ঘূর্ণিঝড় অশনি ধেয়ে আসছে বঙ্গোপসাগর দিয়ে, গতিপথ বদলে বাংলায় কি আদৌ পড়বে প্রভাব
ঘূর্ণিঝড় অশনি ধেয়ে আসছে বঙ্গোপসাগর দিয়ে, গতিপথ বদলে বাংলায় কি আদৌ পড়বে প্রভাব
ঘূর্ণিঝড় অশনির গতিপথ নিয়ে গুরু্ত্বপূর্ণ আপডেট দিল আবহাওয়া দফতর। মৌসম ভবন সূত্রে জানানো হয়েছে, এবার মার্চেই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় হানা দিলেও তা বাংলা অভিমুখে ধেয়ে আসার সম্ভাবনা কম। অশনির গতিপথ সোজা বাংলাদেশ-উত্তর মায়ানমার উপকূলের দিকে। তা আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পাশ দিয়ে সটান মায়ানমার উপকূলের দিকে ধেয়ে যাবে।
কোন দিকে অভিমুখ ঘূর্ণিঝড় অশনির
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে আগেই জানানো হয়েছিল, এবার মার্চ মাসেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। এবং তা বঙ্গোপসাগরের কোনও উপকূলে আছড়ে পড়বে। আন্দামান নিকোবরে তো হানা দেবেই। সেইসঙ্গে আন্দামান নিকোবরের পাশ দিয়ে তা চলে যাবে বাংলাদেশ ও মায়ানমার উত্তর উপকূলের দিকে।
ঘূর্ণিঝড় অশনির হাত থেকে রক্ষা বাংলার!
আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাংলা ও ওড়িশা সংলগ্ন উপকূলে ঘূর্ণিঝড় অশনির হানা দেওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে বাংলায় এই ঘূ্র্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টি হতে পারে। এখন পর্যন্ত যা পূর্বাভাস ঘূর্ণিঝড় অশনি সরাসরি বাংলাদেশ-মায়ানমার উপকূলে হানা দেবে, তা ঘুরে বাংলা বা ওড়িশার দিকে যাবে না।
গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় অশনি একদিনেই
৯৬ বছর পর ফের ২০২২-এ ব্যতিক্রমী ঘূর্ণিঝড় অশনি উপকূল অভিমুখে ধেয়ে আসছে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে মৌসম ভবন। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ফের একবার মার্চ মাসে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে। এবং তা আগামী রবিবার অর্থাৎ ২০ মার্চ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরদিনই অর্থাৎ ২১ মার্চ সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ওই সিস্টেম।
যে গতিপথ ধরে সাগরে এগোবে ঘূর্ণিঝড় অশনি
মৌসম ভবন পূর্বাভাসে জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ থেকে শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে মাত্র একদিন সময় লাগবে। তারপর আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উপর দিয়ে তা বাংলাদেশ ও উত্তর মায়ানমার উপকূলের দিকে ধেয়ে যাবে। আন্দামান থেকে সরাসরি উত্তর দিকে প্রবাহিত হবে এই ঝড়। তা বাংলাদেশ ও উত্তর মায়ানমার উপকূলে আছড়ে পড়ার পর শক্তি হারাবে।
ঘূর্ণিঝড় অশনির ল্যান্ডফল নিয়ে পূর্বাভাস
আবহবিদরা জানিয়েছেন, ওই ঘূর্ণিঝড় অশনি নাম নিয়ে রবিবার পর্যন্ত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উপকূল বরাবর উত্তর দিকে যেতে পারে। তারপর উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার সকালের দিকে বাংলাদেশ এবং উত্তর মায়ানমারের কাছে পৌঁছবে। ওইদিনই উপকূলেই আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ ২২ মার্চ ঘূর্ণিঝড় অশনির ল্যান্ডফল হতে পারে।
১০০ বছর পরে আবার ঘটতে চলেছে বিরল ঘটনা
মৌসম ভবনের এই পূর্বাভাস মিলে গেলে ঘূর্ণিঝড় অশনি ৯৬ বছরের রেকর্ড ভেঙে দেবে। তাহলে মার্চ মাসে সংঘটিত হওয়া কোনও ঘূর্ণিঝড় উপকূল পর্যন্ত ধেয়ে যাবে বা উপকূলে আছড়ে পড়বে। সাগরের প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও তা তাণ্ডব চালাবে। বিগত ৯৬ বছর এমন কোনও ঝড় মার্চ মাসে উপকূল ছুঁতে পারেনি। ১৯২৬ সালে শেষবার মার্চ মাসে একটি ঘূর্ণিঝড় তামিলনাড়ু উপকূল পার করে ঢুকেছিল স্থলভাগে। তার আগে ১৯০৭ সালে একটি ঘূর্ণিঝড় শ্রীলঙ্কায় আছড়ে পড়েছিল। তারপর আবার ২০২২ সালের মার্চে ঘূর্ণিঝড় অশনি আন্দামান উপকূল পার করে আছড়ে পড়তে পারে বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলে। তা যদি হয়, সেটা হবে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ঘটনা। এবং তা ঘটবে প্রায় ১০০ বছর পরে।
ঘূর্ণিঝড় অশনি ভাঙতে পারে ৯৬ বছরের রেকর্ড! বিরল ঘটনা ১২৯ বছরের ঝড়ের ইতিহাসে