স্বপ্ন-উড়ানে দেশকে গর্বিত করলেন মধ্যপ্রদেশের এই চা বিক্রেতার কন্যা
মধ্য প্রদেশের এক চা বিক্রেতার কন্যা আঁচল গঙ্গোয়াল ভারতীয় বায়ু-সেনাবাহিনীর ফ্লাইং ব্রাঞ্চে নির্বাচিত হলেন।
সেটা ২০১৩ সাল। তিনি তখন দ্বাদশ শ্রেনীতে পড়তেন। সেবছর উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ বন্যা হয়। বহু মানুষ ধ্বসে, বন্য়ায় আটকে পড়েন। টিভিতে দেখেছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার কর্মীরা তাদের উদ্ধার করছেন। সেই থেকে লক্ষ্য স্থির করে নেন, বায়ুসেনারই অংশ হবেন। পাঁচ বছর পর করে দেখালেন মধ্যপ্রদেশের চাওয়ালার কন্যা আঁচল গঙ্গোয়াল।
মধ্যপ্রদেশের নিমুচ জেলায় তাঁর বাড়ি। বাবা সুরেশ গঙ্গোয়াল বাড়ির কাছেই একটি চায়ের দোকান চালান। সেই চাওয়ালারই মেয়ে আজ মধ্যপ্রদেশের গর্ব। দেশের ৬ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২২ জন পাশ করেছেন বায়ুসেনা অফিসার হওয়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা, এয়ার ফোর্স কমন অ্যাডমিশন টেস্ট-এ। তাঁদেরই একজন চাওয়ালার মেয়ে আঁচল।
অবশ্য সহজে এই স্থান তাঁর জোটেনি। পেছনে আছে দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন, আর বিশ্বাস। গত পাঁচবার এই পরীক্ষা দিয়ে লিখিততে পাশ করলেও আটকে গিয়েছেন ইন্টারভিউতে। অবশেষে এবার আর তাঁকে কেউ আটকাতে পারেনি। তিনি জানান, 'আমি য়খন ক্লাস ১২ এ পড়তাম তখন উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। যেভাবে বায়ুসেনার জওয়ানরা বন্য়ায় আটকে পড়া মানুষগুলোকে উদ্ধার করেছিল দেখে আমি খুবই অনুপ্রাণিত হই। তখনই ঠিক করেছিলেন বায়ুসেনায় যোগ দেব। কিন্তু সেসময় পরিবারের অবস্থা বিশেষ ভাল ছিল না।'
MP: Aanchal Gangwal,a tea seller's daughter,makes it to flying branch of Air Force, being the only candidate from MP to clear the admn test for the yr. Says, 'When I was in class 12 I was inspired with Armed Forces' rescue ops during Uttarakhand flood. So decided to join defence. pic.twitter.com/xVKheOfcZ0
— ANI (@ANI) June 23, 2018
পরিবারের অবস্থা তাঁর এখনও ভাল নয়। আঁচলের আরও দুই ভাইবোন আছে। তবে চাওয়ালা সুরেশ জানেন পড়াশোনার গুরুত্ব। তাই পন করেছেন যে করেই হোক তিন ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া শেখাবেন। আঁচলের স্বপ্নকেও তিনি মরে যেতে দেননি। প্রথম কয়েকবার কোনও রকম কোচিং বা অন্যান্য প্রস্তুতি ছাড়াই পরীক্ষায় বসেছি আঁচল। মেয়েকে বারবার আটকে যেতে দেখে তিনি ব্যাঙ্ক থেককে টাকা ধার করে আঁচলকে ইন্দোরে পাঠিয়েছিলেন কোচিং নিতে। সুরেশ জানান, 'ছেলেকেও আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াচ্ছি, ছোট মেয়ে ক্লাস ১২-এ পড়ে।'
আঁচল তাঁর বাবাকে গর্বিত করেছেন। তবে এবার তাঁর স্বপ্নের উড়ানের পালা। আগামী ৩০ তারিখ তিনি যোগ দিচ্ছেন হায়দরাবাদের দুনদিগুলে এয়ার ফোর্স অ্যাকাডেমিতে।