আম্ফান নিয়ে জরুরি বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী! বাংলা-ওড়িশার মানুষের প্রতি কী বার্তা নরেন্দ্র মোদীর?
ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ দিক থেকে ক্রমশ এগোচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের দিকে। পরে এটি বাঁক নেবে ওড়িশার দিকে। আজ এনিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করে ওড়িশা সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সতর্ক করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে বিশেষ বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
প্রধানমন্ত্রীর বার্তা
এই বৈঠকের পরই বাংলা ও ওড়িশার মানুষদের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আজ এক টুইট বার্তায় লেখেন, 'পরিস্থিতি ও আমফানের বিরুদ্ধে আমাদের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখলাম। সব ধরণের দুর্যগের জন্য আমরা প্রস্তুত। সব বিষয়েই এদিন আলোচনা করি আমরা। আমি সবার সুরক্ষা কামনা করছি।'
এগিয়ে আসছে আম্ফান
আজ ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে প্রতি ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড়। আগামী ৬ ঘণ্টা ধরে এগোবে উত্তর ও উত্তর- পশ্চিম দিকে। আপাতত বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ- মধ্য দিকে পারাদ্বীপ থেকে ৭৯০ কিলোমিটার দূরে, দিঘা থেকে ৯৪০ কিলোমিটার দূরে ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ১০০৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থান রয়েছে।
দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর থেকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি
দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর থেকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি করছে এটি। আগামী ১২ ঘণ্টায় শক্তিশালী হয়ে সুপার সাইক্লোন অর্থাৎ অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ বেলা ১২ টার পর থেকে এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে এবং কিছুটা যাওয়ার পর উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নেবে।
বুধবার দিঘা উপকূলের পাশ দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকবে এটি
বুধবার দিঘা উপকূলের পাশ দিয়ে বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করবে স্থলভাগে। আমফানের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। হাওয়ার দাপট থাকবে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়।
আম্ফানের প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে ঝড়-বৃষ্টি
আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আম্ফানের প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হবে কলকাতাসহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সাত জেলায়। মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সকালে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৯৫ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
৭ জেলায় সতর্কবার্তা
বুধবার কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা জারি করা হয়েছে। সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা থেকে ও নিচু জায়গা থেকে বাসিন্দাদের উঁচু জায়গায় সরে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই সাত জেলার পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাতেও এর জেরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে । সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া।
ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই সাত জেলার রেললাইন
আম্ফানের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই সাত জেলার রেললাইন। তাই বুধবার সড়ক ও রেল পরিবহন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলা হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবিশস্যের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে । তাই আজকের মধ্যে খেত থেকে শস্য সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চাষিদের। এই সাত জেলার বাসিন্দাদের ঝড়ের সময় বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত সব রকম লঞ্চ পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।