দলিত হওয়ার সাজা, বৈঠকে মাটিতে বসলেন খোদ পঞ্চায়েত সভাপতি
হাতে মোবাইল ফোন, পরনে আধুনিক পোশাক, গ্যাজেট ছাড়া এক মুহূর্ত চলে না, অথচ সেই ভারতের চিন্তা–ভাবনা এখনও মধ্যযুগেই পড়ে রয়েছে। জাত–পাত, বর্ণের ভেদাভেদ, ধর্মে ধর্মে বিবাদ এই দেশের প্পতিটি কোণে কোণে আজও বিদ্যমান। সেরকমই এক ঘটনা ঘটে গেল তামিলনাড়ুর কুড্ডালোরে। দলিত পঞ্চায়েত সভাপতি মাটিতে বসে বৈঠক সারলেন চেয়ারে বসা অন্য সদস্যদের সঙ্গে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ফের নিন্দায় সরব দেশবাসী।
কুড্ডালোরের থেরখুটিট্টাই গ্রামের পঞ্চায়েতের সভাপতি রাজেশ্বরী। তিনি জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত বোর্ডের উপ–সভাপতির বৈঠক চলাকালীন তিনি মাটিতে বসেছিলেন। এ বছরের জানুয়ারিতে তিনি সভাপতি পদের জন্য নির্বাচিত হন। থেরখুটিট্টাই গ্রামের ৫০০ পরিবারের অধিকাংশই বানিয়ার জাতির এবং ১০০ পরিবার তপশিলি উপজাতির। তপসিলি উপজাতর জন্য সংরক্ষিত পঞ্চায়েতের পদটি।
রাজেশ্বরীর অভিযোগ, তিনি সব বৈঠকে মটিতেই বসেন। পুলিশ এ বিষয়ে হিন্দু বর্ণের উপ–সভাপতি মোহন রাজের বিরুদ্ধে তপসিলি জাতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছে। পঞ্চায়েতের সম্পাদককে বহিষ্কার করা হয়েছে। সম্প্রতি তিরুভাল্লুরে স্বাধীনতা দিবসের দিন গ্রামের দলিত সভাপতিকে পতাকা উত্তোলন করতে দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে এক দলিত তরুণীকে চারজন উচ্চবর্ণের ব্যক্তি মিলে গণধর্ষণ করায় গোটা দেশ এমনিতেই ফুঁসছে। দলিত বলেই কি এতটা লাঞ্ছনা করা হচ্ছে, বারবার সরকারকে এই প্রশ্নে বিদ্ধ করছে দেশবাসী। ভারতের এখনও বহু জায়গায় দলিত ও উচ্চবর্ণের এই ভেদাভেদ বিদ্যমান। অথচ ভারতের সংবিধানের মুখ্য রচয়িতা ছিলেন বি আর আম্বেদকর, যিনি নিজে একজন দলিত এবং তাঁকে ভারতের দলিত আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা বলা হয়।