বাতাসে করোনা ছড়ানো নিয়ে ফের সতর্কতা জারি! বাড়ির ভিতরেও পরে থাকুন মাস্ক
সাম্প্রতিক কালে কোরোনা ভাইরাসের বাতাসে ভেসে বেড়ানোর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। ইতিমধ্যে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কোরোনা ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়। তাঁরা ইতিমধে্যই ঘোষণা করেছেন যে, কোনও কোরোনা রোগীর মুখ থেকে বের হওয়া মাইক্রো-ড্রপলেট বাতাসে দীর্ঘক্ষণ ভেসে বেড়ায় এবং সেখান থেকেই সার্স কোভ ২ ভাইরাস কোনও রোগহীন ব্যক্তিকে সংক্রমিত করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই মতকে সমর্থন করে বলেছে, মানুষের আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত। এতে মানুষের মনে আরও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যখন প্রতিদিন দেশে সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এই বিষয়ে সতর্কতা জারি করল ভারতেরের গবেষণা সংস্থা সিএসআইআর-ও।
ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচব কীভাবে?
ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে নিস্তার পেতে সাহায্য করতে পারে বাতাস। বলা হয় যে কাঁটা দিয়েই কাঁটা তোলা সম্ভব। ঠিক সেভাবেই কোরোনা ভাইরাস, যা বাতাসের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়, ঠিক এই মাধ্যম দিয়েই আবার এর থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব। এর থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া কঠিন নয় যদি বাতাসের মুক্ত প্রবাহ থাকে আর ঘরবাড়ি, বহুতল এবং অফিসে ভালa বাতাস চলাচলের বন্দোবস্ত থাকে। যখন বাইরে যাওয়ার দরকার পড়বে, বাড়ির বাইরে বেরোনোর সময় আমাদের মাস্ক পরতে হবে। ফিরে এসে বাড়িতে হাত বার বার ধুতে হবে। তবে শুধু এটাই যথেষ্ট নয়।
ঘরে হাওয়া খেলতে দিন
এটাও সুনিশ্চিত করতে যে, বাড়িতে বাতাস যেন মুক্তভাবে প্রবাহিত হয়। বহুতলগুলিতে বাতাসের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে দরজা, জানালা খুলে রাখা উচিত । এগজ়স্ট ফ্যানের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এতে ভাইরাস থাকলে, তা বাতাসের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে যাবে। করোনার মতো ভাইরাস এমন কোনও জায়গায় বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে না যেখানে বাতাস চলাচলের সুবব্যবস্থা আছে, পর্যাপ্ত সূর্যালোক আছে এবং তাজা বাতাস অবাধে বইতে পারছে।
মাস্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ
এটা নিশ্চিত করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ যে, অন্যের প্রশ্বাস যে বাতাসে মিশছে, তাতে কেউ যেন শ্বাস না নেয়। এই কারণে মাস্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের ঘটনায় আলস্য অবশ্যই এড়ানো উচিত। কোরোনায় আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও অনেকের শরীরে উপসর্গ দেখা দেয় না। এই ধরনের উপসর্গবিহীন মানুষও সংক্রমণ ছড়াতে সমান বা কখনও কখনও আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি করে। কাজেই আশপাশের প্রত্যেককে কোরোনা আক্রান্ত ধরে নিয়ে সতর্ক হওয়া খুব জরুরি। প্রত্যেককে সবসময় মাস্ক পরতে হবে। আমাদের প্রত্যেককে মাস্ক পরা অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। শুধুমাত্র অফিসে নয়, বাড়িতেও মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক পরার গুরুত্ব অতটা নেই তা ভাবলে চলবে না। মাস্ক যাতে সকলে সঠিকভাবে এবং নিষ্ঠা সহকারে পরে তা নিশ্চিত করাকে আমাদের দায়িত্ব ধরে নিয়ে পালন করতে হবে।
সার্জিক্যাল মাস্কের ব্যবহার
হাসপাতালে যাওয়ার দরকার পড়লে বা কোনও করোনা রোগীকে দেখতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে সার্জিকাল মাস্ক পরাটা বাধ্যতামূলক। এই সার্জিক্যাল মাস্কগুলি ত্রিস্তরীয় হয়। বাইরের স্তর আমাদের জলীয় বাষ্প এবং ধূলিকণা থেকে রক্ষা করে। মাঝের স্তর বাতাসকে বিশুদ্ধ করে এবং ভাইরাসের প্রবেশ রুখে দেয়। সবচেয়ে ভিতরের স্তর অর্থাৎ তৃতীয় স্তর ঘাম, বাষ্প শুষে নিয়ে আমাদের স্বচ্ছন্দ রাখে।
মাস্ক নিয়ে সতর্কতা অবল্মম্বন
ছোটো মাস্ক পরবেন না। এমন মাস্ক পরবেন যা আপনার নাক, মুখ এবং গলার নিচের দিকের অংশ সম্পূর্ণ ঢেকে রাখে। মাস্কের গুণমান যেন ভালো হয়। কাপড়ের মাস্ক ভালো কিন্তু আশপাশে কোরোনা আক্রান্তদের উপস্থিতিতে ঠিক যতটা নিরাপত্তা দেওয়া উচিত, ততটা এই মাস্ক দেয় না। কাপড়ের মাস্ক প্রতিদিন সাবান দিয়ে ধোয়া উচিত। তা ছাড়া জলে ব্লিচিং পাউডার গুলে তাতে এই মাস্কগুলি ভিজিয়ে রেখে পরদিন রোদে শুকিয়ে নেওয়াও যেতে পারে।
৯০ শতাংশ মানুষ বেশিরভাগ সময় মুখ থেকে মাস্ক খুলে ফেলে
অন্তত ৯০ শতাংশ মানুষ বেশিরভাগ সময় মুখ থেকে মাস্ক খুলে ফেলে। এটা মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। কোনও পরিস্থিতিতেই মাস্কের সামনের অংশটিকে স্পর্শ করা উচিত নয়। আমাদের হাতের তালুতে প্রচুর জীবাণু থাকে যেমন ভাইরাস এবং ব্যাকটিরিয়া। মাস্ক স্পর্শ করলে এগুলো মাস্কের গায়ে আটকে থাকবে। হাতের তালু দিয়ে কাউকে স্পর্শ করলে বা চোখ-নাক ঘষলে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। হাতে ধরা সম্ভব, এমন সব কিছুকেই ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে। তাই এই ধরনের কাজ করলে ভালোর থেকে বেশি খারাপই হবে।