বুক চিরে পেসমেকার উপড়ে বাবাকে নৃশংসভাবে খুন করল মেয়ে
কিন্তু বাবাকে এভাবে পৈশাচিক ভাবে খুন করার পিছনে যুক্তিটা কী? পুলিশ অফিসারের প্রশ্নে রাগে চোখ জ্বলে উঠেছিল ২৩ বছরের কুলবিন্দর করের। গ্রেফতার হওয়ার পর কুলবিন্দর জানান, মা মারা যাওয়ার পর থেকে বাবা তাকে নিয়মিতভাবে যৌন হেনস্থা করত। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তাই বাবাকে মেরে ফেলারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কুলবিন্দর।
খুনের পরিকল্পনা কী ভাবে হয়েছিল, এবং কী নৃশংসভাবে কুলবিন্দর তার বাবা দলজিৎ সিংকে খুন করেছিল তা পুলিশের কাছে বিস্তারিতভাবে জানিয়েছে কুলবিন্দর। বাবা দলজিৎ সিং পেশায় ট্যাক্সি চালক। বয়স ৫৬। এই খুনের ঘটনায় কুলবিন্দর ছাড়া আর যে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজনের নাম প্রিন্স সান্ধু, বয়স ২২, পেশায় ট্যাটুশিল্পী। প্রিন্সকে শনিবার রাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্যজন অশোক শর্মা, বয়স ২৩, একটি জামা কাপড়ের দোকানে কাজ করত। অশোককে সোমবার গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত ৩ বছর ধরে নিয়মিত যৌন অত্যাচার চালাত বাবা, প্রতিবাদে খুন, স্বীকারোক্তি মেয়ের
৩০ এপ্রিল রাতে, বাড়ির মূল দরজাটা খুলে রেখেছিলেন কুলবিন্দর, যাতে সময়-সুযোগ বুঝে বিনা বাধায় তার সঙ্গী প্রিন্স ও অশোক বাড়ির মধ্যে ঢুকতে পারে। এরপরে দলজিৎ সিংকে ঘুমের মধ্যে কাঠেক ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে মেরে মেরে হত্যা করে। দলজিতের বাঁচার য়াতো কোনও সুযোগই না থাকে তা নিশ্চিত করতে, জানলার কাঁচ ভেঙে একটি ছুচালো কাঁচের টুকরো দিয়ে দলজিতের বুক চিরে পেসমেকার বা হৃদযন্ত্রটি উপড়ে নেয় কুলবিন্দর ও তার সঙ্গীরা। এরপর মৃতদেহটি একটি বিছানার চাদরে মুড়িয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে ফেলে দিয়ে আসে তারা।
দু'দিন পর খায়ালা এলাকা থেকে একটি দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু মাথা থেতলানো ছিল, বুক চেঁরা ওই মৃতদেহটিকে তখন শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এরপর মৃতদেহ শনাক্তের জন্য ছবি ছাপিয়ে তা এদিক ওদিক ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই ছবি দেখেই দলজিতের এক আত্মীয় চিনতে পারেন। এরপর তিনিই পুলিশকে দলজিতের বাড়ি নিয়ে যান। পুলিশ সেখানে কুলবিন্দরকে দলজিতের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, বাবা ট্রাভেল এজেন্সির গাড়িতে পর্যটকদের নিয়ে ৩০ এপ্রিল হরিদ্বারে ট্রিপে গিয়েছেন। যদিও ট্রাভেল এজেন্সির তরফে এই দাবি মিথ্যা জানিয়ে দিতেই পুলিশের সন্দেহের তালিকায় পড় কুলবিন্দর।
এরপরই কুলবিন্দরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। পুলিশের একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়ে শেষপর্যন্ত বাবাকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে নেয় কুলবিন্দর। রক্তের দাগ লাগা চাদর, কেবিল তার ও যে ইনোভা গাড়ি করে মৃতদেহটি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই গাড়িটি উদ্ধার করেছে পুলিস। পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ দলজিতের মৃতদেহটি শনাক্ত করার পর ওই গাড়িটি হত্যাকারীরা উত্তমনগরের জঙ্গলে ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে এসেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।