জেএনইউ তাণ্ডবে হামলাকারীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে, উঠল নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন!
রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হামলা চালায় অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র ও আক্রান্ত শিক্ষকদের অভিযোগর তির আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দিকে। এদিকে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।
পুলিশের সামনেই চলে তাণ্ডব
হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সম্প্রতি সরব হয়েছিল জেএনইউ। সেই রেশেই রবিবার সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেন জেএনইউএর টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেখানেই শুরু হয় অতর্কিত হামলা। ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশকে ডাকা হলে ক্যাম্পাসে আসে প্রায় ৭০০ পুলিশকর্মী। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সাড়ে সাতটা নাগাদ। যদিও তাণ্ডব তখনও চলছে। অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সামনে অ্যাম্বুলেন্স ভাঙা হলেও পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। শুধু মাঝে মাঝে একজন দুজনকে পুলিশ আটকাচ্ছিল। তবে তারা কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি।
অমিত শাহের মন্তব্য
উল্লেখ্য, অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে দিল্লির পুলিশ। গোটা ঘটনায় যখন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সেই প্রেক্ষাপটেই পুলিশকে অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন অমিত শাহ স্বয়ং। তিনি আরও বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নৈরাজ্য সহ্য করা হবে না।'
তাণ্ডব চলার সময় পুলিশ কী করছিল?
তবে প্রশ্ন উঠেছে রাজধানীর বুকে দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই তাণ্ডব চলার সময় পুলিশ কী করছিল? আক্রান্ত ছাত্র ও শিক্ষকদের অভিযোগ, পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে এলেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। হামলা চালানোর পর বহিরাগতরা ক্যাম্পাস ছেড়ে নিশ্চিন্তে বেরিয়ে যায় বলেও অভিযোগ। এবং তাতে পুলিশের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।
'না মাওবাদ, না নক্সালবাদ, সবার উপরে রাষ্ট্রবাদ!'
অভিযোগ, হামলাকারীরা স্লোগান তুলে বলছিল, 'না মাওবাদ, না নক্সালবাদ। সবার উপরে রাষ্ট্রবাদ!' এমন কী হামলার সময়ে রাস্তার সব আলো বন্ধ ছিল বলেও জানা গিয়েছে। এসব চলতে থাকার পর শেষ পর্যন্ত ১১টা নাগাদ ফের রাস্তার আলো জ্বেলে দেওয়া হয়। পুলিশ জেএনইউ-র গেটের বাইরে অবস্থান নেয়। তবে ততক্ষণে যা তাণ্ডব চালানোর তা হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় দিল্লি পুলিশের ভূমিকার সমালোচনায় ছাত্ররা পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলে।
জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদের বিবৃতি
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদ বিবৃতি দিয়ে বলে, 'এই হামলা চালিয়ে এবিভিপি-র গুন্ডারা। তাদের নিশানায় সাধারণ ছাত্র ছাড়া শিক্ষকরাও ছিলেন। পুলিশের উপস্থিতিতেই লাঠি, রড, হাতুড়ি নিয়ে ঘুরে তাণ্ডব চালিয়েছে এবিভিপি-র মুখোশধারীরা। এই তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িয়ে রয়েছে পুলিশও। তারা সংঘ সমর্থক প্রফেসরদের কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেছে এবং তাণ্ডব করতে গুন্ডাদের সাহায্য করেছে।'