১২০ কিমি বেগে ধেয়ে আসবে ঘূর্ণিঝড় অশনি! সতর্কতা জারি করল আবহাওয়া দফতর
১২০ কিমি বেগে ধেয়ে আসবে ঘূর্ণিঝড় অশনি! সতর্কতা জারি করল আবহাওয়া দফতর
ঘূর্ণিঝড় অশনি শক্তি বাড়িয়েই চলেছে। সমুদ্রে এই ঘূর্ণিঝড় ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে আসছে উপকূলের দিকে। আর এই ঘূর্ণিঝড়ের সংঘাতিক প্রভাব পড়তে চলেছে উপকূলবর্তী এলাকায়। সর্বোচ্চ গণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ঝড় বইবে ওড়িশার উপকূলে। বাংলাও রেহাই পাবে না এই পরিস্থিতি থেকে। বাংলার উপকূলও ঝড়ের মুখে পড়বে।
যত কাছে আসছে, ততই শক্তিশালী হয়ে উঠছে
ঘূর্ণিঝড় অশনি যত উপকূলের কাছে আসছে, ততই শক্তিশালী হয়ে উঠছে। গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর আবহবিদরা মনে করেছিল ঘূর্ণিঝড় অশনি সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসতে পারে। সেইসঙ্গে এমন বার্তাও দিয়ে রেখেছিল আরও ১২ ঘণ্টা পরে স্পষ্ট হবে ঘূর্ণিঝড় শক্তি কতটা বাড়বে।
ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ঝড় বইবে
এদিন ঘূর্ণিঝড় মাঝ সমুদ্রে শক্তি বাড়াতে সমর্থ হওয়ায় হাওয়ার তেজও বেড়েছে। ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের সামনাসামনি যখন আসবে, তখনই উপকূলে ঝড়ের গতিবেগ দাঁড়াবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। অর্থাৎ মঙ্গলবার বিকেল থেকেই পুরীর সমুদ্র উপকূলে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ঝড় বইবে। সেইসঙ্গে বৃষ্টিও চলবে উপকূলে।
ভয়াল ভয়াবহ হয়ে উঠছে সমুদ্র, বড় হচ্ছে ঢেউ
ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সমুদ্রের চেহারা বদলে যাচ্ছে দ্রুত। ভয়াল ভয়াবহ হয়ে উঠছে সমুদ্র। জলস্ফীতির ফলে ঢেউ প্রবল আকার নিচ্ছে। আবহবিদদের ধারণা, ঘূর্ণিঝড় ওড়িশা বা অন্ধ্রপ্রদেশ কিংবা পশ্চিমবঙ্গের কোনও উপকূলে আছড়ে না পড়লেও ফুঁসে উঠবে সমুদ্র। সমুদ্রেই তাণ্ডব চালিয়ে ধীরে ধীরে শক্তিক্ষয় করবে অশনি। ঘূর্ণিঝড় থেকে গভীর নিম্নচাপ, তারপর নিম্নচাপ হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটাবে।
সাইক্লোন অশনি চোখ রাঙাতেই তৎপরতা তুঙ্গে
অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে। সাইক্লোন অশনি চোখ রাঙাতেই তৎপরতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিয়েছে তিন রাজ্যের প্রশাসনই। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে অশনি উত্তর-পশ্চিম দিকে ধেয়ে আসছে। আর যত পথ অতিক্রম করছে, ততই গতিও বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি।
ঘূর্ণায়মান গতিবৃদ্ধির কারণে সাগর আরও উত্তাল
সাগরের বুকে ঘূর্ণিঝড় অশনি এগিয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণায়মান বেগে। এই ঘূর্ণায়মান গতিবেগের কারণে সাগর আরও উত্তাল হয়ে উঠেছে। অশনির এগিয়ে চলার গতি ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ১৪ কিলোমিটার থেকে বেড়ে ২৫ কিলোমিটার হয়ে গিয়েছে। যেভাবে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় তাতে মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। তখনই উপকূলে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে বইতে থাকবে ঝড়।
অশনি তুমুল বৃষ্টিপাত ঘটাবে উপকূলবর্তী এলাকায়
ঘূর্ণিঝড় এরপর বাংলার দিকে ঘুরে যাবে বলে আবহবিদরা সতর্ক করেছে। তবে তা সম্পূর্ণ ইউ টার্ন নিয়ে অর্থাৎ উত্তর-পূর্ব দিকে ঘুরে গিয়ে বাংলার উপকূলের সঙ্গে সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাবে সমুদ্র বরাবর। এই পথেই তা শক্তি হারাতে থাকবে। আর গভীর নিম্নচাপ ও নিম্নচাপে পরিণত হয়ে অশনি তুমুল বৃষ্টিপাত ঘটাবে উপকূলবর্তী এলাকায়।
বঙ্গে মূলত বৃষ্টি চলবে ৯ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে ডেপুটি ডিরেক্টর জানিয়েছেন, অন্ধ্র-ওড়িশা উপকূলে আছড়ে না পড়ে বাংলার দিকে বাঁক নিয়ে তা ওড়িশা উপকূল বরাবর এগোতে থাকবে খানিকটা, তারপর আরও উত্তর-পূর্বে টার্ন নেবে। তবে বাংলাতেও ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা নেই। উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন নিয়ে স্থলভাগের সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাবে সমুদ্র বরাবর। এর প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠবে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে মূলত বৃষ্টি চলবে ৯ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত।
সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস, ঢেউ ছাপিয়ে যাবে উপকূল
অশনি শক্তি বাড়ানোর পরই সমুদ্র ফুঁসতে শুরু করেছে। ঢেউের উচ্চতা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে সমুদ্রে নামা নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। ওড়িশার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও সমুদ্র উত্তাল হয়ে গিয়েছে। ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্ধ্রপ্রদেশেও হাইঅ্যালার্ট রয়েছে। সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস হবে, তা ঢেউ আকারে আছড়ে পড়বে উপকূলে।
সাগরে চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় অশনি, আম্ফান না হলেও ইয়াসের পরিস্থিতি হতে পারে