কবজি কেটে নেওয়া মন্তব্যে অনুব্রতর পাশে দল, সমালোচনার মুখে পুলিশ প্রশাসন
বুধবার কাটোয়ার ১৪ নম্বর ব্লকে কর্মীসভা করেন অনুব্রত।কাটোয়ার দলীয় সভায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছিঁড়ে দেওয়ার প্রেক্ষিতে কংগ্রেস কর্মীদের উদ্দেশ্যে অনুব্রতর সরসারি হুমকি পোস্টার ছিঁড়লে কংগ্রেসের কবজি কেটে নেওয়া হবে।
এই প্রথমবার নয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে অনুব্রতর নির্দল নেতাদের দেওয়া হুমকি ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বস্তরে। নির্দল প্রার্থীদের অশালীন ভাষায় আক্রমণ চালিয়ে গিয়েছিলেন সমানে। এই তৃণমূল নেতার রোষ থেকে রেয়াদ পাননি পুলিশ প্রশাসনও। প্রকাশ্য সমাবেশে মাইক হাতে বলেছিলেন পুলিশের গাড়িতে বোমা মারো।
বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে আগে। কিন্তু পরে তা ধামাচাপা পড়ে যায়। ওই ঘটনার পরও মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দল অনুব্রতর পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন। বিরোধীদের অভিযোগ, দল ও প্রশাসনের উৎসাহেই অনুব্রতর এই বাড়বাড়ন্ত। সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূমে রেকর্ড আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। দখলে জেলা পরিষদও। সেই কারণেই বারবার অন্যায়ের পরও প্রিয় অনুব্রতকে মুখ্যমন্ত্রী রেহাই দিচ্ছেন বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
বারবার রেহাই পেয়ে যাওয়ায় ক্রমশ অনুব্রতর সাহস বেড়ে যাচ্ছে বলে ধারণা বিরোধীদের। এবারও চিত্রটা একই। কবজি কেটে নেওয়ার মতো সাংঘাতিক মন্তব্যের পরও দলের পক্ষ থেকে অনুব্রতকে এতটুকু ভর্তসনা তো শুনতে হলই না বরং ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বুঝিয়ে দিলেন অনুব্রতর পাশেই রয়েছে দল। বিতর্কিত এই হুমকি নিয়ে মুকুল রায়ের সাফাই, অনুব্রত যা বলেছেন তা প্রতীকী মাত্র। শুধু এই নয়, অনুব্রত বিরেধী গোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত শতাব্দী রায়ের এদিন হাজির থাকাতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক দলগুলি।
তৃণূল নেতৃত্বর এই প্রতিক্রিয়ায় আবারও একবার প্রশ্নের মুখে পুলিশ প্রশাসন। বহরমপুর সভায় অধীর চৌধুরির "মাথা গুড়িয়ে দেওয়া হবে" মন্তব্য ঘিরে প্রচুর জল ঘোলা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধ এফআইআর করে নির্বাচন কমিশন। প্রশাসনও তড়িঘড়ি সময় নষ্ট না করে এফআইআর দায়ের করে। তাহলে অনুব্রত মন্ডলের মন্তব্যের ক্ষেত্রে প্রশাসন কেন কোনও ব্যবস্থা নিল না প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই। এই ঘটনা প্রশাসনের ভূমিকায় আরও একবার প্রশ্নচিহ্ন লাগিয়ে দিল।