বন্যায় বিধ্বস্ত কেরল, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, মৃত মোট ১৭৮ জন
প্রবল বর্ষণে বিধ্বস্ত পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের পাঁচটি রাজ্য। রবিবার পর্যন্ত পাঁচ রাজ্যে মোট ১৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতে ফের বিধ্বংসী বন্যায় বিপর্যস্ত কেরল।
প্রবল বর্ষণে বিধ্বস্ত পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের পাঁচটি রাজ্য। রবিবার পর্যন্ত পাঁচ রাজ্যে মোট ১৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতে ফের বিধ্বংসী বন্যায় বিপর্যস্ত কেরল। আগামী ৪৮ ঘণ্টা প্রবল বর্ষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছে রাজ্যে।
একাধিক নদী বিপদ সীমার ওপরে
একাধিক নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। কেরলের প্রায় ২.২৭ লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ১৫৫১ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে গোটা রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সব আধিকারিকদের বন্যা পরিস্থিতি নজরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু মাত্র কেরলে এখনও পর্যন্ত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বন্যায়। ৩২৫২টি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ১৪ জেলার অবস্থা সবচেয়ে সঙ্কটজনক।
রাহুলের আবেদন
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বন্যা বিধ্বস্ত কেরল এবং ওয়ানাড়ের বাসিন্দাদের জন্য দান করার আবেদন জানিয়েছেন ফেসবুকে। ফেসবুকে রাহুল লিখেছেন, কেরলের ওয়ানাড়ে বাসিন্দারা বন্যায় প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস তাঁরা পাচ্ছেন না।
মুক্ত হস্তে দানের আবেদন
মালাপ্পুরমের জেলাশাসকরে ত্রাণ সংগ্রহ কেন্দ্রে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মুক্ত হস্তে দান করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। রাহুল নিজে এখন কেরলে রয়েছেন। সেখানে বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছেন তিনি। লোকসভা ভোটের পর এই নিয়ে দ্বিতীয়বার তিনি তাঁর কেন্দ্রে এলেন।
কর্নাটকে উদ্বেগ বাড়ছে
অন্যদিকে কর্নাটকের অবস্থাও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কর্নাটকের বেলগাভি জেলা। গত পাঁচ দিন ধরে কর্নাটকের বেলাগভি সহ ১৭টি জেলায় লাগাতার বৃষ্টিতে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েেছ। প্রায় ৫ লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েেছ। মোট ১১৬৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে ১৭টি জেলায়।
হাম্পিতে ভয়াবহ অবস্থা
ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হাম্পির অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। বন্যার জল এখানে ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। তুঙ্গভদ্রা নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। হাম্পি থেকে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রেল লাইনের উপর দিয়ে বন্যার জল বইতে শুরু করেছে। বাতিল করা হয়েছে ১০টি দূরপাল্লার ট্রেন। তুঙ্গভদ্রা নদীর জলাধারের ৩৩টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা কেন্দ্রের কাছে ৩০০০ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন।
মহারাষ্ট্রে অবস্থা দুর্বিষহ
মহারাষ্ট্রের বন্যা পরিস্থিতিতও যথেষ্ট দুর্বিষহ। বর্ষার শুরু থেকেই বর্ষণ শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্রে বাণিজ্য নগরে মুম্বইও যার কোপে পড়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কোলাপুরের। প্রায় ১০ ফুট জলের তলা চলে গিয়েছে কোলাপুর। বাড়ির ছাদ ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না শহরে। বন্যার কারণে ৪ নম্বর জাতীয় সড়ক একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উদ্ধারকাজে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী
মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলি জেলার অবস্থাও অত্যন্ত সংকটজনক। প্রায় ৪ লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কর্নাটকের কৃষ্ণানদীর আলমাট্টি জলাধারের জল ছাড়ার কারণে পরিস্থিতি আরও সংকটজনক আকার নিয়েছে। উদ্ধারকাজ শুরু করেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
[কর্ণাটকে ভয়াবহ বন্যা, বিপর্যস্ত জনজীবন, দেখুন দুর্দশার জলছবি]