
ডেল্টার থেকেও ভয়ঙ্কর নতুন করোনা স্ট্রেনের খোঁজ, সময় থাকতে সাবধান হতে হবে ভারতকেও
শুধু ভারত নয়, গোটাবিশ্ব জুড়েই কমছে কোভিড সংক্রমণ। তবে এখনও ভয় ধরাচ্ছে মারণ ভাইরাস৷ বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে একটি নতুন কোভিড স্ট্রেনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। সেই স্ট্রেনের ফলে হু-হু করে বাড়ছে সংক্রমণ।

সংক্রমণ বাড়ছে আফ্রিকায়!
চলতি মাসের শুরু থেকেই অবশ্য সংক্রমণ বাড়ছে আফ্রিকায়। সেখানে আগের চেয়ে প্রায় দশগুণ বেড়েছে সংক্রমণ। হঠাৎ করে ফের এই সংক্রমণ বৃদ্ধি দেখে প্রমাদ গুনছে ব্রিটেনের মতো দেশও৷ দক্ষিণ আফ্রিকা সহ মহাদেশের আরও পাঁচটি দেশের সঙ্গে বিমান মারফৎ যোগাযোগ বন্ধ রেখেছে তারা। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, নতুন স্ট্রেন ডেল্টার চেয়েও ভয়ঙ্কর। এই মুহূর্তে বাজারচলতি টিকা এর বিরুদ্ধে কার্যকরী নাও হতে পারে।
এতদিনে বিশ্বজুড়ে যে যে স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে, তাদের মধ্যে কতগুলির তালিকা রইল

ডেল্টা
ডেল্টা: কোভিডের এই স্ট্রেন সর্বপ্রথম দেখা গিয়েছিল ভারতে। অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল এই স্ট্রেন, স্বাভাবিকভাবেই আক্রান্ত হচ্ছিলেন অধিক সংখ্যক মানুষ। তবে টিকাকরণের পর প্রকোপ কমেছে ডেল্টার। দেখা গিয়েছে, সমস্ত টিকাই এর বিরুদ্ধে কার্যকরী। আর এই কারণেই সংক্রমণ কমেছে বিশ্বজুড়ে৷ সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়ে থাকলে খুব অল্প সংখ্যক মানুষই ডেল্টা আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, মৃত্যুর সংখ্যা তো কমেছেই। তবে এর অর্থ অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি ত্যাগ করা নয়। ঝুঁকি যতই কমুক, টিকাকরণের পর সংক্রমণের সম্ভাবনা একেবারে শূন্যতে নামেনি।

ডেল্টা প্লাস
ডেল্টা প্লাস : এওয়াই ৪.২ ভ্যারিয়েন্টকে ডেল্টা প্লাস বলা হয়। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মিউটেশন এটি। একেও প্রথম পাওয়া গিয়েছিল ভারতেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী এটি এখনও এক ডজনের বেশি দেশে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। মূলত ইংল্যান্ডে সংক্রমণ ছড়িয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট। এই মুহূর্তে দেশের মোট সংক্রমণের ৬ শতাংশের জন্য দায়ী এটি।

আলফা
আলফা : ২০২০র একেবারে শেষের দিকে এই ভ্যারিয়েন্ট দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মূলত দক্ষিণ পূর্ব ইংল্যান্ডে এই স্ট্রেন সর্বপ্রথম দেখা যায়। শুধু ইংল্যান্ড নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছিল। বিজ্ঞানীরা দাবি করেছিলেন, স্ট্রেনটি অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি ছড়িয়ে পড়তে এবং মৃত্যুর কারণ হতে পারে৷

বিটা
বিটা: বিটা ভ্যারিয়েন্ট সর্বপ্রথম দেখা গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নাইজেরিয়াতে। সাধারণ কোভিডের থেকে বেশি ভয়ানক হলেও তেমন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারেনি এটি।

গামা
গামা: জাপানে আগত ব্রাজিলিয়ানদের দেহে এই ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া যায়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিজ্ঞানীরা এর উপস্থিতি টের পান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেখা যায়, এই স্ট্রেনটি বাকিদের তুলনায় বেশি সংক্রামক। এমনকি এর আগে যাঁরা কোভিড-১৯এ আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরাও ভুগতে পারেন এই স্ট্রেনের ফলে।

ল্যামডা
ল্যামডা: পেরু, ইকুয়েডর, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল সহ একাধিক লাতিন আমেরিকান দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল এই স্ট্রেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, 'একাধিক দেশে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের জন্য দায়ী ল্যামডা। এই স্ট্রেনটি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।'

বি.১.১.৫৩৯
বি.১.১.৫৩৯ : দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রাপ্ত এই স্ট্রেনের নামকরণ এখনও করেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ভাইরোলজিস্ট তুলিও দে অলিভেরার মতে, এটি চিন্তাজনক ভ্যারিয়েন্ট। তিনি বলেন, 'এই ভ্যারিয়েন্টের প্রচুর মিউটেশন আছে।' এখনও অবধি হংকং এবং বটসওয়ানাতে আগত দক্ষিণ আফ্রিকান পর্যটকদের মধ্যেও এটি পাওয়া গিয়েছে।
