে ফোন আসে। সে আমাকে জানায়, চার-পাঁচজন লোক আমার ভাইপোকে মারধর করছে। আমি যখন এই জায়গায় পৌঁছই, তখন আমি দেখতে পেলাম যে আমার ভাইপোকে ওই মহিলার ভাই এবং তাদের সহযোগীদের নির্মমভাবে মারধর করছে।
সিসিটিভি ফুটেজে রাজপুতকে ছেঁড়া শার্ট পড়ে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়। তাঁর বাবা জানান, কিছু সময় পরে রাজপুত শরীরে যন্ত্রণা অনুভব করতে শুরু করে। জানায়, কিছু দেখতে পাচ্ছে না এবং বমি বমি ভাব হচ্ছে। এরপর তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন রাহুল মারা যান।
উত্তর-পশ্চিম দিল্লির পুলিশ কমিশনার বিজয়ন্ত আর্য বলেন, মৃত যুবকের দৃশ্যতঃ কোনও আঘাত ছিল না। ময়নাতদন্তের পরীক্ষায় জানানো হয়, প্লীহা ফেটে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় তিন নাবালক-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ অর্থাৎ পরিকল্পিত খুন এবং ৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার প্রধান সাক্ষী ওই তরুণীর দেওয়া বক্তব্যের ভিত্তিতে পুলিশ মহম্মদ রাজ, মানোয়ার হোসেন এবং তিন নাবালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।