এনআরসি-র ভয়ে বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে থাকা অনুপ্রবেশকারীরা!
সিএএ লাগু হতেই বিশাল সংখ্যায় বেআইনি বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী ভারত ছেড়ে নিজেদের দেশে ফিড়ছেন। এরই মধ্যে এনআরসি-র ভয় তো রয়েছেই। এই বিষয়ে মেঘালয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের দায়িত্বে থাকা বিএসএফ -এর আইজি কুলদীপ সাইনি বলেন, 'গত কয়েকদিনে আমরা দেখছি যে অনেক বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীরা সেদেশে ফিরে যাচ্ছে।'

২৬৮ জন বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশে যেতে গিয়ে ধরা পড়ে
জানা গিয়েছে গত কয়েক দিনের মধ্যেই ২৬৮ জন বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশে যেতে গিয়ে বিএসএফ-এর হাতে ধরা পড়েছে। ওদিকে বাংলাদেশের বিজিবি বনগাঁওয়ের পেট্রাপোল সীমান্তে ৬০ জনকে আটক করেছে। এই তথ্যা জানান দক্ষিণ বঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের বিএসএফ-এর আইজি ওয়াইবি খুরানিয়া। এই বিষয়ে তিনি বলেন, 'সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীরা অনেক সংখ্যায় ফিরে যাচ্ছে সেদেশে। মূলত গত এক মাসে এই ফইরে যাওয়ার সংখ্যাটি বেড়েছে। শুধুমাত্র জানুয়ারিতেই আমরা ২৬৮ অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছি। তাদের বেশিরভাগই প্রতিবেশী দেশে পালানোর চেষ্টা করছিল।' তিনি আরও জানান, আটক ব্যক্তিদের বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অনেক আটক হওয়া ব্যক্তি নাকি আবার ভারতে ৫ থেকে ১২ বছর ধরে থাকছেন। দুই জনের কাছে ভারতীয় পরিচয়পত্রও পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে আটক হয় ৪৪৫
বাংলাদেশের তরফে বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল শফিনুল ইসলাম বলেন, 'জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই বৈআইনি ভাবে সীমান্ত পার করতে গিয়ে আমাদের হাতে ৪৪৫ বাংলাদেশী আটক হয়েছে।' এদিকে বিএসফ বলছে, 'লোকেরা চাকরির সন্ধানে আইনত বা অবৈধভাবে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যায়। এটি একটি বৈশ্বিক ঘটনা। এটা স্বাভাবিক. শ্রমজীবীরা ভারতে (বাংলাদেশ থেকে) কাজ করতে আসে। তাদের বেশিরভাগই কাজ করে বড় বড় শহরগুলিতে। তবে তাদের এখানে কাজ করতে এসে বসতি স্থাপনের উদাহরণ হ্রাস পেয়েছে গত কয়েক মাসে।'

সিএএ-র শর্ত
নতুন লাগু হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধিত আইনের শর্ত, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ বা তার আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে যে সমস্ত অমুসলিম শরণার্থীরা ভারতে এসেছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। অর্থাৎ, হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পারসি বা জৈন ধর্মের যেই লোকেরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে থেকে ভারতে বসবাস করেছেন, তারা ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। বিলটি ৩১১-৮০ ব্যবধানে পাশ হয়। বুধবার রাজ্যসভায় এটি পাশ হয় ১২৫-৮২ ব্যবধানে। তবে আইনটি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পাশ করলেও এটিকে বিভেদ সৃষ্টিকারী আখ্যা দিয়ে পথে নেমেছে বিরোধীরা।

আইন নিয়ে রাজনৈতিক তরজা
তবে আইন নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলতে থাকলেও আইন প্রনয়ণে কোনও বাধা আসবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। এই আইনের বিরোধিতা করলেও কংগ্রেস নেতা শশী থারুর ও কপিল সিব্বল বলেন যে, রাজ্যদের এই আইন না মানার পথ নেই। কারণ নাগরিকত্ব বিষয়টি কেন্দ্রের অধীনস্থ। তাদের আরও মত রাজনৈতিক ভাবে ঐক্য দেখাতেই অনেক ক্ষেত্রে রাজ্যগুলি সিএএ বিরোধী রেজোলিউশন পাশ করাচ্ছে। তবে এতে আখেরে লাভ হবে না কোনও।