যেভাবে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে রাজধানীকে বাঁচাচ্ছে দিল্লি সরকার
করোনা ভাইরাসের প্রকোপে ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে দেশজুড়ে। তবে এই ভাইরাস নিয়ে সব থেকে বেশি আতঙ্ক ছড়িয়েছে দিল্লিতে। দেশএর ৩১ জন করোনা আক্রান্তদের সিংবভাগই রয়েছেন দিল্লি বা তার পার্শ্ববর্তী এলাকায়। যার জেরে দিল্লিবাসীর মধ্যে এই ভাইরাস নিয়ে আশঙ্কা বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে দিল্লি সরকার আপ্রাণ চেষঅটা চালিয়ে যাচ্ছে এই ভাইরাসের হাত থেকে রাজধানীকে রক্ষা করতে ও মানুষের মন থেকে ভয় দূর করতে।
করোনা থেকে দিল্লিকে রক্ষা করা হচ্ছে যেখান থেকে
দিল্লির লক্ষ্মীনগর মেট্রো স্টেশনের কাছেই দিল্লির স্বাস্থ্য দফতরের একটি বিল্ডিং চোখে পড়ে। বিল্ডিংটি ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভেলেন্স প্রোগ্রামের অফিস। সাধারণত সেখানে ডেঙ্গু রোখার কাজই করা হয়ে আসত এত দিন। তবে গত একমাস ধরে এই অফিসটির ব্যস্ততা বেড়েছএ অনেক গুণ। কারণ বর্তমানে ডেঙ্গু নয় বরং করোনা ভাইরাস রোখার কাজ চলছে এখানে।
দিল্লিবাসীকে করোনা সম্পর্কে অবগত করতে দিনরাত কাজ চলছে
এসব কাজের দায়িত্বে যেই মানুষটি রয়েছেন, তাঁর নাম, ডঃ শের সিং কাশ্যতিয়া। তিনি আইডিএসপি অফিসের ইনচার্জ। দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্তের খবর প্রকাশ পাওয়ার কয়েকদিন আগেই তিনি এই দায়িত্বে গ্রহণ করেন। এই চিকিৎসকই এখন দিল্লিকে করোনা মুক্ত রাখার গুরু দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বোঝালেন কী করে তৃণমূল স্তরে গিয়ে কাজ করে মানুষকে এই ভাইরাস সম্পর্কে অবগত করছে তাঁর অফিস।
করোনা ভাইরাস রোখার বিষয়ে একযোগে কাজ চলছে দিল্লিজুড়ে
দিল্লির ১১টি জেলায় একযোগে কাজ করে করোনা ভাইরাস রোখার বিষয়ে দিনরাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন শের সিং কাশ্যতিয়া ও তাঁর দল। এই বিষয়ে ডঃ কাশ্যতিয়া বলেন, 'আমরা সর্বক্ষণ জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাঁদের বলছি কীভাবে মানুষের উপর নজরদারি চালিয়ে কোনও সন্দেহজনক কেসকে চিহ্নিত করা যায় যাতে সেই ব্যক্তির আসেপাসের কেউ এতে আক্রান্ত না হয়ে পড়েন। বিমানবন্দরগুলিতে তো নজরদারি এমনিতেই জোরদার রয়েছে। তবে এই করোনা ভাইরাসের প্রভাব অনেক সময়ই বোঝা যায় না। তাই আমাদের বার্তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।'
করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে
তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত দিল্লির ময়ূরবিহারের তিনজন বাসিন্দার শরীরে এই করোনা ভাইরাস ধরা পরেছে। সেই ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা ৭৪ জন ব্যক্তিকে আমরা চিহ্নিত করেছি এখনও পর্যন্ত। দুই করোনা আক্রান্তকে ইতিমধ্যেই রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এই সকল মানুষের সংস্পর্শে আসা মানুষদের শরীর থেকে আমরা নমুনা সংগ্রহ করে নিশ্চিত হতে চাইছি যে এদের শরীরেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে কি না।
বিশেষ পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন আধিকারিকরা
এছাড়া তিনি আরও জানান যে দিল্লির বিভিন্ন জেলায় এখনও পর্যন্ত ৪১ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের শরীরে করোনা ভাইরাস থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাদেরকেও আমরা বিশেষ পর্যবেক্ষণে রেখেছি। কাশ্যতিয়া জানান, প্রতিটি জেলায় একজন করে পর্যবেক্ষণ আধিকারিক নিয়োগ করা হয়েছে এই বিশেষ কেসগুলিকে চিহ্নিত করার জন্য।
বিমানবন্দর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে চলছে কাজ
কাশ্যতিয়া বলেন, 'বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদেরকে খুঁজে বের করে প্রায় রোজ তাদের বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা দেখে আসছেন যে তাদের শরীরে কোনও ভাবে করোনা ভাইরাসের কোনও প্রভাব লক্ষণ করা যাচ্ছে কি না। বিমানবন্দর থেকে সব যাত্রীদের তালিকা সংগ্রহ করে এই কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। এছাড়া সেই বাড়ির আশেপাশের বাড়িগুলিতেও আমরা গিয়ে দেখে আসছি। এখনও পর্যন্ত ৩৫৬ জনকে আমরা এভাবে পরীক্ষা করেছি।'