অবৈধ বাসিন্দাদের সরানোর দাবিতে দাঙ্গা শিলং-এ, আজও জারি কারফিউ
শনিবারও শিলংয়ের কয়েকটি স্থানে কারফিউ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় এক বাসের খালাশিকে মারধর করা নিয়ে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল।
শনিবারও শিলংয়ের কয়েকটি স্থানে কারফিউ অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার ভোর থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছিল। তার আগে এক বাসের খালাশিকে মারধর করা নিয়ে পরিস্থিতি উত্যপ্ত হয়ে ওঠে। গোটারাত শিলং-এর কয়েকটি স্থানে রীতিমতো দাঙ্গা চলে। এতে এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার সহ অন্তত ১০ জন আহত হন। এই ঘটনায় ফের অবৈধ বাসিন্দীদের বহিষ্কার করার দাবি উঠেছে।
ঘটনার শুরু বৃহস্পতিবার দুপুরে। অভিযোগ শিলং-এর থেম মেতোর এলাকায় একদল অবৈধ বাসিন্দা বাসের এক খালাশিকে বেধারক মারধর করে। তার সঙ্গে মারে জখম হয় আরও তিনজন। সেই নিয়েই উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। জখমদের প্রত্যেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে আঘাত সেরকম গুরুতর না হওয়ায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরই মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।'
কিন্তু সন্ধ্যার দিকে আহত খালাশির মৃত্যু হয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তাতে আগুনে ঘি পড়ে। বাসচালকদের একটি দল রাতেই থেম মেতোর-এ জড়ো হয়। অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে এলাকায় ব্যাপক ভাংচুর চালায় দলটি। পুলিশের বিশাল বাহিনী এলাকায় গেলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। এমনকী, পুলিশ সুপার (সিটি) স্টিফেন রীনজাহ-র মাথায় রড দিয়ে আঘাত করা হয় এবং রাস্তায় ফেলে ব্যাপক মারধর করে বিক্ষোভকারীরা।
তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস শেল ছুঁড়তে বাধ্য হয়। তাতে তখনকার মতো অবস্থা নিয়ন্ত্রণে এলেও শহর জুড়ে দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুলিশের দাবি, তাঁরা টিয়ারগ্যাস শেল ব্যবহার করলেও গুজব রটে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। তাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। মোতফ্রান এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরও ছোঁড়া হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। গোটা ঘটনায় পুলিশকর্মী-সহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সুপার (সিটি) স্টিফেন রীনজাহ-কে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
এর
জেরে
শুক্রবার
ভোর
৪
টে
থেকে
লামডিয়েঙ্জ্রি
থানা
ও
ক্যান্টনমেন্ট
বিট
হাউসের
আওতায়
থাকা
কমপক্ষে
১৪
টি
এলাকায়
কারফিউ
জারি
করা
হয়।
এদিনও
সেই
কারফিউ
বজায়
রাখা
হয়েছে
বলে
জানান
ডিস্ট্রিক্ট
ডেপুটি
কমিশনার
পি
এস
দখর।
পূর্ব
খাসি
পাহাড়
জেলা
কর্তৃপক্ষও
গতকাল
রাত
১০
টা
থেকে
এদিন
ভোর
৫
টা
পর্যন্ত
শিলং
শহর
জুড়ে
রাত-কারফিউ
জারি
করেছিল।
স্থানীয়
ওই
তিনজনের
উপর
হামলার
ঘটনায়
জড়িত
থাকার
অভিযোগে
এখন
পর্যন্ত
একজনকে
গ্রেফতার
করেছে
পুলিশ।
তার
সহযোগীদের
খোঁজ
চলছে।
শিলং
ও
পার্শ্ববর্তী
এলাকাগুলিতে
ইন্টারনেট
পরিষেবাগুলি
স্থগিত
রাখা
হয়েছে।
যেসব
এলাকায়
কারফিউ
নেই,
সেখানেও
দোকান,
স্কুল,
ব্যাংক
বন্ধই
রয়েছে।
শুক্রবারই ঘটনা নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমা। এদিন তিনি সকলের কাছে শান্তির আবেদন জানান এবং শিলংয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে জনগণের প্রতি আহ্বান রাখেন। এদিকে, এই ঘটনায় নতুন করে এবৈধ অভিবাসী বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। খাসি স্টুডেন্ট্স ইউনিয়ন (কেএসইউ), ফেডারেশন অব খাসি জয়ন্তিয়া অ্যান্ড গারো পিপল (এফকেজেজিপি) এবং হাইনিয়েওত্রেপ ইয়ুথ কাউন্সিল-এর মতো বহু স্থানীয় গোষ্ঠীর দাবি, স্থানীয়দের আক্রমণে জড়িত ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে এবং থেম মেতোরের অবৈধ বাসিন্দাদের অবিলম্বে বহিষ্কার করার ব্যবস্থা করতে হবে।