বাংলা যখন পাখির চোখ বিজেপির, মোদী-শাহদের যা শিক্ষা দিয়ে গেল দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন
বাংলা যখন পাখির চোখ! বিজেপিকে যা শিক্ষা দিয়ে গেল দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন
এবার দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন জিততে শাহিনবাগ ইস্যুকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ফল পায়নি বিজেপি। উল্টে শিক্ষা বিজেপিকে শিক্ষা দিয়ে দিয়েছে শাহিনবাগ। মঙ্গলবারের রায় বিজেপিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে- মেরুকরণের রাজনীতি করে মোক্ষলাভ হয় না। বিহার-পশ্চিমবঙ্গের ভোটের আগে বিজেপির উচিত এ থেকে শিক্ষা নেওয়া।
ভালো চাইলে বিদ্বেষ ছাড়তে হবে
বিজেপি দিল্লির ভোটে সত্যিকারের কোনও ইস্যু পায়নি। তাই শাহিনবাগকে সামনে রেখে ধর্মীয় মেরুকরণের তাস খেয়েছিল, ভারত-পাকিস্তান সেন্টিমেন্ট আনার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সর্ব যুক্তি মাঠে মারা গিয়েছে। বিজেপির সামনে এবার লক্ষ্য বিহার ও বাংলা জয়। তার আগে নিশ্চয় এমন ভুল করবেন না।
ধর্মীয় মেরুকরণ! আদৌ না
দিল্লি নির্বাচন থেকে বিজেপি যে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিল, তা হল বিদ্বেষ ছড়ানো আর ধর্মীয় মেরুকরণ থেকে বিরত থাকা। সাম্প্রদায়িক লাইনে ভোটারদের মেরুকরণ করা বিজেপির রাজনৈতিক ডিএনএতে রয়েছে। এটি তাদের জাতীয় রাজনীতিতে উত্থানের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। কিন্তু দিল্লি দেখিয়ে দিয়েছে, ওইভাবে দীর্ঘমেয়াদি ফল লাভ করা যায় না।
দিল্লিতে শোচনীয় ফলাফল! তারপরও যদি...
দিল্লিতে শোচনীয় ফলাফল সত্ত্বেও বিজেপি যদি এই কৌশল বিহারের নির্বাচনের ক্ষেত্রে বজায় রাখে, বিজেপি যদি প্রচারে মূল ইস্যু করে ধর্মীয় মেরুকরণ ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকে, তখন এমনই ‘ঝাঁটা'র বাড়ি খাবে। আর বাংলা জয়ের স্বপ্নও ভুলতে হবে। উল্লেখ্য, এই বছরের শেষের দিকে বিহারে নির্বাচন। আর অসম এবং পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন পরের বছর।
বিপক্ষকেই মাইলেজ দেবে
নির্বাচনী ফলাফলে ধাক্কা খেয়ে বিজেপি সদস্যরা ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেছেন যে, এই ধর্মীয় মেরুকরণ ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূল প্রচার চালানো খুবই খারাপ হয়েছে। এই প্রচার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টিকেই মাইলেজ দিয়েছে। আর কেজরিওয়াল বিদ্বেষের প্রচারকে পাত্তা না দিয়ে উন্নয়নকে হাতিয়ার করেই মোক্ষলাভ করেছেন।
বিজেপির মন্ত্রীদের ডায়লগ বুমেরাং
বিজেপি নির্বাচনী প্রচারে নতুন নাগরিকত্ব আইন, শাহিনবাগের বিক্ষোভ ও ‘টুকড়ে টুকড়ে' গ্যাংয়ের মতো অ-উন্নয়নমূলক ইস্যুগুলিকে সামনে রেখেছিল। মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং উত্তর প্রদেশের সিএম যোগী আদিত্যনাথ গোলি মারো শালেকো জাতীয় প্রচারে বাজার গরম করেছিলেন। কপিল মিশ্র আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তারপর বিপক্ষকে নিশানা করে জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদী কটাক্ষ তো ছিলই। সেইসবই সমূলে উপড়ে ফেলে বিজেপিকে ছুড়ে ফেলেছে দিল্লিবাসী।