পুলিশের নাকের ডগায় রড-লাঠি-ইট নিয়ে তাণ্ডব, দিল্লির হিংসা কাড়ল ১৮ প্রাণ
দিল্লি পুলিশের নাকের ডগায় রড-লাঠি নিয়ে তাণ্ডব চলল দিন-রাত এক করে। লাঠিপেটা, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, আইডি কার্ড চেক করা, সিসিটিভি ভেঙে ফেলা- কি না ঘটল। তিন দিন ধরে হিংসার কবলে উত্তর-পূর্ব দিল্লি ও আশপাশের এলাকা। রড-লাঠি হাতে যুবকদের তাণ্ডব দেখেও পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিল। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮টি প্রাণ ধরে গিয়েছে।

মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত দিল্লির হিংসায় এক হেড কনস্টেবল এবং ১২ জন সাধারণ নাগরিক মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা ছিল ১৩। বুধবার সকালে তা দাঁড়িয়েছে ১৮-তে। এদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিল। এখনও ৭০ জনের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জনতার তাণ্ডব দেখে র্যা পিড অ্যাকশন ফোর্স এবং সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স নামানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সশস্ত্র জনতা লাঠি হাতে ও পাথর ছুড়ে তাদের বারবার পিছু হটতে বাধ্য করে। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। বহু মানুষ বাড়ির ভিতরে তালা ঝুলিয়ে গৃহবন্দ অবস্থায় কাটাতে বাধ্য হয়েছিল।
দিল্লির মৌজপুর, বাবরপুর, কবিরনগর, পশ্চিম জ্যোতি নগর, গোকুলপুরীর গলি ইত্যাদি এলাকায় জমা হওয়া ক্ষিপ্ত জনতাকে দেখা গিয়েছে 'অ্যাকশন' বলে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে। লোহার রড, লাঠি, ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে ভাঙা ইট ছিল তাদের অস্ত্র। পুলিশ ঢুকলেই ইট বর্ষণ করা হয়েছে। লাঠি-রড নিয়ে তাড়া করা হয়েছে।
এর মধ্যে পুলিশ দেখলেই গুলি চানোর নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তা আক্ষরিক অর্থেই কতটা প্রয়োগ করা সম্ভব, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। ক্ষিপ্ত জনতাকে ভয় দেখাতেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বুধবার পুলিশ এই হিংসা প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে দিল্লিবাসী, গোটা দেশও।